কক্সবাংলা ডটকম :: মহাকাশে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে চীনের রকেট। চিনের বৃহত্তম রকেটের ১০০ ফুট লম্বা মূল অভ্যন্তরীণ অংশ প্রচন্ড গতিতে ধেয়ে আসছে প্রথিবীর দিকে। এই রকেটের এই অংশের ওজন ২১ হাজার কেজি এবং আশঙ্কা করা হচ্ছে এটি পৃথিবীর যে কোনও জায়গায় আছড়ে পড়তে পারে। একই সঙ্গে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করেছেন যে, পৃথিবীর যে অংশে রকেটের ওই অংশ পতিত হবে, সেখানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। জানা গিয়েছে সেকেন্ডে ৪ মাইল গতি নিয়ে এটি পৃথিবীর দিকে ছুটে আসছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর কাছাকাছি আসার পরে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে এই রকেটের একটি বড় অংশ পুড়ে যাবে, তবে তখনও যথেষ্ট ধ্বংসাবশেষ থাকবে যা মারাত্মক হতে পারে।এই রকেটের এই অংশটি প্রায় ১০০ ফুট লম্বা এবং এটি প্রতি সেকেন্ডে ৪ মাইল গতিতে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে চলেছে।
চিনের বানানো এই বৃহত্তম রকেটটির নাম- ‘লং মার্চ ৫বি রকেট’। মহাকাশে খুব গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের জন্যই এই শক্তিশালী রকেট বানিয়েছে চিনা মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। পৃথিবীর কক্ষপথে নিজের দেশের একটি মহাকাশ স্টেশন বানাতে চলেছে চিন। প্রকল্পের নাম- ‘তিয়ানহে মহাকাশ স্টেশন’। তা উৎক্ষেপণের জন্য কিছু দিন ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছে চিন। ওই মহাকাশ স্টেশনের একটি ‘মডিউল’ অংশ পরীক্ষামূলক ভাবে পৃথিবীর কক্ষপথে পাঠাতে গত ২৮ এপ্রিল লং মার্চ ৫বি রকেট-এর উৎক্ষেপণ করেছিল চিনা মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
‘স্পেসনিউজ’ জানাচ্ছে, চিনা রকেটটি সফল ভাবে মহাকাশ স্টেশনের ‘মডিউল’টিকে কক্ষপথে স্থাপন করতে পারলেও নিজেকে আর গ্রাউন্ড স্টেশনের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। ঘুরে চলেছে পৃথিবীর কক্ষপথে। তবে তার ভিতরের ১০০ ফুট লম্বা অংশটি রকেট থেকে আলাদা হয়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে দিন কয়েকের মধ্যেই ঢুকে পড়তে চলেছে।
ঘুম হারাম হওয়া বিজ্ঞানীরা বলছেন, চীনাদের গাফিলতির কারণেই গোটা দুনিয়া টেনশনে পড়ে গেছে। কারণ রকেটে টুকরোটি আছড়ে পড়া আর একটি মাঝারি আকারের উড়োজাহাজ আছড়ে পড়া একই কথা। যার টুকরো ছড়িয়ে পড়বে আশপাশের ১০০ মাইল পর্যন্ত!
লং মার্চ ৫-বি নামের রকেটটি এখন পৃথিবীর কক্ষপথে ঘণ্টায় ২৭ হাজার ৬০০ কিলোমিটার বেগে ছুটছে। কখনও ১৭০ আবার কখনও ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত নিচে নেমে আসছে এটি। তবে দিনে দিনে এটি আরও নামবে। আপাতত এর গতিপথের মধ্যে পড়েছে নিউ ইয়র্ক, মাদ্রিদ, বেইজিং, দক্ষিণ চিলি, ওয়েলিংটন, নিউ জিল্যান্ডসহ আরও কিছু স্থান। এই চলার পথে সামান্য এদিক ওদিক হলেই এর ল্যান্ডিং স্পট বদলে যেতে পারে।
আপাতত নিয়ন্ত্রণহীন রকেটটির গতিবেগ ও গতিপথ বিশ্লেষণ করে অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট সেন্টার অ্যাট হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী জনাথন ম্যাকডোয়েল জানালেন, ১০ মে এটি পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে। আর পৃথিবীর যেহেতু বেশিরভাগই সমুদ্র, তাই মহাসাগরে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে এটা পরিসংখ্যান মাত্র। বস্তুত ৩০ মিটার লম্বা ও ২১ টন ওজনের রকেটের টুকরোটি পড়তে পারে যেকোনও স্থানে। সময় ঘনিয়ে এলে আরও নিখুঁতভাবে বলা যাবে এর আছড়ে পড়ার স্থান।
ম্যাকডোয়েল বললেন, ১০ টনের বেশি ওজনের কোনও কিছু অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় আমরা মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসতে দিতে পারি না। সেখানে লং মার্চ ৫-বি এর ছুটে আসা টুকরোটির ওজন ২১ টন!
চীন মহাকাশে নিজের আধিপত্য কায়েম করতে যে আচরণ করছে তা বিশ্বের সুরক্ষার জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে উঠছে। চীন ইতিমধ্যে বিশ্বকে করোনা ভাইরাস উপহার দিয়েছে ,যার কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে বিশ্বের অর্থব্যবস্থা। এখন চীনের রকেট বিশ্বের জন্য একটি নতুন সমস্যায় পরিণত হয়েছে।
Posted ৯:৪৮ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৪ মে ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta