বুধবার ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বুধবার ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে আসবে প্রাণের স্পন্দন

শুক্রবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
394 ভিউ
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে আসবে প্রাণের স্পন্দন

কক্সবাংলা ডটকম(৩ সেপ্টেম্বর) :: দীর্ঘ ৭৭ সপ্তাহ পর অবশেষে খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বন্ধ কপাট। আবারও শিশু-কিশোরদের কল-কাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠবে দেশের প্রতিটি বিদ্যাপীঠের আঙ্গিনা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো শিক্ষার্থীদের পদচারণায় হয়ে উঠবে মুখর। পাঠদান, পরীক্ষা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মিথস্ক্রিয়া বইবে আনন্দের বন্যা। সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে আসবে প্রাণের স্পন্দন।

আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পরদিন ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়া হবে সব মেডিকেল কলেজ। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও কাছাকাছি সময়ে খুলে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বড় অংশের টিকা সম্পন্ন হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজ নিজ সিন্ডিকেটের সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দিন-তারিখ নির্ধারণ করতে পারবে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। রোববার এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এতে সভাপতিত্ব করবেন। সেখানেই বিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।

এর আগে গত ৯ আগস্ট সমকালের প্রথম পাতায় ‘সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল-কলেজ খুলতে চায় সরকার’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।

শুক্রবার চাঁদপুরে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলবে সারাদেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এছাড়া নভেম্বরে এসএসসি ও ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে এইচএসসি পরীক্ষা।চাঁদপুর সরকারি মহামায়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধনে তিনি এ কথা জানান।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গত বছরের ১৭মার্চ থেকে দেশের সবধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি দফায় দফায় বাড়িয়ে তা সর্বশেষ ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। এরপর আর তা বাড়ানোর কোনও পরিকল্পনা নেই সরকারের।

বৃহস্পতিবার রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশো অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সংক্রমণের হার কমতে শুরু করেছে। আগামী দিনে আরও কমবে। ফলে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যে ছুটি রয়েছে তা আর বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে আমরা চাইলে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দিতে পারবো। যদি এর মধ্যে আর বড় কোনও সমস্যা না হয়।

বড় পাবলিক পরীক্ষাগুলো নেওয়া সম্ভব হবে কিনা জানতে চাইলে এসময় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নভেম্বরের মাঝে এসএসসি এবং ডিসেম্বরের শুরুতে এইচএসসির ঘোষণা আগেই দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, সে অনুযায়ী বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার যত দ্রুত সম্ভব স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনের দ্বিতীয় সেশনে বৃহস্পতিবার সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপনের মৃত্যুতে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।

মুলত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার তোড়জোর শুরু হয়।

জুন মাসে খুলছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

প্রস্তুতি কতদূর: এদিকে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পূর্ণ প্রস্তুতি আছে বলে সমকালকে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক। শুক্রবার তিনি সমকালকে বলেন, গত দুই মাস ধরেই আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রেখেছি। প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশাসনিক কার্যক্রম বহু আগে থেকেই চলমান। এখন একাডেমিক কার্যক্রম শুরম্ন করতে আমরা প্রস্তুত।

একই কথা জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম। তিনি সমকালকে বলেন, পাঠদান শুরু জন্য আমাদের সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুরোপুরি প্রস্তুত। প্রতি দুইদিন অন্তর অন্তর বিদ্যালয় পরিষ্কার করে রাখা হচ্ছে। প্রধান শিক্ষকসহ সব শিক্ষক প্রতিদিন স্কুলে আসছেন। মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা প্রতিদিন প্রতিনিয়ত বিদ্যালয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম তদারকি করছেন। আমরাও প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে অনলাইন সভা করছি।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেবার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন প্রতিষ্ঠান প্রধানরাও। রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষা ড. শাহান আরা বেগম সমকালকে বলেন, মতিঝিলের প্রধান ক্যাম্পাসসহ তাদের মুগদা ও বনশ্রীর দুটি শাখা ক্যম্পাসও পুরোপুরি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখা হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হাত ধোওয়ার জন্য বিদ্যালয়ের প্রবেশমুখে সাবান, পানি ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

রাজধানীর মনিপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, আমাদের চারটি ক্যাম্পাসই ঝকঝকা-তকতকা করা আছে। বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হলে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে পারব।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে ইতিবাচক মত পরামর্শক কমিটির: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে ইতিবাচক মত দিয়েছে কভিড -১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুলতাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শুক্রবার তিনি বলেন, কারিগরি কমিটি মতামত দিয়েছে। আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পক্ষে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে কমিটির সদস্যরা মতামত দিয়েছেন।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকা দ্রুত শেষ করতে জোর: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে এখনো আট-নয়দিন বাকি। এ সময়ের মধ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকা দ্রম্নত শেষ করতে জোর দিচ্ছে সরকার। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি স্কুলগামী যাদের বয়স ১৮ এর নিচে, তাদেরকেও ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে ১৬ বছর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কত শতাংশ শিক্ষার্থী টিকা গ্রহণ করেছেন তার তথ্য চেয়ে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে চিঠি দিয়েছে ইউজিসি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সংক্রান্ত বিগত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে গত বুধবার নির্দেশনা পাঠিয়েছে ইউজিসি। ওই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় তথ্য ৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পাঠাতে হবে। এতে যেসব তথ্য চাওয়া হয় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে কতজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী টিকা নিতে নাম নিবন্ধন করেছেন; কতজন প্রথম ডোজ নিয়েছেন কিন্তু দ্বিতীয় ডোজের তারিখ পাননি; কতজন টিকা নেননি, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই। পাশাপাশি এতে বিদেশি শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তার নাম-পদবিসহ জানাতে বলা হয়।

শিক্ষার ক্ষতি ব্যাপক: টানা ১৯ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষাখাতে ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক বলেই মনে করছেন শিক্ষাবিদরা। শিক্ষার্থীদের শিখন ক্ষতি অপূরণীয়। বিদ্যালয় খোলার পর ঝরে পড়ার হার বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। শিশু শ্রম ও বাল্য বিবাহ বেড়েছে। শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আর্থিক ক্ষতিও বিপুল। বেসরকারি বহু শিক্ষক পরিবার পথে বসে গেছে। জীবিকার প্রয়োজনে অনেকে পেশা পরিবর্তন করেছেন। সারাদেশে অন্তত ৪০ হাজার কিন্ডারগার্টেন স্কুল চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেড় বছরের সেজশনজট পাকিয়ে গেছে।

দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম এতো লম্বা সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। জাতিসংঘ শিশু তহবিল বা ইউনিসেফের গত ২৪ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কভিড-১৯ এর কারণে স্কুল বন্ধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম দেশ। দীর্ঘ বন্ধের ফলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত চার কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

394 ভিউ

Posted ১:২০ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com