কক্সবাংলা ডটকম(১৩ ফেব্রুয়ারি) :: বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা প্রদানে দাতা সংস্থাগুলো ধীরে ধীরে আগ্রহ হারাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলে।
ইতালির রোমে স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধায় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সাথে তার হোটেলে এক বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিস্তারিত তথ্য জানান পররাষ্ট্র সচিব এম শহিদুল হক।
তিনি জানান, মিয়ানমার থেকে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গাদের খাদ্য সরবরাহে প্রধান ভূমিকা পালন করছে ডব্লিউএফপি।
উল্লেখ্য গত ছয় মাসে রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় ৮ কোটি টাকার খাবার বিতরণ করেছে সংস্থাটি।
ডব্লিউএফপির মতে, রোহিঙ্গাদের এক মাসের খাবারের জন্য প্রায় ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন।
‘বিসলে প্রধানমন্ত্রীকে জানান যে, রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তার জন্য দাতা সংস্থাগুলোর আগ্রহ ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। জাতিসংঘের অধীনস্থ দাতাসংস্থাগুলোর আগ্রহ বজায় রাখার চেষ্টা করছে ডব্লিউএফপি। তবে এটি এখন তাদের জন্য খুব কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে’, জানান শহিদুল হক।
এছাড়া আসন্ন বর্ষা মৌসুমে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভূমিধসের সম্ভাবনা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ডব্লিউএফপির নির্বাহী পরিচালক। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রয়োজনে কিছু রোহিঙ্গাদের সাময়িকভাবে নোয়াখালী ভাসানচর দ্বীপে স্থানান্তর করা হবে।
‘ডেভিড বিসলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মহলে ডব্লিউএফপির বিভিন্ন প্রচারাভিযান সম্পর্কে শেখ হাসিনাকে অবহিত করেন। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টকেও এই বিষয়ে দুইবার বলেছেন’, যোগ করেন শহিদুল হক।
বিসলে বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত নৃশংসতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পদক্ষেপ নেবে বলে মনে করে ডব্লিউএফপি।
বৈঠকে শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে তার পাঁচ দফা প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেন।
শহিদুল আরো জানান, শেখ হাসিনার বিসলেকে মিয়ানমার-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক চুক্তির কথা বলেছেন। চুক্তির সফল বাস্তবায়নের জন্য মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী।
বর্তমানে বাংলাদেশে ডব্লিউএফপি ২০১৭-২০২০ সময়কালের জন্য প্রায় ৩৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ১৩ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
ডব্লিউএফপির নির্বাহী পরিচালক কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে শেখ হাসিনার বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরে বলেন ‘খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে ডব্লিউএফপি কাজ অব্যাহত রাখবে’।
এরপর রোমে বাংলাদেশের অনারারি কনসালদের সাথে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী।
ইতালিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের স্বার্থরক্ষায় আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য শেখ হাসিনা তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
Posted ৩:৩৭ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta