মো: ফারুক,পেকুয়া(২ আগস্ট) :: আমির আবুল কালাম আজাদ, সেক্রেটারী জেনারেল মৌলভী ইমতিয়াজ ও উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান মঞ্জু। তিন জনই শিক্ষক। তাদের তিনজনের নেতৃত্বেই চলছে পেকুয়া উপজেলা জামায়াত-শিবিরের সাংগঠনিক কার্যক্রম। উপজেলা জামায়াতের সুরা সদস্য বৈঠকে এ তিন জনের মতামতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
এছাড়াও শিবিরের কার্যক্রমও সার্বক্ষনিক মনিটর্রিং করেন তারা। অনেক সময় প্রকাশ্যে আবার অনেক সময় গোপনে চলে তাদের কার্যক্রম।
জানা গেছে, বর্তমান উপজেলা জামায়াতের আমির মাষ্টার আবুল কালাম আজাদ। তিনি মেহেরনামা উচ্চ বিদ্যালয়ের সি: শিক্ষক। বিগত কয়েক বছর ধরে তিনিই আমির হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। সেক্রেটারী জেনারেল হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন মৌলভী ইমতিয়াজ উদ্দিন। তিনি বারবাকিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক। নুরুজ্জামান মঞ্জু রাজাখালী বেশেরাতুল উলুম মাদ্রাসা শিক্ষক। ছিলেন বান্দরবন জেলা শিবিরের সভাপতি। বর্তমানে জামায়াতের প্রার্থী হিসাবে পেকুয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান।
নিয়মিত বৈঠক করেন জামায়াতের সেবাদান প্রতিষ্টান প্যান ইসলামীক হাসপাতালে। ওই হাসপাতালের ম্যানেজার মৌলভী ইউনুস গোপনীয় বৈঠকগুলোর তদারকির দায়িত্বে থাকলেও গত ৬ মাস ধরে তিনি হাসপাতালে না আসায় জামায়াতের নেতারা তাদের নিয়ন্ত্রাধীন অন্যান্য প্রতিষ্টানে বর্তমানে বৈঠক মিলিত হচ্ছেন। তার সব গুলোতে দেখভাল করে থাকেন উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান মঞ্জু। এ সব কিছুর আর্থিক অনুদান আসছে তাদের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্টান, শিক্ষা প্রতিষ্টান ও বিদেশে অবস্থানরত তাদের কর্মী সমর্থক ও নেতাদের কাছ থেকে। এছাড়াও সেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পালন করার নামে শিবিরের নেতারা প্রকাশ্যে কার্যক্রমও চালাচ্ছে।
আরো জানা গেছে, বিগত দিনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসাইন সাঈদির রায়কে কেন্দ্র পেকুয়ায় ব্যাপক তান্ডব চালায় জামায়াত-শিবির। পেকুয়া বাজারে ব্যবসা প্রতিষ্টানে ভাংচুরসহ নিহত হয় সাজ্জাদ নামের এক ছাত্র। সে সময় শিবিরের সভাপতি আজাহারসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতারা তান্ডবের নেতৃত্ব দিলেও আটক হয়েছিলেন শুধু মাত্র আমির আবুল কালাম আজাদ।
বিগত ১বছর আগে জামায়াতের সেক্রেটারীকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আটক করে পুলিশে দিয়েছিল। ঠিক একইভাবে গত ৩মাস আগে বর্তমান শিবিরের সভাপতিকেও প্যান ইসলামীক হাসপাতালে গোপন বৈঠক কালে ছাত্রলীগের কর্মীরা আটক করে পুলিশে দিয়েছিলেন। জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা অনেক মামলার আসামী হলেও সেই পর্যন্ত আটক। সেই তান্ডবকারী সাবেক সভাপতি আজাহার রাজাখালীর আরবশাহ বাজারে মোবাইল দোকানের ব্যবসা করলেও খবর রাখেন না প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এক অনুসন্ধানে জানা গেছে,বর্তমানে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান মঞ্জু ও বারবাকিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা বদিউল আলম জামায়াত থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। এছাড়াও টইটংয়ে হাসান শরীফ ও রাজাখালীতে হুমাইন কবির জামায়াতের প্রার্থী হিসাবে ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিএনপি দলীয় জোটের সাথে থাকলেও ইউপি নির্বাচনে তারা জোটের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করেন। যার কারণে সালাউদ্দিন আহমেদের সাথে তাদের একটি দুরত্ব তৈরি হয়। সামনের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তাদের পক্ষ থেকে এককভাবে চেয়ারম্যান প্রার্থী দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য: ১৯৯১-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত চকরিয়া-পেকুয়ায় জামায়াতের নেতৃত্বে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন এনামুল হক মঞ্জু। তাদের ব্যাপক কর্মী সমর্থক থাকার কারণে তারা এ নির্বাচনে জয়লাভ করে। পরে বিএনপির সালাউদ্দিন আহমেদের আগমনে তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা একটু কমলেও মিছিল ও মিটিংয়ে তাদের কার্যক্রম লক্ষ্য করা গেছে। পরে ২০০৮ সালে আ’লীগ ক্ষমতায় অতিষ্ট হলে পেকুয়া থেকে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম অনেকটা কমে গেলেও প্রকাশ্যে কিছু মিছিল মিটিং ও গোপনে সাংগঠনিক তৎপরতা চালিয়ে আসছিলেন।
Posted ৯:৫০ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০২ আগস্ট ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta