কক্সবাংলা ডটকম :: এত বড় সৌরমণ্ডল, এত গ্রহ, তারা। সেখানে পৃথিবীতেই কেবল প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে, একথা ভাবতে মন চায় না মানুষের। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, প্রাণ আছে অন্যত্রও। ফলে দিন-রাত এক করে অজ্ঞাত ‘প্রতিবেশী’র খোঁজ চলছে। চাঁদ আর লাল গ্রহ মঙ্গল নিয়ে গবেষণা অনেক দূর গড়িয়েছে।
যদিও প্রাণের অস্তিত্ব মেলেনি। কিন্তু সম্প্রতি একটি গবেষণায় বৃহস্পতির (Jupitar) একটি চাঁদ ‘ইউরোপা’ (Europa) নিয়ে আশাবাদী হয়েছেন একদল বিজ্ঞানী। কেন?
প্রথমত, ইউরোপায় জল রয়েছে। এমনকী পৃথিবীর মহাসাগরগুলিতে যত জল আছে, তার চেয়ে বেশি জল রয়েছে ইউরোপার বিরাট অতলান্ত মহাসাগরে। প্রাণের আর একটি প্রধান উপাদান অক্সিজেনও রয়েছে ইউরোপার বরফে মোড়া পিঠে। যাকে টেনে বরফের নীচে নিয়ে গিয়ে তরল জলের মহাসাগরে মেশাচ্ছে ইউরোপাই। তার অভিনব প্রক্রিয়ায়। সবটা মিলিয়ে প্রাণ সৃষ্টি ও তার বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মনে করছেন গবেষকরা।
শনিবার আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’-এ (Geophysical Research Letters) প্রকাশিত গবেষণা পত্রে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বরফ পৃষ্ঠের অক্সিজেনের ৮৬ শতাংশই পৌঁছে যায় ইউরোপার মহাসাগরগুলিতে। অতএব, প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
গবেষকদের অন্যতম জ্যোতির্বিজ্ঞানী অধ্যাপক মার্ক হেসি এবং অন্য বিজ্ঞানীদের দাবি, বিরাট গ্রহ বৃহস্পতির জোরালো অভিকর্ষে ইউরোপায় প্রাণ টিকে থাকার প্রয়োজনীয় শক্তি মেলে। একই কারণে ইউরোপার বরফ পৃষ্ঠে ঢাকা অন্তর্ভাগ উষ্ণ থাকে। জল কখনওই কনকনে ঠান্ডা হয় না। এইসঙ্গে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অক্সিজেন। যা প্রাণের অস্তিত্বের অন্যতম শর্ত।
প্রসঙ্গত, এর আগেও ইউরোপা নিয়ে সম্ভাবনার কথা জানিয়ে ছিলেন বিজ্ঞানীরা। সেই সম্ভাবনার মাত্রা এবার বেড়ে গেল। সেই সময় বিজ্ঞানীরা জানিয়ে ছিলেন কীভাবে সূর্যালোক আর বৃহস্পতি থেকে ছিটকে আসা আধানযুক্ত কণা ইউরোপার পিঠে আছড়ে পড়ে সেখানে অক্সিজেনের সৃষ্টি হয়। প্রাণের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিচ্ছে ইউরোপার বরফ পৃষ্ঠের ছিদ্রপথগুলি।
একাধিক মহাকাশযান ওই ছিদ্রপথগুলির সন্ধান দিয়েছিল। সেই সূত্রে বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্তে আসেন, ওই ছিদ্রপথেই অক্সিজেন গিয়ে মেশে বৃহস্পতির উপগ্রহটির অতলান্ত সাগরের লবনাক্ত জলের প্রবাহে। সব মিলিয়ে ইউরোপাতেই হয়তো রয়েছে সবুজ গ্রহের বাসিন্দাদের ‘প্রতিবেশী’। এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
Posted ১১:৩৭ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৩ এপ্রিল ২০২২
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta