শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

সঞ্চয়পত্রের দিকে আবারও ঝুঁকছেন আমানতকারীরা

শনিবার, ১০ মার্চ ২০১৮
410 ভিউ
সঞ্চয়পত্রের দিকে আবারও ঝুঁকছেন আমানতকারীরা

কক্সবাংলা ডটকম(৯ মার্চ) :: ফারমার্স ব্যাংকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাংক খাত থেকে আমানতকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিলেও গ্রাহকরা ঝুঁকছেন সঞ্চয়পত্রের দিকে। সবশেষ এ বছরের জানুয়ারিতে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ হয়েছে বা গ্রাহকরা সঞ্চয়পত্র কিনেছেন এমন অর্থের পরিমাণ ৮ হাজার ৬০ কোটি টাকা। একক মাস হিসেবে এ অর্থবছরের এটাই সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয় স্কিমগুলোর মূল ও মুনাফা বাবদ বিনিয়োগকারীদের ২ হাজার ৯২০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। ফলে জানুয়ারিতে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার নিট ঋণ নিয়েছে ৫ হাজার ১৩৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। যা একক মাস হিসেবে এ অর্থবছরের এটাই সর্বোচ্চ নিট ঋণ।

অন্যদিকে কয়েক মাস ধরে ব্যাংকগুলো আমানতে সুদের হার বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েও কাঙ্ক্ষিত হারে আমানত পাচ্ছে না। এমন অবস্থায় প্রায় ৩০টির মতো বেসরকারি ব্যাংকে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে কয়েক মাস ধরে ফারমার্স ব্যাংকের গ্রাহকরা টাকা পাচ্ছেন না।

একই পরিস্থিতিতে পড়েছে নতুন প্রজন্মের আরও কয়েকটি ব্যাংক। এর মধ্যে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক তহবিল সংকটের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকে বিধিবদ্ধ নগদ জমা (সিআরআর) রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে সিআরআর সংরক্ষণে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০০ কোটি টাকার ঘাটতি হচ্ছে ব্যাংকটির। বিপুল অঙ্কের এই ঘাটতির বিপরীতে প্রতিদিনই জরিমানা আরোপ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংক খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি বাড়লেও কমেছে আমানত প্রবৃদ্ধি। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোকে আমানত বৃদ্ধির নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

তবে কয়েকটি ব্যাংকের এমডি নাম প্রকাশ না করে জানিয়েছেন, আমানতকারীরা এখন অনেক ভেবেচিন্তে টাকা রাখছেন। বেশি সুদের প্রস্তাব দিয়েও কাঙ্ক্ষিত হারে আমানত পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই নতুন ব্যাংকগুলো থেকে টাকা তুলে নিয়ে রাখছেন পুরনো ব্যাংকে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নতুন প্রজন্মের ফারমার্স ব্যাংক আমানতকারীর অর্থ ফেরত দিতে না পারার খবরে ব্যাংক খাতে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অনেকেই ব্যাংক থেকে টাকা উঠিয়ে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করছেন। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পুরো ব্যাংক খাতে।

এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘বেসরকারি ফারমার্স ব্যাংকের মতো পরিস্থিতিতে পড়তে পারে এমন ভাবনা থেকেও বিভিন্ন ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। একইভাবে সঞ্চয়পত্রকে এখনও নিরাপদ বিনিয়োগ মনে করা হচ্ছে। এর সঙ্গে সুদও বেশি। ফলে ব্যাংক আমানতে সুদের হার বাড়লেও মানুষ সঞ্চয়পত্রকেই বেছে নিচ্ছে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ মনে করেন, ব্যাংক থেকে টাকা তুলে অনেকেই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেছেন। কারণ সঞ্চয়পত্রের চেয়ে নিরাপদ জায়গা আর কোথাও নেই। তিনি বলেন, ‘জানুয়ারিতে ব্যাংক আমানতে সুদের হার কিছুটা কম ছিল। ওই সময়ে ব্যাংক খাতে তারল্য সংকটও ছিল।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই থেকে জানুয়ারি) সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ঋণ নিয়েছে ২৮ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা। যা অর্থবছরের পুরো সময়ের লক্ষ্যমাত্রার ৯৬.০৬ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি মেটাতে এই খাত থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার কথা ৩০ হাজার ১৫০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের বিক্রি বাড়লেও আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের মতো নভেম্বরেও সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমে যায়। কিন্তু ব্যাংক খাতে উদ্বেগ সৃষ্টি হওয়ায় জানুয়ারি থেকে আবারও বাড়তে শুরু করে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, জানুয়ারিতে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ঋণ নিয়েছে ৫ হাজার ১৩৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এর আগে গত ডিসেম্বরে ঋণ নিয়েছিল ২ হাজার ৬৫১ কোটি টাকা। গত নভেম্বরে ৩ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা আর অক্টোবরে এই অঙ্ক ছিল ৪ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। এছাড়া সেপ্টেম্বরে ৩ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা, আগস্টে ৩ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা ও অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সরকার ঋণ নিয়েছিল ৫ হাজার ৫৩ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত সাত মাসে পরিবার সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ঋণ নিয়েছে ১০ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা। তিন মাস পরপর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র থেকে নিট ঋণ নিয়েছে ৭ হাজার ৮১২ কোটি টাকা। পেনশনের সঞ্চয়পত্র থেকে ২ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা ও পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে ২ হাজার ৭৭ কোটি টাকা। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয় ৭৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি।

সঞ্চয়পত্রের দিকে মানুষের আগ্রহের বড় কারণ বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্পের সুদের হার এখনও ব্যাংকের চেয়ে বেশি। পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষে পাওয়া যায় ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ সুদ। পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশন সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের সুদের হার এখন ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ, তিন বছর মেয়াদি মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ ও তিন বছর মেয়াদি ডাকঘর সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ।

410 ভিউ

Posted ১১:০৯ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১০ মার্চ ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com