শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বিশ্বকাপ, বিদেশী পতাকা এবং আমাদের জাতীয় মর্যাদাবোধ

রবিবার, ০৮ জুলাই ২০১৮
386 ভিউ
বিশ্বকাপ, বিদেশী পতাকা এবং আমাদের জাতীয় মর্যাদাবোধ

প্রকৌশলী বদিউল আলম(৮ জুলাই) :: ভূগৌলিক আয়তনে বিশ্বের সর্ববৃহৎ এবং শিক্ষা, সংস্কৃতি, প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানে উন্নত দেশ রাশিয়া। বিশ্বকাপ ফুটবল ২০১৮ রাশিয়ার ১১টি শহরে ১৫ টি স্টেডিয়ামে অনুষ্টিত হচ্ছে। রাশিয়ার জমকালো আয়োজনে ফুটবল উদ্দীপনা ও উম্মাদনায় মাতোয়ারা সারা বিশ্ব। বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় অসমর্থ হলে ও রাশিয়ায় বিশ্বকাপ তরঙ্গে প্রতি মূহর্তেই দোল খাচ্ছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশ ও খাচ্ছে।

কেননা, আর্ন্তজাতিক এই ক্রীড়াযজ্ঞ সংস্কৃতিকে যারা অবজ্ঞা করবে, তারা নিজেরাই পিছিয়ে পড়বে। আর্ন্তজাতিক ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া দেশ বা জাতিগুলো গরীব, আতুর, কানা ,অন্ধ, অসহায় ও এতিমের মতো। প্রকৃত সত্য যে, বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা হচ্ছে- আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে স্ব-স্ব দেশের ক্রীড়া নৈপূন্যের বহি: প্রকাশের মঞ্চ। বাংলাদেশ ফিফার সদস্য দেশ। ফিফার বর্তমান সদস্যদেশ ২০৭ । কিন্তু বিশ্বকাপ খেলায় অংশ গ্রহনের সুযোগ পেয়েছে ৩২ টি দেশ মাত্র। ফিফার র‌্যানকিং বিবেচনায় আমাদের বাংলাদেশের অবস্থান মোটামোটি সন্মানজনক ।

দুনিয়াজুড়ে হাজারো রকম খেলা আছে। সার্বিক বিবেচনায় ফুটবল খেলা সেরা। পশ্চিমা বিশ্বে প্রবাদ আছে-’’ ফুটবল খেলার রাজা, বাকী সব খেলা তার প্রজা’’। এর পেছনে যথেষ্ট যৌক্তিক কারন সমূহ বিদ্যমান। ফুটবল খেলায় কঠিন আইনগত বাধ্যবাধকতা, নিয়ম, শৃঙ্খলা, শারিরীক কশরত, ধৈর্য্য, সাহসিকতা, একক বা দলগত নৈপূন্য, বিচক্ষনতা, বুদ্ধিমক্তা,বাকবিতন্ডা , লড়াকু মনোভব, সহমর্মিতা, বীরত্ব, দেশপ্রেম , পারস্পরিক সম্মান, আবেগ ও উচ্ছাস বিভিন্ন গুনে বলীয়ান। সর্বোপরি, ফুটবল খোলার কারনে বিভিন্নদেশের সাথে বহুমাত্রিক সর্ম্পক উন্নয়ন এবং বহুমুখী সংস্কৃতির মৈত্রীবন্ধন গড়ে উঠে।

বিশ্বজুড়ে ক্রীড়ামোদি মানুষ আর্ন্তজাতিক চতুর্বষী বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখার অধীর আগ্রহে বিভোর থাকে। সত্যিকার অর্থে বিশ্বকাপ ফুটবল সারাবিশ্বের মানুষদের মধুর ও মহামিলনের সুযোগ এনে দেয়। ফুটবল খেলা আবেগ উচ্ছাসের এবং তারুন্যের বাধভাঙ্গা জোয়ারের খেলা। তথায় কুপমন্ডুপতা ও উম্মাদনা কাম্য নয়। বিদেশী দলের সমর্থক হয়ে নিজেদের ভেতর সংঘাত ও খুনাখুনী আহাম্মকী।

প্রসঙ্গত ঐতিহ্যগত ভাবে আমরা যেন গোলামীত্ব ধারন করতে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছি। বিশ্বকাপ ফুটবল আরম্ভের সাথে সাথে গ্রামে, শহরে, বাড়ী, গাড়ীতে বিদেশী পতাকা এবং বিদেশী জার্সি গায়ে ধারন করতে পরম গর্ববোধ কবি। প্রিয় বা পছন্দের দলের জাতীয় পতাকা যেন বাংলাদেশের পতাকার চেয়ে মহা সম্মানের ও গৌরবের।

স্বপ্নচারী ক্রীড়ামোদি মানুষ কখনো হতাশ হতে পারেনা । ইতিমধ্যেই বিশ্বকাপ ফুটবলে অনেকগুলো বিম্ময়কর ঘটনা ঘটে গেল। প্রমান হয়ে গেছে, কেউ চির শ্রেষ্ট নয়। আমরা অবশ্যই আশাবাদী যে, আগামীতে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ও খেলবে। তার প্রমান বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের সম্প্রতি বিভিন্ন অঞ্চলিক ও আর্ন্তজাতিক খেলায় সফল্য অর্জন। এর ধারাবাহিকতা বজায় খুবই জরুরী।

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের চেয়ে জনসংখ্যা বা আয়তনে বা অর্থনৈতিক মানে পিছিয়ে থাকা পানামা, মরক্কো, সার্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া, সেনেগাল, কোষ্টারিকা ইত্যাদি দেশ যদি বিশ্বকাপে খেলায় যোগ্যতা অর্জন করতে পারে, তা হলে বাংলাদেশ কেন পারবেনা?

ফিরে যাই পতাকা প্রসঙ্গে। সেই আবহমান কাল থেকে প্রত্যেক পতাকা কোন জাতি, রাষ্ট্র বা ধর্মের পরিচায়ক। সুতরাং সেই পতাকার মান রক্ষার্থে সংগ্রাম, রক্তপাত, আতর্œবিসর্জন ও যুদ্ধ করতে ও কোন দেশ বা জাতি দ্বিধাবোধ করেনা। প্রত্যেক পতাকায় স্ব-স্ব দেশপ্রেম ও জাতীয় সম্মানবোধ নিহিত। তবে কোন দেশের খেলোয়াড বা দলের প্রতি যে কোন ব্যক্তি বিশেষের সমর্থন থাকাটা দোষের কিছু নয় ।

কখনো কি নিজেকে কেউ প্রশ্ন করেছেন যে,বাংলাদেশের দল বিজয় অর্জন করলে ও কোন বিদেশী বা প্রতিবেশী দেশের জনতা কি বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে স্বগর্বে মিছিল সমাবেশ করবে? আমার দীর্ঘ প্রবাস জীবনে কখনো এমন দেখেনি। কেননা- একটি পতাকা, একটি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গৌরবের মূর্ত প্রতীক।

সঙ্গতকারনে প্রশ্ন জাগে, ধরন কেউ ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া বা অন্য কোন দলের সমর্থনে স্বেচ্ছায় এবং যে সব দেশের পতাকাকে নিজগৃহে বা গাড়ীতে সমুন্নত রাখছেন, তারা কি আপনাকে বা বাংলাদেশের জন্য বিশেষ কোন সুবিধা প্রদান আগ্রহী? বিনিময়ে কিছু সুবিধা না পেলে কোন দেশ বা দলের প্রতি অযাচিত সমর্থন ও নাচানাচি পাগলামী নয় কি। সুতরাং যারা অহেতুক ভিন্নদেশী জাতীয় পতাকা উড়ায়, তাদের প্রতি রাষ্ট্রীয় শস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন, কেন না সঙ্গতবিহীন ভিনদেশী জাতীয় পতাকা বাংলাদেশে উড়ানো জাতীয় অপরাধ ও রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল।

প্রবল আতœবিশ্বাস ও আতœমর্যাদাবোধ যেমন একজন মানুষকে উন্নত স্তরে নিয়ে যায়, ঠিক তেমনি একটি জাতির আতœমর্যাদাবোধ, দেশপ্রেম, লৌহ কঠিন লড়াকু প্রচেষ্টা বিশ্ব দরবারে ওই জাতিকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্টিত করতে পারে। ভূলে গেলে চলবেনা যে, বাঙ্গালী জাতির মহান নেতা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম, মাইকেল মধুসুদন দক্ত, জগদীস চন্দ্র বসু, ড়: প্রকৌশলী: এফ আর খান, ড়: অমর্ত্য সেন ও ড: ইউনুচের প্রমুখদের মতো উজ্জ্বল মহামানব বিশ্বের অনেক দেশ ও জাতিতে জম্মায় নি। সুতরাং আমরা তাদের উক্তরসুরী হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য জাতীয় মর্যাদাবোধকে সমুন্নত রাখা নয় কী? বস্তুত: স্বাধীন ও স্বার্বভৌম বাংলাদেশ আবেগে আপ্লুত হয়ে বিদেশী পতাকার স্বেচ্ছাচারী ব্যবহার আমাদের দেশ ও জাতির আতœমর্যাদাবোধকে হেয় প্রতিপন্ন করার নামান্তর।

লেখক : বোর্ড মেম্বর, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ,জেলা আ:লীগ, কক্সবাজার ; সেক্রেটারী, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট, কক্সবাজার উপ-কেন্দ্র। মোবাইলঃ ০১৭১১-৪৫৩৬০৫

386 ভিউ

Posted ১০:২১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৮ জুলাই ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com