রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

দেশের ৫৭ ব্যাংকেই দুই অঙ্কের সুদ গুনছেন ব্যবসায়ীরা !

রবিবার, ১৮ মার্চ ২০১৮
362 ভিউ
দেশের ৫৭ ব্যাংকেই দুই অঙ্কের সুদ গুনছেন ব্যবসায়ীরা !

কক্সবাংলা ডটকম(১৮ মার্চ) :: দেশের ৫৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে সবকটিতেই এখন দুই অঙ্কের সুদ গুনছেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে শিল্প প্রতিষ্ঠানে দেওয়া ঋণের বিপরীতে ১৫ শতাংশেরও বেশি হারে সুদ আরোপ করছে কোনও কোনও ব্যাংক। গত ফেব্রুয়ারি মাসের তথ্য নিয়ে সাজানো বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে এসব জানা গেছে।

এই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, শিল্পের জন্য ছোট ও বড় সব ধরনের ব্যবসায়ীকে ব্যাংক ঋণে দুই অঙ্কের সুদ গুনতে হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদী ও স্বল্পমেয়াদী দুই ধরনের ঋণেই সুদের হার চলে গেছে দুই অঙ্কে। এক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি উভয়ই ব্যাংকই সমান তালে সুদ হার বাড়িয়ে দিয়েছে।

যদিও ব্যাংকের ঋণের সুদ হার এক অঙ্কে কমিয়ে আনার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের যৌথসভায় ব্যাংকগুলোকে কেবল মুনাফা বৃদ্ধির কথা না ভেবে দেশের উন্নয়নের স্বার্থে সুদের হার কমিয়ে আনার তাগিদ দেন তিনি।

এক্ষেত্রে একমত এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালক আবদুস সালাম মুর্শেদী।

তিনি বললেন, ‘সুদের হার এক অঙ্কে কমিয়ে আনা জরুরি। তা না হলে উচ্চ সুদের ঋণে ব্যবসা করে লাভ পাওয়া কঠিন। সুদের হার বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। বিনিয়োগও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’

ইএবি সভাপতি মনে করেন, ব্যাংকের খেলাপি প্রবণতা কমানো গেলে সুদের হার এক অঙ্কে কমিয়ে আনা সম্ভব। তিনি উল্লেখ করেছেন, দীর্ঘমেয়াদী ঋণে আগে থেকে সুদ হার দুই অঙ্কে ছিল। এখন স্বল্পমেয়াদী ঋণেও সুদের হার দুই অঙ্কে গিয়ে ঠেকেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকারি মালিকানার আটটি ব্যাংকের মধ্যে জনতা ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ব্যবসায়ীরা দীর্ঘমেয়াদী ও স্বল্পমেয়াদী দুই ধরনের ঋণেই সুদের হার গুনছেন ১৩ শতাংশ হারে। একইভাবে ব্যবসায়ীদের সুদ হার গুনতে হচ্ছে শিল্পের মেয়াদী, চলতি ও এসএমই ঋণের ক্ষেত্রেও। সোনালী ব্যাংক ও রূপালী ব্যাংক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সুদ নিচ্ছে ১১ শতাংশ হারে। অগ্রণী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল)সুদ নিচ্ছে ১১ থেকে ১২ শতাংশ হারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, শিল্প ঋণের ক্ষেত্রে সরকারি ব্যাংকের চেয়ে বেশি হারে সুদ আরোপ করছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। ২০ শতাংশেরও বেশি হারে সুদ আরোপ করছে কোনও কোনও ব্যাংক।

ওই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, যেসব ব্যবসায়ী ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন তাদের কারও কারও সুদ গুনতে হচ্ছে ২২ শতাংশ হারে। বেসরকারি অন্যান্য অধিকাংশ ব্যাংক এসএমই বা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যেক্তাদের কাছ থেকে সুদ নিচ্ছে ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ হারে। বড় উদ্যোক্তাদেরও দীর্ঘমেয়াদী ও স্বল্পমেয়াদী দুই ধরনের ঋণই গুনতে হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৬ থেকে ১৭ শতাংশ হারে।

সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোকে ঋণে সুদ হার না বাড়ানোর অনুরোধ জানান তিনি। সম্প্রতি রাষ্ট্রায়ত্ব একটি ব্যাংকের অনুষ্ঠানে তাকে বলতে শোনা গেছে, ‘ব্যাংক ঋণের সুদ হার বেড়ে যাওয়া ব্যবসার জন্য নেতিবাচক। এমনকি দেশের জন্যও তা খারাপ।’

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, ‘তিন মাস ধরে ঋণে সুদের হার আবার বেড়েছে। সুদ হার আবারও চলে গেছে দুই অঙ্কে। এখন ১৩ শতাংশেরও ওপরে কখনও কখনও ১৫ শতাংশ হারে সুদে ঋণ নিতে হচ্ছে।’

ঋণে সুদের হার এক অঙ্কে রাখার জন্য ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানান বিজিএমইএ সভাপতি। তার মন্তব্য, ব্যাংক ঋণে সুদের হার বৃদ্ধি পেলে ব্যবসায় খরচ বেড়ে যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪০টির বেশি ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়ে দিয়েছে। এ বছরের জানুয়ারিতে সুদের হার বৃদ্ধি করেছে বাকি ব্যাংকগুলো। গত মাস (ফেব্রুয়ারি) থেকে ৫৭টির মধ্যে সবকটি ব্যাংকই দুই অঙ্কে সুদ নিচ্ছে।

প্রতিবেদনটিতে আরও জানানো হয়েছে, শিল্পের জন্য এককভাবে সব ব্যাংক ব্যবসায়ীদের দুই অঙ্কের সুদে ঋণ দিলেও গড় হিসাবে (কাগজে-কলমে) কিছু ব্যাংকের সুদ হার এখনও দেখাচ্ছে ৯ শতাংশের ঘরে। গত জানুয়ারিতে ১৯টি ব্যাংকের সুদ হার গিয়ে ঠেকে গড়ে দুই অঙ্কের ঘরে।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ‘গত বছরের শেষ দিকে ব্যাংকগুলো ৯ শতাংশ সুদ হারে ঋণ প্রস্তাব দিতো। কিন্তু এখন তা চলে গেছে ১২ থেকে ১৫ শতাংশের ঘরে। কোনও কোনও ব্যাংক থেকে ১৫ শতাংশ হার সুদেও ঋণ নিতে হচ্ছে গ্রাহকদের।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি বেড়ে যাওয়ায় ঋণে সুদের হারও বেড়ে গেছে। গত বছরের নভেম্বরে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯ দশমিক ০৬ শতাংশ। এর আগে অক্টোবরে ১৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ১৯ দশমিক ৪০ শতাংশ, আগস্টে ১৯ দশমিক ৮৪ ও জুলাইয়ে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। জুনে ঋণ বৃদ্ধির হার ছিল ১৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকেই ব্যাপক হারে বেড়েছে ঋণ বিতরণ। গত ডিসেম্বরে বেসরকারি খাতে ঋণ বৃদ্ধি পায় ১৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। এছাড়া নভেম্বরে ১৯ দশমিক ০৬, অক্টোবরে ১৮ দশমিক ৬৩, সেপ্টেম্বরে ১৯ দশমিক ৪০, আগস্টে ১৯ দশমিক ৮৪ ও জুলাইয়ে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ১৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। এ কারণে অধিকাংশ ব্যাংক পড়ে যায় তারল্য সংকটে। পাশাপাশি আমদানি দায় মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কিনতে হয়েছে ব্যাংকগুলোকে।

এদিকে ঋণ আমানত অনুপাত (এডিআর) সীমা কমিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নামিয়ে আনতে হবে। এজন্য আমানত সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় নেমেছে ব্যাংকগুলো। আমানতের সুদ হারও বাড়িয়ে দিয়েছে এসব প্রতিষ্ঠান। ৩ থেকে ৬ শতাংশ সুদের আমানত এখন ৮ থেকে ১২ শতাংশ সুদে সংগ্রহ করছে ব্যাংকগুলো। আমানতের সুদ বেড়ে যাওয়ায় ঋণের সুদ হারও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

362 ভিউ

Posted ৪:৩৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৮ মার্চ ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com