
কক্সবাংলা ডটকম(৩০ অক্টোবর) :: রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি চীনের সক্ষমতার বাইরে, এটি চীনের একার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
২৯ অক্টোবর দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘বাংলাদেশ–চীন সম্পর্ক : এগিয়ে যাওয়ার পথ’ নিয়ে এক আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
আলোচনা সভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান নিয়ে জানতে চাইলে ইয়াও ওয়েন বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান খুঁজতে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
চীনকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়ই অনুরোধ করেছে। রোহিঙ্গার পাইলট প্রত্যাবাসনেও আমরা চেষ্টা করেছি। তবে বিষয়টি একা চীনের পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়, এটি চীনের সক্ষমতার বাইরে।
এটি অত্যন্ত জটিল সংকট। এর সঙ্গে অনেক স্টেকহোল্ডাররা জড়িত। আমরা যখন ২০২৩ সালে প্রত্যাবাসনের চেষ্টা করেছি, অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা আমাদের প্রচেষ্টাকে প্রভাবিত করেছে।
কিছু দেশ ও সংস্থা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হোক, এটা চায় না। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সব স্টেকহোল্ডারের ভূমিকা রাখতে হবে। চীন তার ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ-চীনের সম্পর্ক কী হবে তা তৃতীয় কোনো দেশ ঠিক করে দেবে না। কোনো কোনো পরাশক্তিধর দেশ নিজেদের দায়িত্ব ভুলে গিয়ে নিজের স্বার্থ নিয়েই ব্যস্ত।
তিস্তা অববাহিকা নিয়ে একটি মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ চীনের অর্থায়ন চেয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে।
অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে এসে তার কোনো অগ্রগতির খবর আছে কি না, মতবিনিময় সভায় তা জানতে চাওয়া হলে ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশ ও উত্তরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষের কাছে এ প্রকল্পের গুরুত্ব সম্পর্কে তারা জানেন।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বিগত সরকারের কাছে তিস্তা প্রকল্পে একটি সমন্বিত নদী ব্যবস্থাপনার প্রস্তাব করেছিলেন তারা। এর জন্য দুটি ভাগে প্রকল্পটিকে ভাগ করা হয়েছিল।
প্রথমটি বন্যা নিয়ন্ত্রণে নদীর ওপর বাঁধ তৈরি এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে একটি শহরতলির মতো করে গড়ে তোলা, যেখানে অর্থনৈতিক কার্যক্রম থাকবে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের আগ পর্যন্ত অর্থাৎ আড়াই বছর তিস্তা প্রকল্প সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাননি বলে জানান চীনের রাষ্ট্রদূত।
তবে এরপর সাড়া পান জানিয়ে তিনি বলেন, গত সেপ্টেম্বরে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে প্রস্তাব পান তারা। এরপর চীনা বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে কাজ শুরু করেন।
ইয়াও ওয়েন জানান, এ প্রকল্পে প্রায় ১০০ কোটি ডলার ব্যয় হতে পারে। প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে সাত-আট বছর লাগবে তা সম্পূর্ণ হতে।
বাংলাদেশে চীনের অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা চট্টগ্রামে চীনের অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে ‘কঠিন পরিশ্রম’ করছেন। অবকাঠামো নির্মাণের আগে যে নথিপত্র সইয়ের বিষয় রয়েছে, তা আগামী নভেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে তিনি আশাবাদী।
ইয়াও ওয়েন বলেন, এখন পর্যন্ত ৩০টি চীনের প্রতিষ্ঠান ১০০ কোটি ডলারের ওপর বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে। আশা করছি, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হবে।

Posted ১:১২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta