রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

মানি লন্ডারিং ঝুঁকিতে দেশের ২০ ব্যাংক

সোমবার, ২০ নভেম্বর ২০১৭
528 ভিউ
মানি লন্ডারিং ঝুঁকিতে দেশের ২০ ব্যাংক

কক্সবাংলা ডটকম(২০ নভেম্বর) :: মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি ২০টি বাণিজ্যিক ব্যাংক। ফলে এসব ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থপাচার এবং সন্ত্রাসে অর্থায়নের ঝুঁকি রয়েছে। এগুলোর মধ্যে তিনটি ব্যাংক আছে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে। চারটি ব্যাংক সন্তোষজনক অবস্থানে আছে।

তবে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী, বাংলাদেশের কোনো ব্যাংকই মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে এখনো শক্তিশালী অবস্থান অর্জন করতে পারেনি। তাই বাংলাদেশের অনেক ব্যাংকের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেনের সম্পর্ক ছিন্ন করছে কিছু বিদেশি ব্যাংক।

বিএফআইইউর রেটিং প্রতিবেদন অনুসারে, ৪০-এর নিচে নম্বর পেয়ে রেটিং ৫ বা অসন্তোষজনক অবস্থানে অর্থাৎ সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে আছে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।

প্রান্তিক রেটিংপ্রাপ্ত (৪) অর্থাৎ মানি লন্ডারিংয়ের ঝুঁকি রয়েছে, এমন ব্যাংকের সংখ্যা ১৭। এই মানের ব্যাংকগুলো হলো যথাক্রমে বাংলাদেশ কৃষি, সোনালী, ইউনিয়ন, রূপালী, বিডিবিএল, উরি, পূবালী, মধুমতি, এনআরবি কমার্শিয়াল, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, অগ্রণী, আইসিবি, সাউথবাংলা, এনআরবি, স্ট্যান্ডার্ড, সোস্যাল ইসলামী ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। রেটিং ৪ অর্থাৎ ঝুঁকিতে থাকা প্রতিষ্ঠানের একটি পূবালী ব্যাংক।

ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এমএ হালিম চৌধুরী বলেন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে আমাদের অবস্থান পুরোপুরি ঠিক আছে। আমাদের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং হওয়ার সামান্য কোনো অভিযোগও নেই। একই রেটিংয়ে থাকা নতুন প্রজন্মের মধুমতি ব্যাংকের এমডি সফিউল আজম বলেন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে নিয়মিত প্রতিবেদন তৈরি এবং কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয় আমাদের ব্যাংকে। অর্থপাচার প্রতিরোধে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার।

সূত্র জানায়, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে ব্যাংকগুলোর গৃহীত পদক্ষেপ এবং এ সংক্রান্ত কর্মকা- বিচার-বিশ্লেষণ করে রেটিং করে থাকে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে কাজ করা রাষ্ট্রায়ত্ত এ সংস্থাটি ৯টি মানদ-ের ওপর ভিত্তি করে মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে ব্যাংকগুলোর রেটিং করেছে।

এগুলো হচ্ছে পরিপালন কর্মকর্তা মূল্যায়ন (নম্বর-৬), গ্রাহক পরিচিতি কেওয়াইসি (২৬), লেনদেন পর্যবেক্ষণ (২৩), সন্দেহজনক ও নগদ লেনদেনের প্রতিবেদন (২২), প্রতিবেদন দাখিল (৩), স্বনির্ধারণী পদ্ধতি (৫), এএমএল/সিএফটি বিষয়ে সচেতনতা (৪), রেকর্ড সংরক্ষণ (৩) এবং নিরীক্ষা ও পরির্দশন (৮)।

১০০ নম্বরের মধ্যে ৪০-এর কম পেলে সেই ব্যাংকের রেটিংয়ের মান ধরা হয় ৫। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে এ রেটিংপ্রাপ্ত ব্যাংকগুলোর অবস্থা অসন্তোষজনক। এদের মানি লন্ডারিংয়ের ক্ষেত্রে তীব্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়। ৪০ থেকে ৫৫ নম্বর পেলে রেটিং মান ৪ বা প্রান্তিক রেটিং। এর অর্থ, এ ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের ঝুঁকি রয়েছে। ৫৫ থেকে ৭০ নম্বর পেলে রেটিং ৩ বা মোটামুটি ভালো।

এই রেটিংপ্রাপ্ত ব্যাংকগুলো মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে কিছুটা কার্যকর। আর ৭০ থেকে ৯০ পাওয়া ব্যাংকের রেটিং ধরা হয় ২ বা সন্তোষজনক। ৯০ থেকে ১০০ পেলে রেটিং মান ১। এর মানে প্রতিষ্ঠানটি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ৫ ও ৪ রেটিংয়ের ব্যাংকগুলোর মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে অনেক ঘাটতি রয়ে গেছে। এ নিয়ে ব্যাংকগুলো যেন অধিক সক্রিয় হয়, সে জন্য ক্যামেলসের সঙ্গে বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে দুর্বলতা মানে ওই ব্যাংকের মানেজমেন্টে বড় রকমের দুবর্লতা, যা একটি ব্যাংককে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে।

মোটামুটি ভালো বা ৩ রেটিং পেয়েছে ৩২টি ব্যাংক। পর্যায়ক্রমে এগুলো হচ্ছে উত্তরা, আইএফআইসি, প্রিমিয়ার, ফার্স্ট সিকিউরিটি, হাবীব, এনআরবি গ্লোবাল, প্রাইম, যমুনা, সাউথইস্ট, বেসিক, ঢাকা, ইউসিবি, আল আরাফাহ, মেঘনা, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, ফারমার্স, ডাচবাংলা, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট, ট্রাস্ট, শাহজালাল, ব্র্যাক, ন্যাশনাল, ব্যাংক এশিয়া, ইসলামী, মিডল্যান্ড, সিটি, এনসিসি, এক্সিম, মার্কেন্টাইল, ওয়ান, ইস্টার্ন ও আল ফালাহ ব্যাংক।

সন্তোষজনক বা ২ রেটিংয়ের চারটি ব্যাংকের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭৫ নম্বর পেয়েছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। সমমানের অন্য তিনটি ব্যাংক হচ্ছে এবি, এইচএসবিসি ও সিটি ব্যাংক এনএ।

ওই প্রতিবেদনে দেখা যায়, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে ১ রেটিং বা শক্তিশালী অবস্থান অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশের কোনো ব্যাংক।

রেটিং মান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সরকারি কোনো ব্যাংক মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। সবচেয়ে খারাপ মানের তিনটির মধ্যে দুটিই সরকারি ব্যাংক। অন্য চারটি ব্যাংক প্রান্তিক পর্যায়ে রয়েছে। একমাত্র বেসিক ব্যাংক ‘মোটামুটি ভালো’ রেটিং পেয়েছে।

নতুন প্রজন্মের কয়েকটি ব্যাংক মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এর মধ্যে ইউনিয়ন, মধুমতি, এনআরবি কমার্শিয়াল, সাউথ বাংলা ও এনআরবি এই পাঁচটি ব্যাংক প্রাান্তিক রেটিং পেয়েছে।

মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো। উন্নত দেশের কয়েকটি ব্যাংক বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গে করেসপন্ডিং ব্যাংকিং রিলেশন বন্ধ করে দিয়েছে।

এ ছাড়া নতুন ব্যাংকগুলো বিদেশের কোনো বাংকের সঙ্গেই সম্পর্ক স্থাপন করতে পারছে না। এতে ঋণপত্র (এলসি) খোলা, আমদানি-রপ্তানি ও রেমিট্যান্স আনার কাজ সরাসরি করতে পারছে না বেশ কয়েকটি ব্যাংক। তৃতীয় কোনো ব্যাংকের গ্যারান্টির মাধ্যমে তারা এসব করছে। এতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় সোনালী ব্যাংকের লন্ডন শাখাকে (ইউকে) বড় ধরনের জরিমানা করেছে দেশটির অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং কর্তৃপক্ষ। এর পর ব্যাংকটিতে থাকা নস্ট্রো অ্যাকাউন্ট বন্ধের মাধ্যমে এটির ক্লিয়ারিং কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষ। ফলে ওই শাখা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে ব্যাংকটি। অর্থপাচার প্রতিরোধে ব্যাংকগুলোর ভূমিকা শক্তিশালী না হওয়ায় বৈধ চ্যানেলে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে।

প্রতিনিয়ত পাচারের পরিমাণ বাড়ছে। পানামা পেপার্স, প্যারাডাইস পেপার্সে বাংলাদেশিদের নাম এসেছে। যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে, তারা আন্তর্জাতিক বৈধ বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত। বৈধ চ্যানেলের অদক্ষতার কারণেই বিদেশে অর্থপাচারের সুযোগ পাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (ফিএফআই) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৫ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৭ হাজার ৫৮৫ কোটি মার্কিন ডলার পাচার হয়েছে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ বা ৪৪ হাজার ৬১৫ কোটি ডলার আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়েছে। ঋণপত্র খুলে (এলসি) ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে এ অর্থ লেনদেন হয়েছে।

528 ভিউ

Posted ২:৪৩ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২০ নভেম্বর ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com