কক্সবাংলা ডটকম(১৮ মার্চ) :: নিদাহাস ট্রফির উত্তেজক ফাইনালে বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারিয়ে নিদাহাস ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হল ভারত৷ জয়ের জন্য ভারতের সামনে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬৭ রানের৷ শেষ দু’ওভারে জয়ের জন্য টিম ইন্ডিয়ার দরকার ছিল ৩৪ রান৷ ১৯ তম ওভারে ২২ রান তুলে ভারতকে জয়ের মঞ্চে বসিয়ে দেন নাইট অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক৷ ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা মেরে তিনিই চ্যাম্পিয়ন করেন দলকে৷
শেষ ওভারের নাটকীয়তাই বাংলাদেশকে হারালো ভারত। আরেকবার ফাইনালে হারের বেদনায় নীল সাকিব-মুশফিকরা। শেষ বলে ছক্কা মেরে দলকে জেতালেন দিনেশ কার্তিক। ৪ উইকেটে জিতে নিদাহাস ট্রফি জিতলো ভারত।
রোহিত শর্মার ব্যাটে ঝড়ো সূচনা করেছিল ভারত। বাংলাদেশ জোড়া আঘাত করলেও তার পারফরম্যান্সে অস্বস্তি কাটছিল না। শেষ পর্যন্ত ৫৬ রানে তাকে ফেরান নাজমুল ইসলাম। এরপর সৌম্য সরকার ও মোস্তাফিজুর রহমানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ম্যাচ হেলে পড়েছিল বাংলাদেশের দিকে। শেষ ২ ওভারে ভারতীয়দের ছুঁড়ে দেয় তারা ৩৪ রানের লক্ষ্য। কিন্তু কার্তিক ক্রিজে নেমে সব পাল্টে দেন। ১৯তম ওভারে ২২ রান নেন তিনি। শেষ ওভারে ১২ রান দরকার ছিল তাদের। সৌম্য সরকার পঞ্চম বলে উইকেটও নেন। শেষ বলে ৫ রান দরকার ছিল তাদের। কার্তিক ছয় মেরে বাংলাদেশকে হতাশায় ডোবান।
১৬৭ রানের লক্ষ্যে নেমে রোহিতের ব্যাটে দুরন্ত সূচনা করেছিল ভারতীয়রা। তবে ৩২ রানের জুটি ভেঙে তাদের ধাক্কা দেয় বাংলাদেশ। তৃতীয় ও চতুর্থ ওভারে দুটি উইকেট পায় তারা। সাকিব আল হাসানের বলে শিখর ধাওয়ান ১০ রানে বদলি ফিল্ডার আরিফুল হকের দুর্দান্ত ক্যাচ হন। পরের ওভারে রায়নাকে রুবেল হোসেন পেছনে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি করেন। আম্পায়ার ওয়াইড দিলেও মুশফিক রিভিউ নিলে সিদ্ধান্ত যায় বাংলাদেশের পক্ষে।
রোহিতের সঙ্গে ৫১ রানের জুটি গড়ে দশম ওভারে রুবেলের দ্বিতীয় শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন লোকেশ। ১৪ বলে ২ চার ও ১ ছয়ে ২৪ রানে ডিপ স্কয়ার লেগে সাব্বির রহমানকে ক্যাচ দেন তিনি।
নাজমুল তার শেষ ওভারে রোহিতকে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানান। ৪২ বলে চারটি চার ও তিনটি ছয়ে ৫৬ রান করেন তিনি।
নিদাহাস ট্রফিতে টস রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। সব ম্যাচেই টস জেতা অধিনায়ক প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর তাতে সাফল্য পেয়েছে প্রায় সব দলই। ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে তাই টসটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল বাংলাদেশের জন্য। ফাইনালে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারতের সামনে জয়ের জন্য ১৬৭ রানের লক্ষ্যমাত্রা রাখে বাংলাদেশ৷ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান তোলে শাকিবরা৷
ইনিংসের শুরুটা মন্দ করেননি তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের ওপেনিং জুটি৷ প্রথম তিন ওভারে অবিচ্ছেদ্য থেকে ২৬ রান তোলেন দু’জনে৷ ভারতকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন ওয়াশিংটন সুন্দর৷ লিটন দাসকে ফেরত পাঠিয়ে দলের হয়ে উইকেট তোলার কাজ শুরু করেন তিনিই৷ লিটন ৯ বলে ১১ রান করে রায়নার হাতে ধরা দেন৷
পরের ওভারে তামিমকে সাজঘরের পথ দেখান যুবেন্দ্র চাহাল৷ বাউন্ডারি লাইনে তামিমের দুরন্ত ক্যাচ ধরেন শার্দুল ঠাকুর৷ ক্রিজ ছাড়ার আগে তামিম ১৩ বলে ১৫ রানের যোগদান রাখেন৷
সৌম্য সরকারকে ক্রিজে থিতু হতে দেননি যুবেন্দ্র৷ ২ বলে মাত্র ১ রান করে ধাওয়ানের হাতে জীবন দেন সৌম্য৷ ফর্মে থাকা মুশফিকুর রহিম ফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন৷ তিনি ১২ বলে ৯ রান করে চাহালের তৃতীয় শিকার হন৷
মাহমুদুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে পঞ্চম উইকেটের জুটিতে ৩৬ রান যোগ করেন৷ ১৬ বলে ২১ রান করে যখন বড় রানের ইঙ্গিত দিচ্ছেন মাহমুদুল্লাহ, ঠিক তখনই বিজয় শঙ্কর ও দীনেশ কার্তিকের মিলিত প্রচেষ্টায় রান আউট হয়ে ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটা লাগান বাংলাদেশের স্টপ গ্যাপ অধিনায়ক৷
শাকিবও সেট হওয়ার আগে দূর্ভাগ্যজনক রান আউট হয়ে ক্রিজ ছাড়তে বাধ্য হন৷ সাব্বির রহমান ৫০ বলে ৭৭ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে উনাদকাটের বলে বোল্ড হন৷ তিনি ৭টি চার ও ৪টি ছয় মারেন৷ পরের বলেই সদ্য ক্রিজে আসা রুবেল হোসেনকেও বোল্ড করেন জয়দেব৷ মেহেদি হাসান শেষবেলায় ২টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৭ বলে ১৯ রান করে অপরাজিত থাকেন৷
ভারতের হয়ে যুবেন্দ্র চাহাল ১৮ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট দখল করেন৷ উনাদকাট ২টি ও ওয়াশিংটন একটি উইকেট নিয়েছেন৷
Posted ১১:১৪ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৮ মার্চ ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta