এ অভিনেত্রী জানিয়েছেন, এবার চার মাসের মতো তিনি দেশে থাকবেন। এর মানে, টিভি পর্দায় আবার মোনালিসা তার হাসি নিয়ে হাজির হবেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
গেল বৃহস্পতিবার দেশে ফিরে এবারের সফর নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি। তার সাক্ষাত্কারটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো—
দীর্ঘ দুই বছর পর দেশে এলেন, কেমন লাগছে?
অবশ্যই খুব ভালো লাগছে। এবার দেশে থাকব অনেক দিন, প্রায় তিন-চার মাসের মতো।
এবার কত দিন থাকবেন? এত দিন থাকার পরিকল্পনা কেন?
মাস চারেক থাকার পরিকল্পনা আছে।পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে ঢাকায় এসেছি। একই সঙ্গে আসছে ঈদের জন্য বেশকিছু নাটকে অভিনয় করব। সময়সূচিও ঠিক হয়ে গেছে। এখন শুধু শুটিংয়ে নামার পালা।
যুক্তরাষ্ট্রে আপনি কোথায় আছেন?
নিউইয়র্কের কুইন্স শহরে।
সেখানে কী করছেন?
কসমেটিকস ব্র্যান্ড সেফোরার সঙ্গে অনেক দিন থেকে আছি। সেখানে সিনিয়র মেকআপ আর্টিস্ট ছিলাম। এখন পদোন্নতি হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে এখন আমি বিউটি অ্যাডভাইজার। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ দিচ্ছি।
যুক্তরাষ্ট্রে নাটক কিংবা টেলিছবির কাজ করতে পারছেন?
একদমই না। ওটা সম্ভব না। আমি ফুলটাইম জব করছি। ইচ্ছা থাকলেও এর বাইরে কিছু করা সম্ভব না। সেখানে নাটক-টেলিছবি তৈরি মোটেও সহজ ব্যাপার না। অনেক খরচের ব্যাপার। কেউ কেউ হয়তো চেষ্টা করেন, কিন্তু যা খরচ হয়, সেটা উঠিয়ে আনা কঠিন হয়ে পড়ে। আর সেখানে নিজের কাজটাকেই আমি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আর এই কাজটা আমি উপভোগ করছি।
কুইন্সে আপনার সঙ্গে আর কে আছেন?
কেউ নেই। আমি একাই থাকি। সেখানে অনেক বাংলাদেশি আছেন।
২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কপ্রবাসী ফাইয়াজ শরীফের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন।
বিয়েটা ছিল আমার জীবনের একটা বড় দুর্ঘটনা। বিয়ের দুই বছর পরই আমাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর ২০১৬ সালে আমি ঢাকায় এসেছিলাম।
আবার বিয়ে করার ব্যাপারে কিছু ভেবেছেন?
বাংলাদেশে এলে এই কথাটা বেশি শুনতে হয়। কিন্তু একবার তো অনেক ঝামেলা পোহাতে হলো। ভয় হয়। কাকে বিশ্বাস করব? একা আছি, ভালোই আছি।
দেশে এসেছেন। বড় কিছু করার সম্ভাবনা আছে?
এখন শুধু বলব, সবাইকে একটা বড় চমক দেব। এ ব্যাপারে এখন কিছুই বলব না। প্লিজ, একটু অপেক্ষা করুন।
হুট করে দেশে এসে অভিনয়ে নেমে পড়া ?
হুট করে আসা, হুট করে কাজ করা— এতে মানুষের একটা আগ্রহ ও প্রত্যাশা থাকে। এটা তো সত্য, লম্বা সময় ধরে এ দেশের মিডিয়ায় কাজ করেছি এবং দর্শকের ভালোবাসার টানে আবার এসেছি। তারা প্রতিটি মুহূর্ত আমাকে পর্দায় দেখতে চায়। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রে আমার সবকিছু সেটেলড থাকা সত্ত্বেও এখানে আসার একমাত্র কারণই দর্শকের ভালোবাসার কিছু প্রতিদান দেয়ার চেষ্টা করা।
গত রোজার ঈদে বেশকিছু নাটকে অভিনয় করেছিলেন—
এবারো অনেক ভালো ভালো কাজ করব। অনেক চমক আছে, এখনই বলতে চাই না। অবশ্য গতবারের মতো অত বেশি কাজ করতে চাই না। এবার বুঝেশুনে কাজ করার চেষ্টা করব। তার পরও মানুষের অনুরোধ তো ফেলে দেয়া যায় না। এখন দেখা যাক, পরিস্থিতি কোন দিকে যায়।
তার মানে বলা যায়, একটা চমক দিতেও এবারকার আপনার ঢাকায় আসা—
হ্যাঁ, প্রতিবারই তো একটা চমক দেয়ার চেষ্টা করি। এবারো চমকে দিতেই ঢাকায় আসা। এজন্য আগে থেকে কাউকে কিছু বলব না বলে ঠিক করেছিলাম। চেয়েছি পহেলা বৈশাখেই সবাইকে জানিয়ে দেয়ার।
ভিনদেশে থেকে দেশের নাটক দেখা হয়?
সত্যি বলতে যুক্তরাষ্ট্রে নানা ব্যস্ততার কারণে খুব একটা নাটক দেখা হয়ে ওঠে না। তার পরও দেখার চেষ্টা করি, মাঝে মধ্যে ইউটিউবেও ঢুঁ মারি।
জানেন তো, দেশের নাটকের পরিস্থিতি মন্দের দিকে?
হ্যাঁ, জানি পরিস্থিতি খুব একটা অনুকূলে নেই। তবে আমি ভাগ্যবান, যাদের সঙ্গে কাজ করেছি, তারা তাদের সেরাটুকুই ঢেলে দেয়ার চেষ্টা করেন। তবে আমি সবার সঙ্গেই কাজ করতে চাই। কারণ এতে করে কাজের ভিন্নতা আসে। আর আমার মনে হয়, পাশের দেশ বা বাইরের কাজ অত অনুকরণ না করে আমাদের মানটা ধরে রাখতে পারলেই ইন্ডাস্ট্রি এগিয়ে যাবে।
দীর্ঘ অভিনয় জীবনে সিনেমা করা হয়ে উঠল না আপনার, কেন?
সিনেমা নিয়ে ওভাবে কখনই চিন্তা করিনি। এটা অনেক বড় একটা মাধ্যম। এখানে কাজ করতে হলে নিজেকে অনেক কিছুর জন্য যোগ্য করে গড়ে তোলার একটা ব্যাপার থাকে। অবশ্য আমি আমার ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সিনেমার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করিনি। আবার ব্যাটে-বলেও মেলেনি। তবে ইচ্ছা আছে নিজেকে প্রকাশ করার। সে রকম ভালো কিছু হলে করব না কেন?