কক্সবাংলা ডটকম :: ইতিহাস তৈরির আগেই স্বপ্নভঙ্গ হলো রাশিয়ার। আশঙ্কাই সত্যি করে চন্দ্র পৃষ্ঠে অবতরণের একদিন আগেই ভেঙে পড়ল ল্যান্ডার লুনা ২৫। ফলে প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরু জয়ের স্বপ্ন শেষ রাশিয়ার।
উৎক্ষেপণের ১০ দিনের মাথায় ধ্বংস হল মস্কোর নভোযান। বেপরোয়া গতির জেরেই মহাশূন্যে দুর্ঘটনা?
সোমবার চাঁদে নামার কথা ছিল রাশিয়ার যানের। কিন্তু সেই স্বপ্নপূরণ হল না। সোমবার চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে রুশ মহাকাশযানের সফল অবতরণ হলে নতুন ইতিহাস তৈরি হত।
কারণ, ওই দক্ষিণ মেরুতে এর আগে কোনও দেশের মহাকাশযানের সফল অবতরণ হয়নি। ইতিহাসের সামনে এখন দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারত। বুধবার চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করার কথা ভারতীয় চন্দ্রযান-৩-এর।
লুনা ২৫-র ভেঙে পড়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই তুঙ্গে উঠেছে জল্পনা।
রবিবার চাঁদের বুকে ল্যান্ডারটির ভেঙে খবর সরকারিভাবে প্রকাশ করে রুশ মহাকাশ গবেষণা সংস্থা Roscosmos।
সেখানে কক্ষপথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেটি চন্দ্রপৃষ্ঠে ভেঙে পড়েছে বলে জানায় ওই সংস্থা।
৪৭ বছর পর ফের চন্দ্র অভিযানে নেমেছিল রাশিয়া। কিন্ত স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের।
উল্লেখ্য, চাঁদের নামার আগে শনিবার ল্যান্ডার লুনা ২৫-র শেষ ল্যাপের কক্ষপথে প্রবেশের কথা ছিল। যার পোশাকি নাম প্রি ল্যান্ডিং ওরবিট।
কিন্তু সেখানে ঢোকার মুখেই লুনা ২৫-এ যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। এর পরই সেটি নিয়ন্ত্রণ হারায় বলে অনুমান।
গতকাল এই নিয়ে সোশাল মিডিয়া সাইটে একটি পোস্ট করে Roscosmos। সেখানে লুনা ২৫ কক্ষপথে অস্বাভাবিক আচরণ করছে বলে উল্লেখ করা হয়।
শুধু তাই নয়, ল্যান্ডারটিকে প্রি ল্যান্ডিং ওরবিটে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি বলেও জানান মস্কোর জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
পাশাপাশি, ল্যান্ডারটির কোথায় যান্ত্রিক ত্রুটি হয়েছে, তা খোঁজার চেষ্টা করছিলেন তাঁরা।
কিন্তু কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতেই সেটি চাঁদের বুকে ভেঙে পড়েছে বলে জানিয়ে দিল রাশিয়া।
১৯৭৫ সালে – এবং সোভিয়েত মহাকাশচারী ইউরি গ্যাগারিন প্রথম মানুষ হয়েছিলেন ১৯৬১ সালে মহাকাশে ভ্রমণ।
১৯৭৬ সালে লিওনিড ব্রেজনেভ যখন ক্রেমলিন শাসন করেছিলেন তখন থেকে রাশিয়া চন্দ্র অভিযানের চেষ্টা করেনি।
রাশিয়ান মহাকাশ কর্মকর্তাদের মতে, লুনা-২৫ ২১শে আগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে একটি নরম অবতরণ চালানোর কথা ছিল।
রাশিয়া ভারতের বিরুদ্ধে রেস করছে, যার চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযান এই সপ্তাহে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে, এবং আরও বিস্তৃতভাবে চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যা উভয়েরই উন্নত চন্দ্র উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে।
উল্লেখ্য,গত ১১ অগাস্ট চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল রাশিয়ার চন্দ্রযান লুনা-২৫। তারপর মাত্র ১০ দিনেই চাঁদের একেবারে শেষ ল্যাপে পৌঁছে গিয়েছিল এই মহাকাশযান। এক দিন পরেই অর্থাৎ ২১ জুলাই তার চাঁদের মাটিতে নামার কথা ছিল। কিন্তু তার আগে লুনা ২৫-এর কক্ষপথ হ্রাসেই বিঘ্ন ঘটল।
ভারতের থেকে ২৯ দিন পরে যাত্রা শুরু করে চন্দ্রযান ৩-এর আগে চাঁদের মাটি ছোঁয়াই টার্গেট ছিল রাশিয়ার। মাত্র ১০ দিনের যাত্রা শেষে ১১ দিনের মাথায় ২১ অগাস্ট তাদের সফট ল্যান্ডিং করার কথা ছিল। এখন তাদের সেই মিশন ব্যর্থ হল। সোমবারই চাঁদে নামার আগেই ক্র্যাশ করে গেল লুনা-২৫।
রাশিয়ার লুনা-২৫ মিশনেরও লক্ষ্য ছিল ভারতের মতো অনাবিষ্কৃত চাঁদের দক্ষিণ মেরু। যেখানে এখনও কোনও দেশ পৌঁছতে পারেনি।
আমেরিকার মহাকাশ সংস্থা নাসাই সার্ভেয়ার মিশনে সবথেকে কাছে গিয়েছিল দক্ষিণ মেরুর। নাসা গিয়েছিল ৩০ ডিগ্রি দ্রাঘিমায়। আর রাশিয়ার টার্গেট ছিল ৬৮ ডিগ্রিতে নামার। এখন দেখার নির্ধারিত ৭০ ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশে নামতে পারে কি না ইসরোর চন্দ্রযান-৩।
Posted ৩:২৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২০ আগস্ট ২০২৩
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta