রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

সঞ্চয়পত্রে নতুন বিনিয়োগের চেয়ে ভাঙানোর প্রবণতাই বেশি

মঙ্গলবার, ০১ আগস্ট ২০২৩
43 ভিউ
সঞ্চয়পত্রে নতুন বিনিয়োগের চেয়ে ভাঙানোর প্রবণতাই বেশি

কক্সবাংলা ডটকম :: অর্থ সঞ্চয়ের চেয়ে বেড়েছে ভেঙে ফেলার প্রবণতা। আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হওয়ায় সঞ্চয়ের সুযোগ সীমিত হয়েছে। আবার অতি কড়াকড়ির কারণে সঞ্চয়পত্রবিমুখ হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অন্য যেকোনো উৎস থেকে অর্থ বিনিয়োগে বেশি মুনাফা মেলে, তাই সঞ্চয়পত্রেই এত আগ্রহ। কিন্তু কেনার ক্ষেত্রে নানা ধরনের কড়াকড়ি আরোপের ফলেও এই খাতে বিনিয়োগ অস্বাভাবিক হারে কমছে। বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থ বছর জুড়েই সঞ্চয় পত্রে নতুন বিনিয়োগের চেয়ে ভাঙানোর প্রবণতা বেশি দেখা গেছে।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৮০ হাজার ৮৫৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা। একই সময়ে মূল পরিশোধ বা ভাঙানোর পরিমাণ ৮৪ হাজার ১৫৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ সঞ্চয়পত্র কেনার চেয়ে ভাঙানোর পরিমাণ ৩ হাজার ২৯৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা বেশি, যা সঞ্চয়পত্রের নিট বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর একই সময়ে সঞ্চয়পত্রে সরকারকে সুদবাবদ ৪৪ হাজার ৭৯৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে।

প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিদায়ী অর্থবছরের শুরু থেকেই সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে, যা অর্থবছরের শেষ মাসেও অব্যাহত ছিল। এই অবস্থায় চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণের লক্ষ্যমাত্রা আরও কমিয়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা বিদায়ী অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা বা ৪৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে নিট ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩৫ হাজার কোটি টাকা।

জানা গেছে, ব্যাংকগুলোর আমানতের সুদের হার কম এবং পুঁজিবাজারে দীর্ঘ মন্দার কারণে বেশ কয়েক বছর ধরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি অনেক বেশি পরিমাণে বাড়ছিল। এতে সরকারের সুদ পরিশোধের ব্যয়ও অনেক বেশি বেড়ে যায়। সঞ্চয়পত্রের উচ্চ মুনাফা বা সুদ পরিশোধ করতে গিয়ে সরকারের নগদ ও ঋণ ব্যবস্থাপনার ওপর অনেক বেশি চাপ পড়ছে। ফলে সঞ্চয়পত্র বিক্রির চাপ কমাতে ২০১৯ সালের জুলাই থেকে বিভিন্ন কড়াকড়ি আরোপ করে আসছে সরকার।

সরকারের বিভিন্ন শর্তের মধ্যে রয়েছে সঞ্চয়পত্রে ৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে আয়কর রিটার্ন সনদ বাধ্যতামূলক করা, ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদহার ২ শতাংশ কমানো, সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগসীমা কমিয়ে আনা, মুনাফার ওপর উৎস করের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা। এ ছাড়া দুর্নীতি কিংবা কালো টাকায় সঞ্চয়পত্র কেনা বন্ধে ক্রেতার তথ্যের একটি ডেটাবেস তৈরি করা হয়েছে। এসব কড়াকড়ির প্রভাবে বর্তমানে সঞ্চয়পত্র বিক্রি তলানিতে নেমে গেছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, কয়েক দফায় সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমানোর পরও তা ব্যাংকের তুলনায় অনেক বেশি। ফলে ব্যাংক আমানতের সঙ্গে সঞ্চয়পত্রের সুদহারের ব্যবধান আরও কমানোর পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটির কাছ থেকে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণের শর্ত হিসেবে এই পরামর্শ দিয়েছে তারা।

এদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে আগামী দিনে সরকারকে ব্যাংকব্যবস্থার বাইরে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেননা ব্যাংকিং ব্যবস্থা, বিশেষত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ বেড়ে যাওয়ায় বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বেড়ে যাচ্ছে, যা মূল্যস্ফীতিকে আরও বেশি উসকে দিচ্ছে। গত জুলাই-মে পর্যন্ত সরকারের অভ্যন্তরীণ উৎস হিসেবে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও জাতীয় সঞ্চয়পত্র থেকে নেয়া ঋণের তথ্য বিশ্লেষণ-মূল্যায়ন করে ‘সরকারের অভ্যন্তরীণ ঋণ নিয়ে’ এক প্রতিবেদনে এমন পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে দুটি উপায়ে অর্থাৎ ব্যাংকিং ব্যবস্থা এবং ব্যাংকের বাইরে সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য খাত থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। তবে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণের প্রবৃদ্ধি অনেক বেশি হলেও সঞ্চয়পত্র এবং অন্যান্য খাত থেকে এই প্রবৃদ্ধি অনেক কম। এই অবস্থায় অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির চাপ সহনীয় রাখতে সরকারকে ব্যাংকের বাইরে নন-ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকার ঋণ নিলে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ডলারসংকট মেটাতে গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমানে বাজারে অনেক বেশি ডলার ছেড়েছে। আর এর বিনিময়ে বাজার থেকে প্রচুর টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে চলে এসেছে। এতে করে বাজারে তারল্যসংকট দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় সরকার যদি ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে বেশি ঋণ নেয়, তাহলে একদিকে মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি বাজারে টাকার সরবরাহ বেড়ে যাবে, অন্যদিকে তারল্যসংকটের চাপও বাড়বে।

এ জন্যই সরকারকে এমন পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমার কারণ হিসেবে তারা বলছেন, বিনিয়োগসীমা নির্ধারণ করে দেয়ায় মেয়াদ শেষে নতুন করে অনেকেই আর বিনিয়োগ করতে পারছেন না, যা সঞ্চয়পত্র কমার অন্যতম কারণ।

বর্তমানে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে। পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ৫২, পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ৭৬, পাঁচ বছর মেয়াদি মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ২৮ এবং তিন বছর মেয়াদি ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সব শাখা অফিস, বাণিজ্যিক ব্যাংকের নির্ধারিত শাখা, জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো অফিস ও পোস্ট অফিস থেকে সঞ্চয়পত্র কেনা যায়।

43 ভিউ

Posted ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০১ আগস্ট ২০২৩

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com