বুধবার ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বুধবার ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

দেশে নিম্নমানের ভেজাল ওষুধে স্বাস্থ্য খাতে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে

সোমবার, ২২ মে ২০১৭
461 ভিউ
দেশে নিম্নমানের ভেজাল ওষুধে স্বাস্থ্য খাতে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে

কক্সবাংলা ডটকম(২২ মে) :: নিম্নমানের এবং নকল ও ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযান পরিচালনা করেছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। গত এক বছরে নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন বা বিক্রয়ের দায়ে মামলা হয়েছে দুই হাজারের বেশি। কিন্তু এর পরও ভেজাল বা নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদনকারী ও বিক্রেতাদের অপতৎপরতা কমেনি।

এ অবস্থায় বর্তমানে দেশের স্বাস্থ্য খাতের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ ধরনের ওষুধ উৎপাদনকারী ও বিক্রেতাদের শাস্তির মুখোমুখি করা হলেও তা পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার উদ্যোগ সেভাবে দৃশ্যমান নয় বলেই বিষয়টিকে প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না বলে অভিমত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর সারা দেশে নিম্নমানের ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রির দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে মামলা হয়েছে ২ হাজার ১৬৯টি। এর বাইরে নিম্নমানের ওষুধের উৎপাদন ও বিপণনের অভিযোগে ড্রাগ কোর্টে ৪১টি ও ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ৬৪টি মামলা করা হয়েছে।

এ সময়ে নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনের অভিযোগে জরিমানা আদায় হয়েছে ৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকারও বেশি। নিম্নমানের ও ভেজাল ওষুধ জব্দ ও ধ্বংস করা হয়েছে ১৭ কোটি টাকার। বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে ৫৮ জন আসামিকে। সিলগালা করে দেয়া হয়েছে ৩৭টি প্রতিষ্ঠান।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিসেস (জিএমপি) গাইডলাইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করায় এবং ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদনের দায়ে বিভিন্ন সময় ৮৬টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে লাইসেন্স চিরতরে বাতিল হয়েছে ১৮টি প্রতিষ্ঠানের।

তবে স্বাস্থ্য খাতে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধের দৌরাত্ম্য বন্ধে এটুকু যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এ ধরনের অনেক ওষুধ উৎপাদনকারী ও বিক্রেতাকে শাস্তির মুখোমুখি করা হয়েছে সত্যি। তবে তা পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার উদ্যোগ সেভাবে দৃশ্যমান নয়। ফলে এ নিয়ে দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি শাস্তি পাওয়া উৎপাদনকারী ও বিক্রেতারা যাতে আবার তাদের কার্যক্রম শুরু করতে না পারে, সে বিষয়েও নজরদারি বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়ার মাধ্যমেও তাদের অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফার্মাসিউটিক্যাল সোসাইটির (বিপিএস) সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান হাসান কাউছার বলেন, ‘ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধের বিরুদ্ধে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর তাদের তদারকি বাড়িয়েছে। গত কয়েক বছরে মামলার পরিমাণও উল্লেখযোগ্য। মামলা দায়েরের পাশাপাশি শাস্তি দেয়ার বিষয়টি দ্রুত দৃশ্যমান হলে সবার জন্য বার্তা দেয়াটা আরো সহজ হতো। ওষুধ জীবনরক্ষার উপাদান। এটি নিয়ে কোনোভাবেই আপস করার কোনো সুযোগ নেই। এ কারণে নজরদারির আওতা বাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে সামাজিকভাবে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদনকারী ও বিক্রেতার বিরুদ্ধেও সচেতনতা তৈরি করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ তৈরি হয় সাধারণত দুটি পদ্ধতিতে। এর মধ্যে একটি হলো, শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন কোম্পানির নকল ওষুধ উৎপাদন। অন্যটি হলো, উপাদানের পরিমাণে হেরফেরের পাশাপাশি গুণগত মান বজায় না রাখার মাধ্যমে নিম্নমানের ওষুধ তৈরি। ফলে এসব ওষুধ ব্যবহারে একদিক থেকে কাঙ্ক্ষিত ফল তো পাওয়াই যায় না, অন্যদিকে অনেক সময় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রি করা হয় নানাভাবে প্ররোচিত করার মাধ্যমে। আবার অনেক সময় মূল ওষুধের উচ্চমূল্যের অজুহাত তুলে একই মানের দাবি করে অন্য ওষুধও ধরিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া নামিদামি ব্র্যান্ডের ওষুধের মতো দেখতে বিভিন্ন ভেজাল ওষুধ বিক্রির বিষয়টি তো রয়েছেই।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথমসারির গুণগত মানসম্পন্ন ৩০টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ওষুধের মোট চাহিদার ৯০ শতাংশ পূরণ করে। বাকি চাহিদা পূরণ হয় আমদানি, অন্যান্য মাঝারি ও ছোট প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের মাধ্যমে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে নিম্নমানের ও নকল বা ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত বন্ধে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে উৎপাদনকারী ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে অধিদপ্তর। দেশের বাজারে বর্তমানে নিম্নমানের ও নকল-ভেজাল ওষুধের পরিমাণ ৩-৫ শতাংশ, যা প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর বলছে, নকল-ভেজাল, মানহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি বন্ধে দেশের বিভাগীয় শহরসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মডেল ফার্মেসি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যার কার্যক্রম সারা দেশে চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে ঢাকা, সিলেট, নোয়াখালী ও খুলনায় মোট ৩০টি মডেল ফার্মেসি ও সাতটি মডেল মেডিসিন শপের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের সহায়তায় ‘ওষুধের বিরূপ প্রতিক্রিয়া, নকল ওষুধ চিহ্নিতকরণ ও নির্ধারিত মূল্যে ওষুধ বিক্রয়ের বিষয়ে অনলাইনভিত্তিক রিপোর্টিংয়ের জন্য ওয়েব পোর্টাল ও মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের কার্যক্রম এখন পাইলট পর্যায়ে রয়েছে। অ্যাপটির মাধ্যমে ওষুধের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে অভিযোগ জানানোর সুযোগ রয়েছে। এছাড়া অ্যাপটির মাধ্যমে ওষুধের নির্ধারিত মূল্য যাচাই করাও সম্ভব হবে বলে জানা গেছে।

সার্বিক বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সিনিয়র ড্রাগ সুপার সৈকত কুমার কর বলেন, ‘অধিদপ্তরের জনবল বেড়েছে। সেসঙ্গে এ নিয়ে তদারকি এবং দেশব্যাপী নকল ও ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে অভিযানও জোরদার করা হয়েছে। এ নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও মামলার সংখ্যাও বাড়ছে। নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে ঔষধ প্রশাসনের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

461 ভিউ

Posted ৫:৩২ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২২ মে ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com