বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

জিয়া হত্যাকাণ্ড : যে রহস্যের জট আজও খোলেনি

বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০১৭
907 ভিউ
জিয়া হত্যাকাণ্ড : যে রহস্যের জট আজও খোলেনি

কক্সবাংলা ডটকম(৩১ মে) :: ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যা করার পর এর দায় পড়ে সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মঞ্জুরের ওপর। পুলিশের হাতে জেনারেল মঞ্জুর গ্রেপ্তার হওয়ার পর সেই সময়ের সেনাপ্রধান লে. জেনারেল এরশাদ অস্থায়ী  রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে পরামর্শ দেন মঞ্জুরকে সেনা হেফাজতে দিতে। রাষ্ট্রপতির নির্দেশ পেয়ে চট্টগ্রামের কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জেনারেল মঞ্জুরকে সেনা হেফাজতে দেয় পুলিশ।

তবে সেনা হেফাজতে নেওয়ার পরের দিনই জেনারেল মঞ্জুরকে হত্যার খবর পাওয়া যায়। পরে সরকারি প্রেসনোটে বলা হয়, কিছু উচ্ছৃঙ্খল সেনা সদস্য মঞ্জুরকে হত্যা করেছে। যদিও সরকারের এমন দাবিকে ‘সাজানো গল্প’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তা নাকচ করেছেন ওই ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ও সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা নিজেদের লেখা আত্মস্মৃতিমূলক বইয়ে।

জিয়া হত্যার জন্য জেনারেল মঞ্জুরকে দায়ী করা হলেও তাকে বিচারের আওতায় না এনে সরাসরি হত্যা এবং তড়িঘড়ি করে গঠিত কোর্ট মার্শালে ‘প্রসহনমূলক’ বিচারের মাধ্যমে তার অনুগত মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাদের ফাঁসি দেওয়া এবং পরবর্তীতে মঞ্জুর হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় না আনাসহ বিভিন্ন প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকাণ্ডের কারণে জিয়া হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আসলে কে, সে সম্পর্কে রহস্য থেকেই যায়। যে রহস্যের জট আজও খোলেনি।

জিয়া হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সেনাপ্রধান এরশাদের নির্দেশে গঠিত যে কোর্ট মার্শালে সেনা বিদ্রোহের অভিযোগের বিচার হয় সেই কোর্টে অভিযুক্তদের পক্ষে ডিফেন্ডিং অফিসার ছিলেন তৎকালীন কর্নেল আয়েনউদ্দিন (পরবর্তীতে মেজর জেনারেল হিসেবে ১৯৯৬ সালে চাকরিচ্যুত) । তিনি মনে করেন, মঞ্জুর হত্যাকাণ্ডের বিচার হলে কোর্ট মার্শাল এবং জিয়া হত্যাকাণ্ডের অনেক জিনিস বেরিয়ে আসবে।

ওই বিচার কাজের অগ্রগতি না হওয়া এবং দেরি হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন: ওই বিচার কাজ (জেনারেল মঞ্জুর হত্যাকাণ্ড) যদি ঠিকমত সমাধা হয় তাহলে অনেক অজানা কাহিনী, অনেক অজানা ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

জেনারেল মঞ্জুর কি আসলেই জিয়া হত্যার সঙ্গে জড়িত?

জিয়া হত্যাকাণ্ড এবং সেনা বিদ্রোহে জেনারেল মঞ্জুরকে দায়ী করে তাকে হত্যা করে তার অনুগতদের ফাঁসি দেওয়া হলেও আসলেই জেনারেল মঞ্জুর দায়ী ছিলেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওই ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত অনেক সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, সামরিক বিশ্লেষক এবং গবেষক।

অধ্যাপক নাদির জুনাইদ একটি প্রবন্ধে লিখেছেন: সার্কিট হাউসে হামলার ব্যাপারে মঞ্জুর আগে জানতেন না এ ব্যাপারে একটি ধারণা পাওয়া যায় মেজর রেজাউল করিমের বর্ণিত একটি ঘটনা থেকে। জিয়া হত্যাকাণ্ড ঘটে যাওয়ার পর, ৩০ মে সকালে জেনারেল মঞ্জুরের সঙ্গে মেজর রেজাউল করিমের যখন প্রথম দেখা হয়; তখন মঞ্জুর রেজাকে প্রশ্ন করেন সার্কিট হাউসে গিয়ে রেজা কী কী দেখেছেন তা নিয়ে। মেজর রেজা জিয়াউর রহমানসহ অন্যদের মৃতদেহের কথা জিওসিকে জানালে মঞ্জুর দুবার বলেন, “ওহ্, হোয়াট দে হ্যাভ ডান! হোয়াট দে হ্যাভ ডান!”

চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দিন চৌধুরী তার ‘অ্যাসাসিনেশন অব জিয়াউর রহমান অ্যান্ড আফটারম্যাথ’ আত্মস্মৃতিমূলক বইয়ে লিখেছেন: জিয়া রাজনৈতিক দল করার পর জেনারেল মঞ্জুরের সঙ্গে তার দুরত্ব সৃষ্টি হয়। মঞ্জুরকে সরিয়েও দেয়া হয়। কিন্তু জিয়ার ওপর তার (মঞ্জুরের) এমন কোন আক্রোশ ছিল না যে কারণে জিয়াকে হত্যার কথা তিনি ভেবেছিলেন।

নিজের দেখা অভিজ্ঞতা থেকে তিনি লিখেছেন: জিয়া এলে (চট্টগ্রামে) মঞ্জুর তাকে অভ্যর্থনা জানাতে যেতেন বিমানবন্দরে। কিন্তু প্লেন মাটিতে না ছোঁয়া পর্যন্ত গাড়িতে বসে থাকতেন। জিয়া নেমে এলে তিনি তার সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলে যেতেন। জিয়ার রাজনৈতিক সহকর্মীদের তিনি অপছন্দ করতেন কিন্তু জিয়াকে নয়। অন্য সময় দুজন পুরনো বন্ধুর মতই আচরণ করতেন।

এস মাহমুদ আলি তার ‘আন্ডারস্টান্ডিং বাংলাদেশ’ বইয়ে লিখেছেন: সেনাবাহিনীর সমর্থনে ক্ষমতায় গিয়েও ক্রমশ সেনাবাহিনী থেকে দূরে সরে দলীয় রাজনীতির দিকে জিয়ার ঝুঁকে পড়া, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে শক্তিপ্রয়োগের পরিবর্তে রাজনৈতিক সমাধান সৃষ্টির ব্যাপারে মঞ্জুরের আগ্রহ নিয়ে জিয়ার সঙ্গে মতবিরোধ এবং কিছু সামরিক অফিসার ও বিএনপির বিভিন্ন নেতার দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া প্রভৃতি কারণে মঞ্জুর জিয়ার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন বলে জানা যায়।

অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদ আরও লিখেছেন: সেনাবাহিনীতে মেধাবী এবং বুদ্ধিমান অফিসার হিসেবে মঞ্জুরের সুনাম ছিল। দশ বছর আগেই তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীন বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতেও তিনি পালন করেন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। পুরো সেনাবাহিনীর সমর্থন ছাড়া কেবল চট্টগ্রাম সেনানিবাসের কিছু অফিসারের মাধ্যমে বিদ্রোহ করে রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করে দেশের ক্ষমতা গ্রহণ যে সম্ভব নয় এ কথা নিশ্চয়ই মঞ্জুরের মতো একজন অভিজ্ঞ ও বিচক্ষণ সেনা কর্মকর্তার অনুধাবন করার ক্ষমতা ছিল।

মঞ্জুর যদি জিয়াকে জোরপূর্বক বন্দি বা হত্যা করার নির্দেশ দিয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে এটাই ভাবা স্বাভাবিক যে, মঞ্জুরকে অন্য অনেক ক্ষমতাশালী গোষ্ঠী এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু জিয়া হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পর দ্রুত মঞ্জুরসহ চট্টগ্রাম সেনানিবাসের অন্য মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের হত্যাকাণ্ডে যুক্ত বলে চিহ্নিত করা হয়। মঞ্জুরকে বিচারের মুখোমুখি করে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের চেষ্টা করা হয়নি যা সন্দেহের সৃষ্টি করে।

জিয়া হত্যাকাণ্ড এবং এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনা পর্যালোচনা করে জিয়াউদ্দিন মনে করেন: ষড়যন্ত্রটি (জিয়া হত্যার) হয়েছিলে চট্টগ্রামের বাইরে ঢাকায়। জিয়া হত্যার পর বিদ্রোহীদের দায় তার (মঞ্জুরের) ওপর আসে; যা তিনি নিতে ইচ্ছুক ছিলেন না কিন্তু নিয়েছিলেন। ষড়যন্ত্রটা কোথায় তা তিনি (মঞ্জুর) জানতে পেরেছিলেন সে জন্য ঢাকা থেকে এক ব্রিগেডিয়ারকে পাঠিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। মঞ্জুরকে তিনি আখ্যা দিয়েছিলেন ‘a coup leader by default.’

ষড়যন্ত্রের নেপথ্যের ষড়যন্ত্র কী?

৩০ মে ভোর রাতে সার্কিট হাউসে হামলার পরিকল্পনা এবং হত্যাকাণ্ড ঘটার পর সবচেয়ে সক্রিয় ছিলেন দুজন মুক্তিযোদ্ধা অফিসার। তারা হলেন; চট্টগ্রাম ডিভিশনাল হেড কোয়ার্টার্সের সিনিয়র স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মতিউর রহমান এবং ২১ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের তৎকালীন কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহবুবুর রহমান। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, জিয়ার নিরাপত্তায় নিয়োজিত অফিসার ও সেনাসদস্যদের সঙ্গে হামলাকারীদের গোলাগুলি শুরু হওয়ার এক পর্যায়ে রাষ্ট্রপতি জিয়া তার কক্ষ থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন। তখন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মতিউর রহমান খুব কাছ থেকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে এক ঝাঁক গুলি করে জিয়াকে হত্যা করেন।

সামরিক বিশ্লেষকদের প্রশ্ন, যদি জিয়া হত্যাকাণ্ডে জেনারেল মঞ্জুর জড়িত থাকেন তবে তাকে বিচারের সম্মুখীন না করে কেন তাকে দ্রুত হত্যা করা হলো? দুইজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মতিউর রহমান ও মেহবুবুর রহমানকেই-বা হত্যা করা হয়েছিল কেন? মঞ্জুর-মতিউর-মেহবুব বেঁচে থাকলে জিয়া হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার সঙ্গে কারা কারা যুক্ত ছিলেন সে তথ্য প্রকাশ হয়ে যেত বলেই কি দ্রুত এই তিনজনকে হত্যা করা হয়?

জিয়াউদ্দিন চৌধুরীর লেখা থেকে জানা যায়, এসপি তাকে ফোন করে জানান, পরিদর্শক কুদ্দুস ফটিকছড়ি থেকে মঞ্জুরকে গ্রেপ্তারের পর তাকে হাটহাজারী থানায় নিয়ে এসেছে। পুলিশ মঞ্জুরকে গ্রেপ্তারের পর নিরাপত্তা শঙ্কায় ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনার সম্মত হয়েছিলেন মঞ্জুরকে ঢাকা পাঠাতে। এজন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সচিবকে বারবার ফোনে না পেয়ে শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি সাত্তারকে ফোনে পান। রাষ্ট্রপতি সাত্তার কমিশনারকে জানান, সেনাপ্রধান এরশাদের সঙ্গে আলাপ করে তিনি মঞ্জুরের ব্যাপারে করণীয় সম্পর্কে জানাবেন।

কমিশনার ও ডিসি যখন রাষ্ট্রপতির নির্দেশনার অপেক্ষায় তখন থানা থেকে এসপি বারবার তাদের ফোন করে জানাচ্ছিলেন যে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় থানায় এক সেনা অফিসার কিছু সৈন্য নিয়ে এসেছেন। তিনি মঞ্জুরকে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যেতে চাইছেন। এবং হুমকি দিচ্ছেন জোর করে নিয়ে যাওয়ার। অবশেষ রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা এল। রাষ্ট্রপতি কমিশনারকে জানান, এরশাদের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। মঞ্জুরকে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিতে হবে। রাষ্ট্রপতির এমন নির্দেশে কমিশনার ও তিনি উভয়ে হতভম্ব হয়ে যান বলে লিখেছেন জিয়াউদ্দিন।

কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মঞ্জুরকে সেনাসদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। যদিও মঞ্জুর চাইছিলেন পুলিশ হেফাজতেই থাকতে। মঞ্জুরকে সেনা হেফাজতে নেওয়ার পরের দিনই চট্টগ্রাম গ্যারিসনের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার আজিজ ডিআইজিকে ফোন করে জানান মঞ্জুর মৃত। এসময় ডিআইজি কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার।

কিছু উচ্ছৃঙ্খল সেনা সদস্য নয় বরং ঢাকা থেকে যাওয়া একজন ব্রিগেডিয়ারই মঞ্জুরকে হত্যা করেছেন দাবি জিয়াউদ্দিন চৌধুরীর।

মঞ্জুরের দেহ পরিষ্কারের দায়িত্বে থাকা ডাক্তারকে উদ্ধৃত করে জিয়াউদ্দিন লিখেছেন: ক্যান্টনমেন্টের সেলে মঞ্জুরকে রাখা হলে একজন ব্রিগেডিয়ার সেই সেলে প্রবেশ করেন। তার উদ্দেশ্য ছিল একটি-মঞ্জুরকে হত্যা করা। তিনি ঢাকা থেকে এসেছিলেন এবং পাহারায় থাকা সেনা কর্মকর্তাকে জানিয়েছিলেন মঞ্জুরকে তিনি জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। ভেতরে ঢুকে তিনি মঞ্জুরকে গুলি করে বেরিয়ে যান পূর্বপরিকল্পনা মতো। ডাক্তারকে যখন ক্ষত ব্যান্ডেজ করতে বলা হয় তখন তিনি দেখেন একটি বুলেট তার মাথা ভেদ করে বেরিয়ে গেছে, এক ঝাঁক বুলেট নয়।

মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি রচিত “একাশির রক্তাক্ত অধ্যায়” থেকে জানা যায়, মঞ্জুর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন এই তথ্য জানার পর তৎকালীন বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল সদরুদ্দিন সেনাপ্রধান এরশাদকে বলেছিলেন মঞ্জুরকে কোনোভাবেই হত্যা না করতে। মঞ্জুরের হত্যার পর এরশাদ সদরুদ্দিনকে জানান, একদল উচ্ছৃঙ্খল সৈন্য মঞ্জুরকে হত্যা করেছে। সদরুদ্দিন তখন ক্ষুব্ধকন্ঠে এরশাদকে বলেছিলেন, “এই গল্প অন্য কাউকে বলুন। অ্যাট লিস্ট ডোন্ট আস্ক মি টু বিলিভ ইট।”

এর কদিন পরই মুক্তিযোদ্ধা অফিসার সদরুদ্দিনকে বিমান বাহিনী প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

৮১ সালের ওই ঘটনা নিয়ে গবেষণা করেছেন এমন একজন সাংবাদিক বলেন: ওই সময় মুক্তিযোদ্ধা অফিসার এবং পাকিস্তান ফেরত অফিসারদের মধ্যে এক ধরনের দ্বন্দ্ব চলছিল যা নিয়ে জিয়ার ওপর মঞ্জুরের কিছুটা ক্ষোভ ছিল। জিয়ার ওই সফরে মুক্তিযোদ্ধা অফিসাররা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে তার কাছে তাদের বিভিন্ন অভিযোগ তুলেও ধরতে চেয়েছিলেন। এই ইস্যুকে কাজে লাগিয়েই জিয়াকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয় ঢাকা থেকে যাতে কিছু ঘটলে তার সম্পূর্ণ দায় জেনারেল মঞ্জুরের ওপরই চাপানো যায়।

মতিউর রহমান সেদিন আসলে কার নির্দেশে জিয়াকে গুলি করেছিলেন? এ প্রসঙ্গে লেখক সাংবাদিক আনোয়ার কবিরের “সশস্ত্র বাহিনীতে গণহত্যা: ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১” বইতে একটি ঘটনার উল্লেখ আছে।

তিনি লিখেছেন: মেজর রেজাউল করিমের বক্তব্য থেকে একটি তথ্য জানা যায়; তা হল, মতিউর রহমান জিয়া হত্যাকাণ্ডের অল্প কদিন আগে ঢাকায় আর্মি হেড কোয়ার্টারে গিয়েছিলেন। সেখানে সেনাপ্রধান এরশাদসহ অনেকের সঙ্গেই নাকি তিনি কথা বলেছিলেন (কবির, পৃষ্ঠা ১৮৭)। লেফটেন্যান্ট কর্নেল মতিউর রহমান তখন কী আলোচনা করেছিলেন তা জানা যায়নি। অথচ তিনিই পরবর্তীতে জিয়াউর রহমানকে গুলি করে হত্যা করেন।

লে. কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান তার ‘রণ থেকে জন’ নাম আত্মজীবনীতে লিখেছেন: মঞ্জুরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। কারণ, তিনি বেঁচে থাকলে প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারী কে তা উদঘাটিত হয়ে যেত।

তিনি লিখেছেন: জেনারেল মঞ্জুরকে গ্রেপ্তার করেছিলেন যে পুলিশ কর্মকর্তা তার নাম ছিল সম্ভবত কুদ্দুস। এরশাদের আমলে তিনি অল্প দিনের মধ্যেই প্রচুর ধন-সম্পদের মালিক হন। তার প্রতি এরশাদের বহু পৃষ্ঠপোষকতা  নানা কথা ও সন্দেহের জন্ম দেয়।

907 ভিউ

Posted ১:১৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com