
কক্সবাংলা ডটকম(২৭ অক্টোবর) :: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
মোট ৪২ হাজার ৭৬১টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। ভোটকক্ষ থাকবে দুই লাখ ৪৬ হাজার ৭৩৯টি।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ব্রিফিংয়ে ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করেন নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘৬৪টি জেলার ৩০০ সংসদীয় আসনে কেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ৭৬১।
পুরুষদের জন্য এক লাখ ১৫ হাজার ১৩৭ এবং নারীদের জন্য এক লাখ ২৯ হাজার ৬০২ ভোটকক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে।’
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে অস্থায়ী ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৪। অস্থায়ী ভোটকক্ষ থাকবে ১১ হাজার ৯৬৩টি। একটি কেন্দ্রে গড়ে তিন হাজার ভোটার ভোট দেবেন।
এটি ক্যাচমেন্ট এরিয়া হিসেবে ধরা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনে এই সংখ্যা সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হবে।
এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রকাশ করে ইসি। এতে মোট ৪২ হাজার ৬১৮টি ভোটকেন্দ্র এবং দুই লাখ ৪৪ হাজার ৪৬টি ভোটকক্ষ স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্র ছিল ৪২ হাজার ১৫০টি। ভোটকক্ষ ছিল দুই লাখ ৬১ হাজার ৪৭২টি।
এবার কেন্দ্রের সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও তুলনামূলকভাবে ভোটকক্ষের সংখ্যা কমেছে।
‘নির্বাচনী প্রস্তুতির অগ্রগতি ৯০-৯৫ ভাগ’
ব্রিফিংয়ে ইসি সচিব বলেন, নির্বাচন কমিশনের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির অগ্রগতি এখন ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ।
রাজনৈতিক দল ও পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন এই সপ্তাহে সম্পন্ন হলে প্রস্তুতি শতভাগে পৌঁছাবে। তিনি বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী দুটি বিষয়ে কিছুটা পিছিয়ে আছে কমিশন।
একটি হলো রাজনৈতিক দল নিবন্ধন, অন্যটি পর্যবেক্ষক সংস্থা নিবন্ধন। ২২টি রাজনৈতিক দলকে আমরা প্রাথমিকভাবে বিবেচনাযোগ্য মনে করেছি।
এদের বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে অতিরিক্ত কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এ সপ্তাহের মধ্যেই আমরা তা সম্পন্ন করতে পারব।’
পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। আশা করা হচ্ছে, এ সপ্তাহের মধ্যেই পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধনও শেষ হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রস্তুতির দিক থেকে আমরা সামান্য পিছিয়ে আছি। তবে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’
জোটবদ্ধ নির্বাচনে একক প্রতীক ব্যবহারের বিধান করে আরপিও সংশোধনে বিএনপির আপত্তির বিষয়ে আখতার আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট।
প্রতীক বরাদ্দের সময় নিবন্ধনযোগ্য রাজনৈতিক দলগুলোর তালিকা প্রকাশের সঙ্গে প্রতীকের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
আরপিওর সংশোধনীর বিষয়টি বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। কমিশন পরে সিদ্ধান্ত নেবে।
আরপিও সংশোধনের পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আরপিও সংশোধনের আগে ঐকমত্য কমিশন দীর্ঘ সময় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছে। এখন পর্যন্ত কোনো সাংঘর্ষিক বিষয় দেখা যায়নি।’
সচিব জানান, নির্বাচন কমিশন আরপিও প্রস্তাবনাগুলো পাঁচটি দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করেছে।
যেগুলো স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে, ভাষাগত বা সংখ্যাগতভাবে সামান্য সংশোধনযোগ্য, রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া সম্ভব নয়, বিদ্যমান আইনে পর্যাপ্তভাবে নির্ধারিত এবং যেগুলো কমিশনের নিজস্ব বিবেচনায় সংশোধনযোগ্য মনে হয়েছে।
এই পাঁচটি দিক বিবেচনা করেই সংশোধন প্রস্তাবনাটি উপদেষ্টা পরিষদে পাঠানো হয়েছে এবং তারা নীতিগত সম্মতি দিয়েছেন।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ইসি সচিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে এখন পর্যন্ত গণভোট সম্পর্কিত কোনো তথ্য আসেনি। তাই অনুমানভিত্তিক কোনো মন্তব্য করা উচিত নয়।’
নির্বাচন কমিশন ভবনের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি নিঃসন্দেহে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আটক এবং মামলা ও তদন্ত করছে।
যার কাজ, সে-ই করবে। কমিশন তার দায়িত্বেই মনোযোগ দিচ্ছে।
কয়েকটি দলের নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবির বিষয়ে আখতার আহমেদ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। রাজনৈতিক বিষয় কমিশনের এখতিয়ারের বাইরে।
আমরা আমাদের সাংবিধানিক দায়িত্বের জায়গা থেকে কাজ করছি। সবাই সহযোগিতা করলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।’

Posted ৮:০৬ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta