কক্সবাংলা ডটকম(১১ জুন) :: গণিতের খুব মৌলিক শাখা জ্যামিতি। শুধু গাণিতিক যুক্তিকেই পথ দেখিয়েছিল জ্যামিতি। সাধারণ দৃষ্টিতে জ্যামিতি আকার আর আকৃতি নিয়েই কাজ করে। গবেষকরা বলছেন, প্রাচীন ব্যাবিলনীয় সভ্যতার সময় রাতের আকাশে বৃহস্পতি গ্রহকে চিহ্নিত করতে গিয়ে জ্যামিতির ব্যবহার করা হতো- এমন প্রমাণ আমরা এখন পাচ্ছি।
আগে ধারণা ছিল, জ্যামিতির ব্যবহার ছিল চতুর্দশ শতাব্দীতে। আর ইউরোপের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরাই এই গণিত আবিস্কার করেছিলেন। প্যারিস ও অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীরাই প্রথম জ্যামিতি ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখন থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগেও এই জ্যামিতির প্রচলন ছিল। খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০ সালের দিকে।
তথ্যটি জানিয়েছেন জার্মানির বার্লিনে হোমবোট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ম্যাথু ওজেনড্রাইভার। এই গবেষক বলছেন, গবেষণা শুরুর আগেই তারা এমনটি ধারণা করছিলেন। কারণ পদার্থর্ বিজ্ঞানসহ বিজ্ঞানের প্রায় সব বিভাগেই এ জ্যামিতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাচীন এই ব্যাবিলনীয় সভ্যতা ছিল আজকের ইরাক ও সিরিয়ায়। এ সভ্যতার লোকেরা জ্যোতির্বিজ্ঞানে অনেক অগ্রসর ছিল। তখনই তারা ব্যবহার করত মাটির তৈরি ট্যাবলেট। দেখতে রুটির মতো। রঙও রুটির মতো।
সেখানে লেখার জন্য ছিল তাদের নিজস্ব লিখন পদ্ধতি- ‘কিউনিফর্ম’। দেখলে মনে হবে, এর গায়ে শুধু আঁচড় কাটা হয়েছে।
প্রফেসর ওজেনড্রাইভার বলেন, রাতের আকাশে তারা যা কিছুই দেখতে পেতেন, সেসব লিখে রাখতেন। কয়েক শতাব্দী ধরে তারা এ কাজটা চালিয়ে গেছেন। সেখানে তারা একটা নিয়ম-নীতি দেখতে পেয়েছেন- কোন গ্রহটি কোনদিকে ঘুরছে, এ জন্য কত সময় লাগছে। এসব তারা লিখে রাখতেন। এটা তারা করতেন নম্বর ও অবস্থানের সাহায্যে।
অর্থাৎ তারা জ্যামিতিক রীতি-নীতিও অনুসরণ করতেন। যেমন তারা ট্র্যাপিজয়ডের মতো আকার-আকৃতি নিয়ে কথা বলতেন।
তিনি বলেন, জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কিত প্রতিযোগিতায় তারা এই জ্যামিতিকে ব্যবহার করতেন। প্রায় একই সময়ে গ্রিকরাও জ্যামিতি ব্যবহার করত। তবে ব্যাবিলনীয় সভ্যতার বিজ্ঞানীরা যে জ্যামিতি ব্যবহার করতেন, সেটা ছিল একেবারে ভিন্ন ধরনের, যা একেবারেই তাদের নিজস্ব। এটা ছিল বিমূর্ত, যা পরে গ্রিকরাও ব্যবহার করেছে।
তিনি বলেন, এসব ট্যাবলেটে তারা একটি ফিগার বা আকৃতি নিয়ে কথা বলত। এই ফিগারকে আমরা বলি ট্র্যাপিজয়েড। এটা দেখতে চতুর্ভুজের মতো। তবে ওপরের বাহুটা ছোট এবং নিচের দিকে নামানো।
এই ট্র্যাপিজয়েডের মাধ্যমে তারা বোঝাত জুপিটার গ্রহের গতি কীভাবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হচ্ছে। ট্র্যাপিজয়েডের এক পাশ বোঝাত সময়, অন্যপাশটা বোঝাত গতি। পৃথিবীর আর কোথাও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এ কৌশল অবলম্বন করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
Posted ১:০২ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১২ জুন ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta