রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ভ্রমণ করুন গুরুগম্ভীর শহর রাঙ্গামাটিতে

শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২০
950 ভিউ
ভ্রমণ করুন গুরুগম্ভীর শহর রাঙ্গামাটিতে

কক্সবাংলা ডটকম(১৭ জানুয়ারী) :: শতশত গাড়ির শব্দে ধ্যান ভাঙে অধিবাসী বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের মতো গুরুগম্ভীর শহর রাঙ্গামাটির। তবে পুরো মৌসুম জুড়েই যেন লেগে থাকে মহোৎসব

ষড়ঋতুর বাংলাদেশে সময়ের আবর্তনে কনকনে ঠাণ্ডা নিয়ে আগমন ঘটেছে শীতের। আর শীত মৌসুমই হলো পাহাড় আর অরণ্যে ঘেরা রাঙ্গামাটিতে বেড়ানোর সেরা সময়। প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে পাহাড়ের পাদদেশ। শীতের হিমেল পরশে এক অনন্য প্রাণের সঞ্চার হয় রাঙ্গামাটির পার্বত্য প্রকৃতিতে।

শীতেই শতশত গাড়ির শব্দে ধ্যান ভাঙে অধিবাসী বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের মতো গুরুগম্ভীর শহর রাঙ্গামাটির। তবে পুরো মৌসুম জুড়েই যেন লেগে থাকে মহোৎসব। ১০টি ভাষাভাষীর ১১টি জনগোষ্ঠীর নিজস্ব সাংস্কৃতিক, নৃ-তাত্ত্বিক কৃষ্টির সংস্পর্শে আসতে চাইলে শীত মৌসুমই আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।

দর্শনীয় জায়গা: রাঙ্গামাটি বেড়াতে গেলে হাতে অবশ্যই পর্যাপ্ত সময় নিয়ে যেতে হবে। অন্যথায় ভ্রমণের অতৃপ্তি নিয়েই ফিরতে হবে। শহরের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে প্রথমেই আসে ঝুলন্ত সেতুর নাম। নয়নাভিরাম এই সেতুটি দু’টি বিচ্ছিন্ন পাহাড়ের মধ্যে যেন গড়ে দিয়েছে হৃদ্যতার সম্পর্ক। সেতুটিতে দাঁড়িয়েই কাপ্তাই হ্রদের মনোরম দৃশ্য দেখা যাবে। আর এই হ্রদের সৌন্দর্যের কথা কে না জানে?

শহর থেকে সেতু পেরিয়ে অন্য পাড়ে গেলেই পাহাড়ি গ্রাম। চাইলেই ঢুঁ মেরে আসা যাবে সেসব গ্রাম থেকে।

রাঙ্গামাটি গিয়ে চাকমা রাজবাড়ি আর তৎসংলগ্ন রাজবন বিহার দেখতে কিন্তু মোটেই ভুলবেন না। তবে কাপ্তাই বাঁধের কারণে চাকমা রাজবাড়ি প্রায় সারা বছরই পানিতে তলিয়ে থাকে। কিন্তু রাজবন বিহারের মনোমুগ্ধকর নির্মাণশৈলী আপনাকে অবাক করবে। সেখানে দেখা মেলে ধ্যানমগ্ন বৌদ্ধ ভিক্ষুদের। গেরুয়া কাপড় পরা নির্জনতাপ্রিয় এসব ভিক্ষুর জীবনাচরণ অনুসরণযোগ্য।

রাঙ্গামাটি শহরের ঝুলন্ত সেতু

এছাড়া, শহর থেকে আধঘণ্টার দূরত্বে দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে- আরণ্যিক পিকনিক স্পট, বালুখালী কৃষি ফার্ম, পেদা তিংতিং ও টুকটুক ইকো ভিলেজ,বরগাঙ ও বেড়াইন্যা। এখানে নির্জনতাপ্রিয় পর্যটকদের জন্য রয়েছে প্রায় সকল ব্যবস্থা। এমনকি আদিবাসীদের ঘরের স্টাইলে মাচাং এর উপরে কটেজ।

এই রাঙ্গামাটিতেই রয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের সমাধি। শহর থেকে জলপথে ঘণ্টাখানেকের দূরত্বে অবস্থিত বুড়িঘাটে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন এই বীরশ্রেষ্ঠ। দেশপ্রেমিক আর ইতিহাস সচেতন পর্যটকরা এই বীরের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ পেতে পারেন বুড়িঘাটে গেলে।

পর্বতপ্রেমী পর্যটকদের জন্য রাঙ্গামাটির ফুরমোন পাহাড় এক অনন্য জায়গা। এর উচ্চতা ১৬৩৭ ফুট। পাহাড়-হ্রদের নিবিড় নৈকট্য সৃষ্টি করতে পারে ভিন্ন এক অনুভূতির। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, শীত মৌসুমে ঘুমিয়ে থাকে পাহাড়ি ঝর্ণাগুলো।

রাঙ্গামাটিতে দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা লিখে শেষ করা দুরূহ। শহর ও শহরের আশপাশেই রয়েছে- উপজাতীয় জাদুঘর, ডিসি বাংলো, পলওয়েল পর্যটন কেন্দ্র, বনবিথী, রাঙ্গামাটি বেতার কেন্দ্র, রাঙ্গামাটি টেলিভিশন উপকেন্দ্র, বেতবুনিয়া ভূ উপগ্রহ কেন্দ্র (অনুমতি সাপেক্ষে)।

সাজেক ভ্যালি

রোমাঞ্চপ্রিয় পর্যটকরা যেতে পারেন বাঘাইছড়ির সাজেক উপত্যকায়। সেখানকার দুর্গম পাহাড়ের শীর্ষে উঠে  মেঘের ছুঁতে পারেন মেঘ। হাতির দেখা পেতে হলে যেতে পারেন কাউখালী, লংগদু ও কাপ্তাইয়ে।

কাপ্তাইয়ে রয়েছে নেভি ক্যাম্প পিকনিক স্পট, প্যনোরামো জুম রেস্টুরেন্ট, গিরিনন্দিনী পিকনিক স্পট। এছাড়াও রয়েছে দেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও কর্ণফুলী পেপার মিলস। তবে এ দুটি জায়গায় ঘোরার জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতির প্রয়োজন আছে।

সবকিছুর পরে বাড়তি পাওনা হিসেবে পর্যটকদের জন্য রয়েছে কাপ্তাই হ্রদের ওপর নির্মিত শহরের আসামবস্তির নির্মিত “আসামবস্তি ব্রিজ” ও “আর্জেন্টিনা ব্রিজ”। এই দু’টি সেতুতে দাঁড়িয়ে পাহাড়ের আড়ালে অস্তগামী সূর্যের নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়।

কাপ্তাই লেক

এত সুন্দর জায়গা ঘুরে স্মৃতি হিসেবে সঙ্গে নিয়ে ফিরতে পারবেন পাহাড়ী নারীদের হাতে তৈরি কারুকাজসমৃদ্ধ জামা-কাপড়, শো-পিস ইত্যাদি। রাঙ্গামাটি শহরের তবলছড়ির কল্পতরু রিসোর্টে গিয়ে আপনি পাবেন হাতির দাঁতের বিভিন্ন জিনিসপত্র।

কীভাবে যাবেন: রাজধানী ঢাকার গাবতলী, সায়েদাবাদ কিংবা কলাবাগান থেকে আপনি সরাসরি রাঙ্গামাটির বাস পাবেন। বাসভেদে ভাড়ার বিভিন্নতা রয়েছে। এছাড়াও, দেশের অন্যান্য স্থান থেকে চট্টগ্রামে গিয়ে আন্তঃজেলা বাস পাহাড়িকায় ১২০টাকা অথবা লোকাল বাসে ৯০টাকা ভাড়া দিয়ে রাঙ্গামাটিতে যাওয়া যায়। এছাড়াও, যারা আরামদায়ক ভ্রমণের করতে জন্য রয়েছে বিলাসবহুল বিআরটিসি সার্ভিস। ভাড়া ১০০ থেকে ১২০টাকা।

কোথায় থাকবেন: রাঙ্গামাটিতে পর্যটকদের থাকার জন্য বেশ কিছু ভালো মানের হোটেল আছে। পর্যটন মোটেল, পলওয়েল রিসোর্ট,হোটেল সুফিয়া, নীডস হিল ভিউ,মোটেল জর্জ, হোটেল গ্রীন ক্যাসেল, টুকটুক ইকো ভিলেজ, হোটেল আনিকা অন্যতম। এগুলো মোটামুটি ভালো মানের হোটেল। ভাড়া ৫০০ থেকে ৫০০০টাকা পর্যন্ত। আবার কমদামী কিছু হোটেলও আছে। যেমন মধুমিতা, সৈকত, শাপলা, ডিগনিটি, সমতা,  উল্লেখযোগ্য। এগুলো ভাড়া সর্বোচ্চ ৫০০টাকা পর্যন্ত। এছাড়া পর্যটন কর্পোরেশনের রয়েছে নিজস্ব মোটেল। ভাড়া ১২০০ থেকে ৩,০০০ টাকা পর্যন্ত। রয়েছে ছোট ছোট কটেজ। কটেজগুলোর প্রতি রাতের ভাড়া ৩০০০-৫০০০ টাকা। সরকারি বিভিন্ন দফতরের রেস্ট হাউস, গেস্ট হাউস এবং বাংলোগুলো নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ এবং অনুমতি সাপেক্ষে ভাড়া দেওয়া হয়।

এই শীতে পার্বত্য সুন্দরী রাঙ্গামাটি হাতছানি দিয়ে ডাকছে আপনাকে। তাই দেরি না করে বেরিয়ে পড়ুন রাঙ্গামাটির পথে।

কাপ্তাই লেক

 

950 ভিউ

Posted ৬:৪২ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২০

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com