কক্সবাংলা ডটকম(৭ সেপ্টেম্বর) :: ঘটতে চলেছে প্রতীক্ষার অবসান। আগামী এক মাসের মধ্যেই চাবাহার বন্দরের নিয়ন্ত্রণে হাতে পেতে চলেছে ভারত।
ভূ-রাজনৈতিক কারণে ইরানের চাবাহার বন্দর ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ৷ স্থল বেষ্টিত আফগানিস্তানের বেশিরভাগ বর্হি-বাণিজ্য হয় পাকিস্তানি সমুদ্র বন্দর দিয়ে৷ পাকিস্তানের আপত্তির কারণে স্থলপথে আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতীয় পণ্য রপ্তানি বন্ধ৷ কাজেই বিকল্প রুট হিসেবে ইরানের চাবাহার সমুদ্র বন্দর ভারতের কাছে জরুরি৷ অর্থাৎ ইরানের মধ্য দিয়ে শুধু আফগানিস্তানের সঙ্গে নয়, তুর্কমেনিস্তানসহ সমগ্র মধ্য এশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে চায় ভারত৷
শুক্রবার এমনই জানিয়েছেন ইরানের সড়ক এবং গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী আব্বাস আহমেদ আখুয়োন্দি। তাঁর কথায়, “বন্দর নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। আশা করছি আগামী এক মাস সময়ের মধ্যে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে সম্পূর্ণ পরিচালনাভার তুলে দেওয়া সম্ভব হবে।”
ইরানের মাটিতে ভারতের ব্যায়ে নির্মিত বন্দর ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী আব্বাস আহমেদ আখুয়োন্দি। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে চাবাহার বন্দরের হস্তান্তর এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। মন্ত্রীর মতে, “বন্দর নির্মাণ হয়ে গিয়েছে। বন্দরের স্বাভাবিক কাজও শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই চাবাহ্র বন্দরের পরিচালনা এবং ব্যবস্থাপনার ভার ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে।”
২০১৯ সালের মধ্যে ইরানের ওই বন্দর চালু হয়ে যাবে বলে মনে করছিল ভারত। জুন মাসে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছিলেন যে ২০১৯র মধ্যে চাবাহার বন্দর চালু হয়ে যাবে৷
২০১৬ সালের মে মাসে ওমান উপসাগরের উপর চাবাহার বন্দর নিয়ে চুক্তিবদ্ধ হয় ভারত-ইরান-আফগানিস্তান৷ পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিম জলসীমার খুব কাছে অবস্থিত চাবাহার বন্দরের আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করে ভারত। বিনিময়ে মেলে চাবাহার বন্দর ব্যবহারের অধিকার৷ এই বন্দর থেকে ৭২ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানে চীন গদর বন্দর নির্মাণ করছে ফলে চাবাহার বন্দরটি ভারতের কাছে ও মধ্য এশিয়া ও আফগানিস্তান এর কাছে গুরত্বপূর্ণ।
পাকিস্তানকে বাইপাস করে এই বন্দরের সাহায্যেই ইরান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য করতে পারবে ভারত। এতদিন পাকিস্তানের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যের অনুমতি নয়াদিল্লিকে দেয়নি ইসলামাবাদ৷ চাবাহার বন্দর নির্মাণে সেই বাধা দূর হল৷
গত বছর অক্টোবর মাসে এই চাবাহার বন্দর থেকে আফগানিস্তানে গমের চালান পাঠায় ভারত৷ অতএব পুরোদমে এই বন্দর চালু হলে তিন দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ভাবে লাভবান হবে৷ পাশাপাশি তিন দেশের মধ্যে ঐক্য ও যোগাযোগ আরও বাড়বে৷
আমেরিকার সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক শীতল হওয়ায় ভারতের উপর চাপ বাড়িয়েছিল ওয়াশিংটন। সেই বিষয়েও এদিন মুখ খুলেছেন আব্বাস আহমেদ আখুয়োন্দি। তাঁর কথায়, “আমেরিকা বহিরাগত। ভারত-ইরান সম্পর্ক দীর্গজদিনের। এই সম্পর্ক আগামী দিনে আরও মজবুত হবে। কোনও বহিরাগত শক্তি এতে কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে না।”
Posted ১২:২৬ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta