কক্সবাংলা ডটকম(২ ডিসেম্বর) :: সোমবার মাদ্রিদে উদ্বোধন হওয়া জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলনে কার্বন মার্কেট, জলবায়ু অর্থায়ন ও ক্ষয়ক্ষতির মত সমালোচনামূলক বিষয় উত্থাপিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির ৬ নং ধারা অনুযায়ী, বাজার-ভিত্তিক জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে নির্ধারিত আইনি কাঠামো, ভারতের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হবে।
কারণ ভারত ও চিন, কিয়োটো প্রোটোকলের অন্তর্গত ‘ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজম’ (সিডিএম, ২০০৫ সালে কার্যকর হওয়া কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ হ্রাস করার জন্য উন্নত দেশগুলির মধ্যে প্রথম চুক্তি)-এর অধীন বাণিজ্য প্রকল্পের মাধ্যমে সবথেকে বেশি উপকৃত হয়েছিল। তবে ২০১২ সালে কার্বনের দামের তারতম্য ফলে সিডিএম প্রক্রিয়াটি ধসে পড়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা জানান, প্যারিস চুক্তির আওতায় একটি নতুন কার্বন মার্কেট প্রক্রিয়া দেশগুলিকে তাদের জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি- ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন) সরবরাহ করার ক্ষেত্রে অপরিহার্য হবে।
সচিব সি কে মিশ্র জানিয়েছেন যে তারা ৬ নং ধারা সম্পর্কিত বিষয়গুলির সমাধান এবং ২০২০ সালের পূর্ববর্তী প্রতিশ্রুতিগুলির গ্রহণযোগ্যতা নির্ণয়ের জন্য অপেক্ষা করছেন। তিনি আরও জানান, এই ধারাটি প্যারিস চুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যার জন্য গত বছর ক্যাটওয়াইসে সিওপি ২৪ বিধি চালু করা হয়নি।
জলবায়ু বিজ্ঞানী এবং জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত অন্তরাষ্ট্রীয় প্যানেল এর (আইপিসিসি) লেখক, অধ্যাপক এনএইচ রবীন্দ্রনাথ বলেছেন যে এই ধারা কার্যকর করার বিষয়ে এখনও আলোচনা চলছে।
নতুন ব্যবস্থার অধীনে বৃহৎ, উচ্চাকাঙ্ক্ষী কার্বন বাণিজ্য প্রকল্পের প্রত্যাশা করা হচ্ছে এবং এতে ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশ উপকৃত হবে, এমন আশা করা যায়। জাতীয় বাজার ভিত্তিক ব্যবস্থার পরিবেশগত অখণ্ডতা সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা যথেষ্ট উদ্বিগ্ন, তবে ক্ষয়ক্ষতি সমাধানের বিষয়ে তারা এখনও বিশেষ আশাবাদী হতে পারেননি।
রাষ্ট্রপুঞ্জের মতে, ২০০১ সাল থেকে সিডিএমের আওতাধীন ১১১ টি দেশে ৮,০০০ এরও বেশি প্রকল্প, ২ বিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড সমতুল্য হ্রাস এড়িয়ে চলেছে এবং জলবায়ু ও উন্নয়ন প্রকল্পে প্রায় ৩০৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের সূত্রপাত করে।
প্যারিস চুক্তি কার্যকর হওয়ার কয়েকদিন আগে ‘কনফারেন্স অফ পার্টিজ'(সিওপি) সভার নির্দেশ অনুযায়ী, দেশগুলিকে অবশ্যই প্যারিস চুক্তির বিধি সংক্রান্ত দলিলটিকে চূড়ান্ত করতে হবে, এবং বৈঠকে দুর্বল দেশগুলির তহবিলের অধিগমনের বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য উপস্থিত হওয়ার সাথে সাথে আবহাওয়ার গোলযোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের বিষয় সংক্রান্ত রাজনৈতিক আলোচনাও সম্পন্ন করতে হবে।
ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ রাষ্ট্রপুঞ্জের এমিশনস্ গ্যাপ রিপোর্ট অনুযায়ী, এই শতাব্দীর শেষে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে দেশগুলিতে বর্তমান প্রতিশ্রুতিগুলির সাথে, প্রাক-শিল্প স্তরের তাপমাত্রা ৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ থাকবে, সম্ভাবনা রয়েছে।
অ্যাকশন এইডের জলবায়ু পরিবর্তনের নেতৃত্ব, হরজিৎ সিং বলেছেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের মানবিক ও পরিবেশগত ব্যয়ভার ইতিমধ্যেই উন্নয়নশীল দেশগুলি বহন করছে।
মাদ্রিদে জলবায়ু সম্মেলনে সরকার জলবায়ু বিপর্যয়জনিত ক্ষয়ক্ষতি পুনরুদ্ধারের জন্য আর্থিক সহায়তার জন্য আলোচনা শুরু করবে।
তবে আমেরিকা, ইউরোপিয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান-সহ উন্নত দেশগুলি, যারা জলবায়ু সংকটের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী— তারাই ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক তাপমাত্রায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জন্য অর্থ সরবরাহের লক্ষ্যে কংক্রিটের অগ্রগতি রোধ করতে বহু বছর ব্যয় করেছে।”
Posted ৭:৪৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta