
কক্সবাংলা ডটকম(২৪ অক্টোবর) :: সম্প্রতি, রাশিয়া এবার ভারতের কাছে তাদের অত্যাধুনিক সু-৫৭ই যুদ্ধবিমান বিক্রির জন্য এক নতুন প্রস্তাব দিয়েছে এবং এই প্রস্তাবটিকে সরাসরি ফ্রান্সের রাফাল যুদ্ধবিমানের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রাশিয়া শুধু বিমান বিক্রি করছে না, বরং তারা এমন কিছু সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে যা ভারতকে সামরিক প্রযুক্তিতে আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।
রাশিয়ার এই প্রস্তাবের মূল আকর্ষণ হলো ‘টেকনোলজি ট্রান্সফার’ বা প্রযুক্তি হস্তান্তরের পরিমাণ বাড়ানো।
এর পাশাপাশি, তারা ভারতের নিজস্ব অস্ত্রশস্ত্র যেমন ‘অস্ত্র’ এবং ‘রুদ্রম’ ক্ষেপণাস্ত্র সু-৫৭ই-তে যুক্ত করারও অনুমতি দিচ্ছে।
সবচেয়ে বড় কথা, তারা বিমানের সোর্স কোড-এ সম্পূর্ণ প্রবেশাধিকার দেওয়ার কথা বলেছে।
এর মানে হলো, ভারত চাইলে নিজেরাই নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী বিমানের সফটওয়্যার বা অন্যান্য প্রযুক্তি পরিবর্তন করতে পারবে।
এটি ভারতের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এবং ‘আত্মনির্ভর ভারত’ উদ্যোগের সঙ্গে দারুণভাবে মিলে যায়।
বর্তমানে, ভারতীয় বিমান বাহিনী (IAF) তাদের পুরনো বিমানগুলোর জায়গা পূরণের জন্য নতুন যুদ্ধবিমান খুঁজছে।
এই অবস্থায় রাশিয়ার ইউনাইটেড এয়ারক্রাফট কর্পোরেশন এবং রোস্টেক নামের দুটি সংস্থা ভারতে আয়োজিত ‘এরো ইন্ডিয়া ২০২৫‘ প্রদর্শনীতে সু-৫৭ই-কে তুলে ধরেছে।
তারা বলছে, সু-৫৭ই হচ্ছে পঞ্চম প্রজন্মের একটি স্টেলথ যুদ্ধবিমান, যা রাফালের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী এবং আধুনিক।
সু-৫৭ই-এর রয়েছে নিজস্ব অভ্যন্তরীণ অস্ত্র বহনকারী চেম্বার, যা তাকে রাডারের চোখে ধরা পড়তে দেয় না।
এছাড়া, এর ইঞ্জিনে রয়েছে ‘সুপারক্রুজ‘ ক্ষমতা, যার ফলে এটি শব্দ-গতিকেও অতিক্রম করতে পারে।
অন্যদিকে, ফ্রান্সের রাফাল বিমানটি যদিও তার বহুমুখী কাজের ক্ষমতা এবং উন্নত রাডার সিস্টেমের জন্য পরিচিত, তবে রাশিয়ার প্রস্তাব রাফালের জন্য এক কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী তৈরি করেছে।
রাশিয়া চাইছে ভারত তাদের কাছ থেকে ৭ থেকে ৮টি স্কোয়াড্রন (মোট ১২৬ থেকে ১৪৪টি বিমান) কিনুক এবং এই বিমানগুলো ভারতেই তৈরি করা হোক।
তারা প্রস্তাব দিয়েছে, হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেডের (HAL) নাশিক কারখানায় এই বিমানগুলো যৌথভাবে উৎপাদন করা যেতে পারে।
তবে এই প্রস্তাবের কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। রাশিয়ার বর্তমান উৎপাদন ক্ষমতা সীমিত এবং কিছু ভারতীয় বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে, সু-৫৭ই-এর স্টেলথ প্রযুক্তি আমেরিকার এফ-৩৫-এর মতো উন্নত নয়।
এছাড়া, ভারতীয় বিমান বাহিনীর রাফাল বিমানের প্রতি একটি বিশেষ আগ্রহ রয়েছে কারণ তারা ইতোমধ্যেই এই বিমানটি ব্যবহার করছে এবং এর কার্যকারিতা সম্পর্কে তারা অবগত।
তবুও, রাশিয়ার এই প্রস্তাবটি ভারতের সামরিক সার্বভৌমত্বের জন্য একটি দারুণ সুযোগ হতে পারে।
যদি ভারত সু-৫৭ই বেছে নেয়, তাহলে তারা ভবিষ্যতে নিজেদের ইচ্ছেমতো যুদ্ধবিমানকে আপগ্রেড করতে পারবে এবং অন্য কোনো দেশের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হবে না।
যদিও এর সঙ্গে কিছু ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকিও জড়িত, তবে ভারতের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে।

Posted ১১:০২ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta