রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

তারল্য সংকটে অগ্রণী ব্যাংক : ১৫ দিনে ধার ৯ হাজার কোটি টাকা !

রবিবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
195 ভিউ
তারল্য সংকটে অগ্রণী ব্যাংক : ১৫ দিনে ধার ৯ হাজার কোটি টাকা !

কক্সবাংলা ডটকম(২ ফেব্রুয়ারি) :: তারল্য সংকটে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে (কলমানি) বৃহৎ দাতা ব্যাংকের স্বীকৃতি ছিল অগ্রণী ব্যাংকের। রাষ্ট্রায়ত্ত এ ব্যাংকই এখন বড় গ্রহীতা। গত দুই সপ্তাহেই কলমানি থেকে ব্যাংকটি সংগ্রহ করে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। একই সময়ে রেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও ধার নিতে হয়েছে বড় অংকের অর্থ। অথচ ব্যাংকটির ঋণ-আমানতের (এডি রেশিও) অনুপাত রয়েছে ৬৫ শতাংশের নিচে। এছাড়া গত কয়েক মাসে ব্যাংকটি এমন সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে মেয়াদি আমানত দিয়েছে, যেগুলোর আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল।

অগ্রণী ব্যাংকের এডি রেশিও ৬৫ শতাংশের নিচে থাকার পরও কলমানি বাজার থেকে বিপুল অংকের অর্থ ধার করাকে প্রশ্নবিদ্ধ মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে মেয়াদি আমানত দেয়ায় প্রশ্ন উঠছে ব্যাংকটির যথার্থ ব্যবস্থাপনা নিয়ে।

দৈনন্দিন লেনদেন সম্পন্ন করার মতো পর্যাপ্ত টাকা না থাকলে কলমানি বাজার থেকে (আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার) ধার করতে পারে ব্যাংক। দিনের কাজ শেষে ধারকৃত টাকা ফেরত দিতে হয়। অগ্রণী ব্যাংক প্রতিদিনই বড় অংকের অর্থ ধার করছে কলমানি বাজার থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে বলছে, ১৫-৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিনই কলমানি মার্কেট থেকে ধার করেছে অগ্রণী ব্যাংক।

এ সময় মোট ১৩ কর্মদিবসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি ধার করেছে ৮ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ বছরের প্রথম মাস জানুয়ারির শেষ পাক্ষিকের প্রতিদিনই অগ্রণী ব্যাংক গড়ে ৬৮২ কোটি টাকা ধার করতে বাধ্য হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি খাতের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে এ টাকা ধার করেছে ব্যাংকটি। একই সময়ে রেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও ধার করতে হয়েছে ব্যাংকটিকে। সর্বশেষ ৩১ জানুয়ারি রেপোর মাধ্যমে তিনদিনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৯৪৪ কোটি টাকা ধার করেছে অগ্রণী ব্যাংক।

কলমানি বাজার থেকে বড় অংকের ধার নেয়ার শুরু বিদায়ী বছরের শেষের দিক থেকে। গত ২৬ ডিসেম্বর কলমানি থেকে ১ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা ধার করে অগ্রণী ব্যাংক। এর পর থেকে প্রতিদিনই কলমানি বাজার থেকে ধার করে দৈনন্দিন কাজ চালাচ্ছে অগ্রণী ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ১৫ জানুয়ারি কলমানি বাজার থেকে ৪৮৫ কোটি টাকা ধার নেয় অগ্রণী ব্যাংক। এর পর থেকে প্রতিদিনই ধার নেয়ার পরিমাণ বাড়ছে ব্যাংকটির। ১৬ জানুয়ারি ৫৩৫ কোটি, ১৭ জানুয়ারি ৫৪৯ কোটি, ২০ জানুয়ারি ৫৫৫ কোটি, ২১ জানুয়ারি ৫৫৪ কোটি, ২২ জানুয়ারি ৬০০ কোটি, ২৩ জানুয়ারি ৭০০ কোটি, ২৪ জানুয়ারি ৮৫৬ কোটি, ২৭ জানুয়ারি ৮৬৯ কোটি, ২৮ জানুয়ারি ৪৭১ কোটি, ২৯ জানুয়ারি ৯২৪ কোটি ও ৩০ জানুয়ারি ৮২৫ কোটি টাকা কলমানি বাজার থেকে ধার করেছে অগ্রণী ব্যাংক। ৩১ জানুয়ারি কলমানি বাজার থেকে ৯৪০ কোটি টাকা ধার করেছে ব্যাংকটি। একই দিন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও রেপোর মাধ্যমে ৯৪৪ কোটি টাকা ধার করতে হয়েছে অগ্রণী ব্যাংককে।

কলমানি থেকে প্রতিদিনই ধার করা ভালো ব্যবস্থাপনা নয় বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, কলমানি বাজার থেকে প্রতিদিন ধার করা মানেই হলো ব্যাংকের সম্পদ ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের বিচ্যুতি। এডি রেশিও ৬৫ শতাংশের নিচে থাকা কোনো ব্যাংকের এ ধরনের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

এদিকে অতিরিক্ত তারল্য কাজে লাগানোর নামে অগ্রণী ব্যাংক দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২ হাজার ৩৭২ কোটি টাকার মেয়াদি আমানত দিয়েছে। এর মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠানের অবস্থা বেশ খারাপ। এমন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স করপোরেশন (বিআইএফসি) লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে না পারার অভিযোগ অনেক পুরনো। অথচ বিআইএফসিকে ২০ কোটি টাকা মেয়াদি আমানত দিয়েছে অগ্রণী ব্যাংক। গত ২৭ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানটিকে ৪ কোটি টাকা কলমানিতেও ধার দিয়েছে অগ্রণী ব্যাংক।

খারাপ পরিস্থিতি পার করা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আরেকটি ফার্স্ট ফিন্যান্স লিমিটেড। অথচ আর্থিক প্রতিষ্ঠানটিকেও ৩৫ কোটি টাকার মেয়াদি আমানত দিয়েছে অগ্রণী ব্যাংক। কলমানি হিসেবে ধার দেয়া হয়েছে ৬ কোটি টাকা। আর্থিক পরিস্থিতি ভালো নেই প্রাইম ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডেরও। এ প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ কোটি টাকা আমানত ধার দিয়েছে অগ্রণী ব্যাংক।

লোকসান ও অনিয়মের কারণে বিপর্যস্ত আরেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফারইস্ট ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানটিকেও ৬০ কোটি টাকার আমানত দেয়া হয়েছে। আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডকেও ৩৭ কোটি টাকার মেয়াদি আমানত দিয়েছে ব্যাংকটি। এছাড়া খারাপ পরিস্থিতিতে থাকা ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডকে ৫০ কোটি, এফএএস ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডকে ৩৫ কোটি, বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডকে ৬০ কোটি টাকা আমানত দিয়েছে অগ্রণী ব্যাংক। প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স লিমিটেডকে দেয়া হয়েছে ৫০ কোটি টাকা। এ আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির ভিতও দুর্বল হয়ে পড়েছে।

তবে ঝুঁকিপূর্ণ আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে কোনো টাকা দেয়া হচ্ছে না বলে জানান অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শামস-উল-ইসলাম। তিনি বলেন, অগ্রণী ব্যাংকের আমানত ও ঋণ অনুপাত (এডি রেশিও) এখনো ৬৩ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। অতিরিক্ত তারল্য ফেলে না রেখে আমরা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে আমানত হিসেবে ধার দিয়েছিলাম। গত দুই মাস পেট্রোবাংলার এলসি দায় মেটানোর জন্য বাজার থেকে বিপুলসংখ্যক ডলার কিনতে হয়েছে। এটি করতে গিয়ে নগদ অর্থে কিছুটা টান পড়েছে। সোনালী ব্যাংকের মতো বড় ব্যাংকও কলমানি বাজার থেকে ধার নেয়। আশা করছি, এ সংকট দ্রুতই স্বাভাবিক হয়ে আসবে। ঝুঁকিপূর্ণ আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে কোনো টাকা দেয়া হচ্ছে না। ক্রমান্বয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা হচ্ছে।

195 ভিউ

Posted ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com