শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

রিপোর্টারের ডায়েরি : এত নৌকা তবুও কেন শংকা

সোমবার, ২৩ জুলাই ২০১৮
528 ভিউ
রিপোর্টারের ডায়েরি : এত নৌকা তবুও কেন শংকা

তোফায়েল আহমদ(২৩ জুলাই) :: আমি লিখব নাকি লিখব না-এরকম সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি গত ক’দিন ধরে। লেখা আর বলার স্বাধীনতা আমার মৌলিক অধিকার। এমন কোন জটিল বিষয়ও নয়। নয়, কাউকে আবার হেয় বা উচ্চ শিখরে তুলে দেয়ার মত ঘটনা। আবার বিষয়টি নিয়ে আমি একাই হতবাক হচ্ছি তাও নয়। তবুও সবার সাথে শেয়ার করার উদ্দেশ্যেই এ লেখা।

আলোচনার বিষয় ২৫ জুলাই বুধবারের পৌরসভা নির্বাচন।একজন রিক্সা চালক জানতে চাইলেন, এত ভোট কোথায় রাখবেন তিনি ? আকস্মিক এরকম প্রশ্ন বুঝতে পারিনি। পরক্ষণে মনে হল-একটু আগেই কক্সবাজার সদর মডেল থানায় কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার সাথেওতো এরকমই আলাপের কথা। বাপের গলায় নৌকা, মায়ের গলায় নৌকা, সন্তানের গলায় নৌকা, নাতি আর পুতি-সুতির গলায়ও নৌকা। গাছে-বাঁশে নৌকা আর আকাশে-বাতাসেও নৌকা।

থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা ডানে বামে ফিরে তাকিয়ে চুপিসারে বললেন-বিশ্বাস করবেন ক্ষমতাসীন দলেরই দুই নেতা তদবির করে এক বিএনপি কর্মী ও এক জামায়াত কর্মীকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছেন। বলা হয়েছে, আটক বিএনপি ও জামায়াত কর্মীদ্বয় নির্বাচনে কাজ করছেন আওয়ামী লীগ নেতাদ্বয়ের পক্ষে। এরকম তদবিরে পুলিশের কি করার আছে ?

পৌরসভার মেয়র প্রার্থী মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যানের একটি ওয়ার্ডের নির্বাচনী অফিসে অনুষ্টিত প্রচারকর্মীদের এক মতবিনিময় সভায় বসেছিলাম। ওয়ার্ডের নির্বাচনী প্রচারের দায়িত্ব প্রাপ্ত মূখ্য নেতার মুখে যা শুনা গেল তাতে আমি রিতিমত হতবাক হয়েছি। নেতা তার কর্মীদের নিকট জানতে চাইলেন-পথে পথে এভাবে সবার গলায় নৌকা প্রতীক কে ঝুলিয়ে দিয়েছে ? নৌকা প্রতীকের এই কার্ড সরবরাহ করার দায়িত্ব পালন করেছে কে ? যা এক প্রকার সন্দেহ জনক। এমনিতেই ভোটের সময় নানা গুজব রটানোর একটি ট্র্যাডিশন চালু রয়েছে এদেশে। তবে কর্মীদের জবাব শুনা গেল-বাস্তবে নৌকা প্রতীকের কার্ড ঝুলানোর বিষয়টি কেউ কাউকে দেয়ার চাইতেও স্বেচ্ছামূলক হচ্ছে সবচেয়ে বেশী।

মতবিনিময় সভায় আরেক নেতা আরো উদাহরণ টেনে বললেন-নৌকা প্রতীকের গণজোয়ার নিয়ে অহেতুক সন্দেহ সৃষ্টির কোন কারন থাকতে পারেনা। কেননা পৌরসভার গেল বারের নির্বাচনী পরিস্থিতির সাথে এবারের তুলনা চলেনা। গেলবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ছিলেন তিন জন। দলের নেতা কর্মীরা ছিলেন কয়েক ভাগে বিভক্ত। অপরদিকে বিএনপি-জামায়াত ঐক্যবদ্ধ ভাবে নির্বাচন করেছিল। এ কারনে জামায়াত প্রার্থী জিতেছিলেন। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি ঠিক উল্টো।

আওয়ামী লীগ বলে কথা। রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে কক্সবাজার ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর আওয়ামী নেতা-কর্মীরা দলে দলে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থীকে জিতাতে। এ পৌরসভায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম একেএম মোজাম্মেল হকের নির্বাচনী প্রচারকর্মী ছিলাম আমি। সেই সময়কালেও দলটিতে এরকম ঐক্য দেখিনি-যা এবারের নির্বাচনে দেখছি। এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় নৌকা প্রতীকের জোয়ারে বলতে গেলে প্রতিপক্ষও হারিয়ে গেছে। তবুও নির্বাচন মানেই বরাবরই সন্দেহ, আতংক, উদ্বেগ-উৎকন্ঠা এসব যেমনি ছিল তেমনি আছে এবং থাকবেও। অনেকেই বলছেন-কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে এবার এতই নৌকা-তবুও কেন এত শংকা ?

দীর্ঘকাল পর একটি রাজনৈতিক দলের ব্যানারে দৃশ্যমান স্মরণকালের সবচেয়ে গাঢ় ঐক্যের বিষয়টি নিয়েও এলাকাবাসীকে এক প্রকার হতবাক করতে বাধ্য করেছে। কেননা সাধারণত এরকম দেখা যায়না। এজন্য অনেকেই আস্থা আনতেও হিমসিম খাচ্ছে। তাদের সন্দেহ-হয়তোবা গলায় কার্ড ঝুলালেও বাস্তবে আস্থায় আনা ঝুঁকিপূর্ণও বটে। তবে এরকম দৃশ্যমান দলীয় ঐক্যের সাথে আরো বেশী আলোচিত হচ্ছে দলটির গ্রহণযোগ্য মেয়র প্রার্থী মুজিবুর রহমানকে নিয়ে। তাঁর অমায়িক ব্যবহার আর দলমত নির্বিশেষে সবার সাথে মেলামেশাই এখন বড় পুঁজি হয়ে উঠেছে।

গত নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হয়েও মামলা-মোকদ্দমায় জর্জরিত কক্সবাজার পৌরসভায় মেয়রের চেয়ারটি বলতে গেলে ‘ভারপ্রাপ্ত’ নিয়ে পৌরবাসীর কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। রাস্তা-ঘাট আর অলিগলি নিয়ে ঠিকাদারি ব্যবসা ছাড়া আর কিছুই দৃশ্যমান হয়নি। মূলত পৌরবাসীর কাছে পৌরসভাটি আশীর্বাদের বদলে এক প্রকার অভিশাপ হিসাবেই পরিচিতি পেয়ে বসেছে। মানুষের মুখে মুখে রব উঠেছে-আর ‘ভারপ্রাপ্ত’ নয়, এভাবে ঠিকাদারিও আর নয়। আর নয় দলবাজি-আর নয় ভোগান্তি । এবার উন্নয়ন প্রয়োজন। প্রয়োজন পরিষ্কার নালা-নর্দ্দমার।

সেই রিক্সা চালকের কথাই মনে হল। তিনিইতো বলেছেন, স্রোতের উল্টো উন্নয়ন পাওয়া যাবে না। এই উল্টো পথে গেলে আবারো চেয়ারটি হবে ‘ভারপ্রাপ্ত।’ তাই ‘ইছার যুগে ইছা-মুছার যুগে মুছা’ নীতিই নিরাপদ পন্থা। তবুও রিক্সা চালকের সাথে আমারও জানতে ইচ্ছা করছে-নাতি-পুতির গলায়ও যেভাবে একই প্রতীকের কার্ড ঝুলছে তারা সবাই যদি সত্যি সত্যি একই প্রতীকে সীল দিয়ে থাকেন তাহলে এত ভোট রাখবে কোথায় ? সেই গণজোয়ারের ফলাফল জানা যাবে রাত পোহালেই।

লেখক : তোফায়েল আহমদ, সিনিয়র রিপোর্টার, দৈনিক কালের কন্ঠ ও আমেরিকান সংবাদ সংস্থা এপি’র ষ্ট্রিঙ্গার।

528 ভিউ

Posted ১১:৫০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৩ জুলাই ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com