শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

দেশে বেকার ৩ কোটি ৩৯ লাখ ৮৭ হাজার : সরকারি পদে সাড়ে ৩ লাখেরও বেশি খালি

শনিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
153 ভিউ
দেশে বেকার ৩ কোটি ৩৯ লাখ ৮৭ হাজার : সরকারি পদে সাড়ে ৩ লাখেরও বেশি খালি

কক্সবাংলা ডটকম(৪ ফেব্রুয়ারি) :: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বেকার সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কর্মসংস্থানে জোর দিয়েছে সরকার। এজন্য সরকারি শূন্যপদ পূরণের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। চলতি বছরে ইতোমধ্যে ১২ হাজারেরও বেশি সরকারি শূন্যপদ পূরণের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে সরকার। পাশাপাশি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো চালু করার উপর জোর দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে আউট সোর্সিংয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সারাদেশের ফ্রিলেন্সার তৈরিতে জোর দিয়েছে তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

গ্রামীণ অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়নেও নানামুখী সহযোগিতা করছে সরকার। বিদেশে দক্ষ শ্রমশক্তি পাঠাতে সরকারি উদ্যোগে বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে। চলতি বছর ৫০ হাজারেরও বেশি সরকারি শূন্যপদ পূরণের পাশাপাশি বেসরকারি খাতে ২৫ থেকে ৩০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপ অনুসারে, বর্তমানে দেশে বেকারের সংখ্যা ৩ কোটি ৩৯ লাখ ৮৭ হাজার। এর মধ্যে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা ১৯ লাখ ৫১ হাজার। দেশের প্রায় ৭৮ শতাংশ তরুণ নিজেদের কর্মসংস্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন। উচ্চশিক্ষিত তরুণদের মধ্যে এ উদ্বেগ সবচেয়ে বেশি। মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের এবং অছাত্রদের চেয়ে ছাত্রদের মধ্যে উদ্বেগ বেশি।

জাতীয় কর্মসংস্থান নীতি ২০২০ (খসড়া) এর প্রাক্কলন অনুযায়ী, প্রতি বছর গড়ে ২৬ লাখ লোক নতুন করে শ্রমবাজারে প্রবেশ করে। তাছাড়া করোনা মহামারির কারণে আগের কর্মসংস্থান যেমন অনেকে ধরে রাখতে পারেনি, তেমনি ২০২০ ও ২০২১ সালে চলমান করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতি ও ডলারের মূল্যবৃদ্ধি- ইত্যাদি কারণে বেসরকারি খাতে নতুন কোনো কর্মসংস্থান হয়নি।

দেশের সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, মোট শ্রমশক্তির মধ্যে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী ৬ কোটি ৩৫ লাখ। যার মধ্যে কাজ করেন ৬ কোটি ৮ লাখ নারী-পুরুষ এবং বাকি ২৭ লাখ বেকার। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানে ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ। বাংলাদেশে এই হার ১০ দশমিক ৭ শতাংশ, যা এই অঞ্চলের ২৮টি দেশের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

লন্ডনের ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) তথ্যমতে, বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের হার সবচেয়ে বেশি এবং প্রতি ১০০ জন স্নাতক ডিগ্রিধারীর মধ্যে ৪৭ জনই বেকার।

১ কোটি ৫০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের অঙ্গীকার আ.লীগের : ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দলীয় ইশতেহার ঘোষণার সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৩ সাল নাগাদ অতিরিক্ত ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির অঙ্গীকার করেছিলেন।

ইশতেহারে বলা হয়, যুবসমাজ দেশের মূল্যবান সম্পদ। বাংলাদেশের মোট এক তৃতীয়াংশ যুবসমাজ। যা প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ। সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রধানতম শক্তি যুবশক্তি। দেশের এই যুবগোষ্ঠীকে সুসংগঠিত সুশৃঙ্খল এবং উৎপাদনমুখী শক্তিতে রূপান্তরের লক্ষ্য অর্জনে আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রæতিবদ্ধ।

ইশতেহারে আরো বলা হয়, একটি সুচিন্তিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণের মাধ্যমে জাতীয় যুবনীতি পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। তরুণদের কল্যাণ ও উন্নয়ন কাজে প্রশাসনিক গতি আনতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আওতায় গঠন করা হবে পৃথক যুব বিভাগ। জাতীয় বাজেটে বাড়ানো হবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আর্থিক বরাদ্দ। জেন্ডার বাজেটের আলোকে প্রণয়ন করা হবে বার্ষিক যুব বাজেট। কর্মসংস্থানে কৃষি শিল্প ও সেবার অংশ যথাক্রমে ৩০, ২৫ ও ৪৫ শতাংশে পরিবর্তন করা হবে।

ইশতেহারের এসব প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়নে নানা পদক্ষেপও নিয়েছিল সরকার। কিন্তু করোনা মহামারির ধাক্কায় তার বেশিরভাগই ভেস্তে যায়। উল্টো লকডাউন ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বৈশ্বিক চাহিদা কমে যাওয়ায় গার্মেন্টস খাতসহ নানা খাতে চাকরি হারান লাখ লাখ লোক। তারপরও জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে কর্মসংস্থান বাড়ানোর পাশাপাশি বিদেশে জনশক্তি রপ্তানি বাড়াতে তৎপরতা বাড়িয়েছে সরকার। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেছেন, দেশের সব অংশে কর্মসংস্থানের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে সরকার ১০০টির বিশেষ অর্থনৈতিক জোন স্থাপন করছে, যেখানে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

এদিকে গত বুধবার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন গ্রেডে বেসামরিক জনবলের মোট শূন্য পদের সংখ্যা ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১২৫টি। শূন্য পদে লোক নিয়োগ একটি চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে ফরহাদ হোসেন বলেন, ৪১তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা চলমান রয়েছে। ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ণ কার্যক্রম চলছে।

৪৪তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা গত ১১ জানুয়ারি শেষ হয়েছে। আর ৪৫ বিসিএসের প্রিলিমিনারি টেস্ট আগামী মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে। ১০ থেকে ১৩ তম গ্রেডের (পূর্ববর্তী দ্বিতীয় শ্রেণি) জনবল নিয়োগ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে হয়ে থাকে। ১৪ থেকে ২০ গ্রেডের নিয়োগ স্ব স্ব মন্ত্রণালয়ের/বিভাগ/দপ্তর/সংস্থার নিয়োগ বিধি অনুযায়ী হয়। আদালতে মামলা থাকায়, নিয়োগবিধি প্রণয়ন কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় এবং পদোন্নতি যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় কিছু শূন্য পদ পূরণ করা যায় না।

চাকরিপ্রার্থীদের জন্য নতুন বছর সুখবর দিয়ে শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এসেছে নতুন বছরের শুরুতেই। এ ছাড়া আগের বছরের আটকে থাকা কয়েকটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশিত হয়েছে বছরের শেষে, ডিসেম্বর মাসে। সব মিলে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে ১২ হাজার ৭৪ পদে সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে ব্যাংক খাতে। এছাড়া আটকে থাকা কয়েকটি চাকরির পরীক্ষার তারিখও প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা চাকরিপ্রার্থী হাফিজুর রহমান বলেন, নতুন বছরে বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বেকারদের জন্য আশার খবর। যেহেতু সরকারি চাকরিতে সাড়ে তিন লাখের বেশি পদ শূন্য রয়েছে, তাই প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত এ বছর আরো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা। তাহলে একদিকে শূন্যপদ যেমন কমবে, তেমনি বেকারদের কর্মসংস্থানও হবে।

কর্মসংস্থান কমিশন গঠন করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের : বিশেষজ্ঞরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও চাকরিদাতা, চাকরিপ্রার্থী ও শিক্ষার্থী প্রত্যেকের জন্যই আলাদাভাবে কিছু সুপারিশ করেছেন। তারা বলছেন, দেশে কোন ধরনের দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন, সেটি নির্ধারণে সরকারকে জরিপ পরিচালনা করতে হবে। জরিপের তথ্য সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের জানিয়ে সে অনুযায়ী নীতি প্রণয়ন করতে হবে। বেকারত্ব ঘোচাতে ইতোমধ্যে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, সেগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

শিক্ষা খাতের দুর্নীতি দূর এবং গুণগত শিক্ষা দেবে- এমন একটি উদার শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। আর সরকারি এবং বেসরকারি কর্মসংস্থানের সমন্বয়ের জন্য কর্মসংস্থান কমিশন গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিদ্যমান শ্রমবাজারের সংকটের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এই কমিটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করবে। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ঢেলে সাজানো এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করতেও এই কমিশন পরামর্শ দেবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নীলাঞ্জন কুমার সাহার মতে, কর্মসংস্থানের জন্য বাজেটে সুনির্দিষ্ট কোনো আর্থিক বরাদ্দের প্রস্তাব না থাকায় এগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় রয়েই গেছে।

ম্যাক্রোঁ ও ফিন্যান্সিয়াল ইকোনমিস্ট অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী বলেন, গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষিত ও অশিক্ষিত বেকারদের ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে।

153 ভিউ

Posted ২:৫৩ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com