কক্সবাংলা ডটকম(৪ আগস্ট) :: ক্রমশ উষ্ণ হচ্ছে গোটা বিশ্ব। আর এই বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে গ্রিনল্যান্ড ও অ্যান্টার্কটিকায় ক্রমশ বরফ গলছে। আর ক্রমশ বরফ গলার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এই শতকের শেষ নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা যতটুকু বাড়বে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল, তা আরও বেড়ে দ্বিগুণ হতে পারে বলে নতুন এক গবেষণায় আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। আগামিদিন আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে ইতিমধ্যে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এতোদিন পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, ২১০০ সাল নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা সর্বোচ্চ এক মিটার বাড়তে পারে। বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে নতুন গবেষণা বলছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এর দ্বিগুণের বেশি হতে পারে। এর ভয়ঙ্কর পরিণামে লাখ লাখ মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়তে পারে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, ক্রমবর্ধমান উষ্ণতার কারণে ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বে জলের স্তর ৫২ থেকে ৯৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
অনেক বিশেষজ্ঞ এই অনুমানকে সঠিক বলে মনে করছেন। বিজ্ঞানীরাও মনে করছেন, সাগরপৃষ্ঠের উপর ব্যাপক তুষারস্রোতের প্রভাব নিয়ে পূর্বাভাষের জন্য যেসব মডেল ব্যবহার করা হয় সেগুলো বরফগলার বর্তমান অনিশ্চয়তাগুলোকে হিসাবে ধরে না।
গ্রিনল্যান্ড এবং পশ্চিম ও পূর্ব অ্যান্টার্কটিকায় কী ঘটছে, তা নিয়ে স্পষ্ট ধারণা পাওয়ার চেষ্টা করছেন গবেষকেরা। তাদের মত হল- বিশ্বে উষ্ণায়নের বর্তমান হার এমন থাকলে ২১০০ সাল নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৬২ থেকে ২৩৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। এতে গোটা বিশ্বে উষ্ণতা বাড়বে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত।
গবেষণা দলের অন্যতম সদস্য ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোনাথন বামবার জানিয়েছেন, ২১০০ সাল পর্যন্ত সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা ৭ থেকে ১৭৮ সেন্টিমিটারের মতো বাড়তে পারে বলে আগে ধারণা করা হত। কিন্তু সাগরের উষ্ণতা বাড়ায় হিমবাহ ও বরফের স্তরের বাইরের চূড়া গলে যেতে থাকায় এটা দুই মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। তবে নতুন গবেষণা বলছে, বিশ্বের তাপমাত্রা ২ সেলসিয়াস ডিগ্রি বাড়লে গ্রিনল্যান্ডের বরফের স্তর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার ক্ষেত্রে বড় প্রভাব ফেলবে। তাপমাত্রা এর চেয়ে বেশি বাড়ে, তাহলে অ্যান্টার্কটিকার বরফের স্তর আরও বেশি প্রভাব ফেলবে।
অধ্যাপক বামবার বলেন, এর ফলে পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা ও পূর্ব অ্যান্টার্কটিকায় বড় বদল আসবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। বিশ্বের ১৭ লাখ বর্গকিলোমিটার ভূমি হারিয়ে যেতে পারে, যা আকারে প্রায় লিবিয়ার সমান। বিশ্বের খাদ্য উৎপাদনকারী অনেক ভূমি হারিয়ে যেতে পারে। লন্ডন, নিউইয়র্ক ও সাংহাইয়ের মতো বড় বড় শহরগুলি ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে পড়বে। তবে এখনও বাঁচার উপায় রয়েছে।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন, যেভাবে গোটা বিশ্বে উষ্ণতা বাড়ছে তা যদি কোনও রোধ করা সম্ভব হয় তাহলেই একমাত্র পরিস্থিতির বদল ঘটতে পারে। না হলে আগামিদিন আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
Posted ১২:৩৭ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৫ আগস্ট ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta