শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

২৯ পণ্যের বেঁধে দেওয়া দাম অকার্যকর : হতাশ সাধারণ ক্রেতারা

শনিবার, ১৬ মার্চ ২০২৪
63 ভিউ
২৯ পণ্যের বেঁধে দেওয়া দাম অকার্যকর : হতাশ সাধারণ ক্রেতারা

কক্সবংলা ডটকম(১৬ মার্চ) :: শনিবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু তদারকির অভাবে তা অকার্যকর। পরিস্থিতি এমন-সরকারের এই নির্দেশ এক প্রকার কাগজে-কলমে। ফলে মূল্য নির্ধারণ করার পরও ক্রেতার কোনো লাভ হয়নি। বরং অসাধু ব্যবসায়ীরা সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাড়তি দরেই পণ্য বিক্রি করছে। ফলে হতাশ সাধারণ ক্রেতারা।

জানা যায়, শুক্রবার মাছ, মাংস, খেজুর ও বিভিন্ন সবজিসহ মোট ২৯টি নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছিল কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।

নতুন এ দাম অনুযায়ী প্রতি কেজি গরুর মাংসের সর্বোচ্চ খুচরা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৬৪ টাকা। ব্রয়লার খুচরা পর্যায়ে ১৭৫ ও সোনালি মুরগি ২৬২ টাকা কেজি মূল্য ঠিক করে দেয়া হয়েছে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মাসুদ করিম স্বাক্ষরিত  এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। যদিও নির্ধারিত এ দামের সঙ্গে বাজারে বিক্রি হওয়া পণ্যমূল্যে বড় ধরনের অসামঞ্জস্য রয়েছে।

উৎপাদন খরচ, উৎপাদক পর্যায়ে সর্বোচ্চ দাম, পাইকারি বাজার ও ভোক্তা পর্যায়ে ২৯টি পণ্যের খুচরা দাম কত হবে সেটা নির্ধারণ করা হয়েছে।

নিত্যপণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে গরু ও ছাগলের মাংস, ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি, ডিম, মুগডাল, মাসকলাই, মসুর ডাল মোটা ও উন্নতমানের, আমদানীকৃত ছোলা, খেসারির ডাল, বেসন, চাষের পাঙাশ ও কাতল মাছ, দেশী পেঁয়াজ ও রসুন, আমদানীকৃত আদা, শুকনা ও কাঁচামরিচ, বাঁধাকপি ও ফুলকপি, বেগুন, শিম, আলু, টমেটো, মিষ্টিকুমড়া, জাহিদি খেজুর, মোটা চিড়া ও কলা।

কৃষি বিপণন আইন ২০১৮-এর ৪(ঝ) ধারার ক্ষমতাবলে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর এসব কৃষিপণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করেছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত নতুন এ দামে কৃষিপণ্য কেনাবেচা করার জন্য বিক্রেতা ও ভোক্তাদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে সংস্থাটির বিজ্ঞপ্তিতে।

মাংসের মধ্যে প্রতি কেজি গরুর সর্বোচ্চ খুচরা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৬৪ টাকা। এছাড়া নতুন দাম অনুযায়ী ছাগলের মাংস প্রতি কেজি ১ হাজার ৩ টাকা, ব্রয়লার খুচরা পর্যায়ে ১৭৫ ও সোনালি মুরগি ২৬২ টাকা কেজি। ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ১০ টাকা। সে হিসাবে এক হালির দাম পড়বে ৪২ টাকা। মাছের মধ্যে চাষের পাঙাশের খুচরা মূল্য প্রতি কেজি ১৮১ টাকা ও কাতলা মাছের সর্বোচ্চ দাম ৩৫৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

রাজধানীর খুচরা বাজারে যদিও বর্তমানে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। এছাড়া ছাগল বা খাসি প্রতি কেজি ১০০০-১১০০ টাকা, ব্রয়লার ২১০-২৩০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩৩০-৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৪৮ টাকা করে। মাছের মধ্যে প্রতি কেজি চাষের পাঙাশ ২০০-২৩০ টাকা ও চাষের কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩৫০ টাকায়।

বিভিন্ন ডালের মধ্যে ছোলা, মসুর, মুগ, মাসকলাই ও খেসারির মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।

বেঁধে দেয়া নতুন দাম অনুযায়ী, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ছোলা ৯৮ টাকা, উন্নতমানের মসুর ডাল ১৩০ ও মোটা দানার মসুর ১০৫ টাকা, খেসারি ডাল ৯৩ টাকা, মাসকলাই ১৬৬ টাকা ও মুগ ডালের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬৫ টাকা।

এছাড়া মোটা চিড়ার খুচরা দাম ৬০ টাকা ও বেসনের কেজি ১২১ টাকা বেঁধে দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। প্রতি কেজি জাহিদি খেজুর খুচরা পর্যায়ে ১৫৫ টাকা এবং সাগর কলার হালি ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বর্তমানে যদিও রাজধানীর খুচরা বাজারে ডালজাতীয় পণ্যের মধ্যে প্রতি কেজি ছোলা ১০০-১১০ টাকা, উন্নতমানের মসুর ডাল ১৩৫-১৪০ টাকা, মোটা দানার মসুর ১০৮-১১২ টাকা এবং মুগ ডাল ১৫০-১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি জাহিদি খেজুর ২৩০-২৫০ টাকা ও সাগর কলার প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।

এদিকে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজের দাম ৬৫ টাকা, দেশী রসুন ১২০ টাকা ও আমদানীকৃত আদা ১৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর কাঁচামরিচের দাম প্রতি কেজি ৬০ টাকা ও শুকনা মরিচের সর্বোচ্চ দাম বেঁধে দেয়া হয়েছে ৩২৭ টাকা।

অন্যদিকে সবজির মধ্যে খুচরা পর্যায়ে বাঁধাকপি প্রতি কেজি ২৮ টাকা, ফুলকপি ৩০ টাকা, বেগুন ৪৮ টাকা, শিম ৫০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ২৪ টাকা ও আলু সাড়ে ২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

যদিও রাজধানীর বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা, দেশী রসুন ১৩০-১৫০ টাকা, শুকনা মরিচ ৩৮০-৪৫০ টাকায়। আর প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, শিম ৪০-৬০, কাঁচামরিচ ১০০-১১০, টমেটো ৭০-৮০ ও প্রতি কেজি আলু ৩৫-৪০ টাকায়।

এর আগে রোজার শুরুতেই খেজুর ও চিনির দাম নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে অতি সাধারণ মানের খেজুরের কেজি ১৫০-১৬৫ টাকা ও চিনির মূল্য ১৪০ টাকায় বেঁধে দেয়া হয়।

এর আগে রোজার শুরুতেই খেজুর ও চিনির দাম নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অতি সাধারণ মানের খেজুরের কেজি ১৫০-১৬৫ টাকা ও চিনির মূল্য ১৪০ টাকায় বেঁধে দেয়া হয়। যদিও বাজারে এর কোনো প্রভাব নেই। বেঁধে দেয়া দামে পণ্য বিক্রি করছেন না ব্যবসায়ীরা।

ক্রেতারা যদিও বলছেন আগেও কয়েক দফায় ভোজ্যতেল ও চিনির দাম বেঁধে দিয়ে তা কার্যকর করতে পারেনি সরকার। তাই মাংস, ডিম, ডাল, পেঁয়াজ, মরিচ ও সবজির ক্ষেত্রে যে এটা কার্যকর হবে, সে ব্যাপারেও খুব একটা আশবাদী হতে পারছেন না তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, ‘আইন অনুযায়ী তারা (কৃষি বিপণন অধিদপ্তর) বিভিন্ন পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিতে পারে। কিন্তু সমস্যা হলো এ দাম নির্ধারণ অনেকটা দায়সারা গোছের হয়েছে। দামটা বাস্তবায়নযোগ্য হতে হবে। তা না হলে বাস্তবায়ন করা কঠিন।

যে আইনের ভিত্তিতে এ দাম নির্ধারণ করা হয়েছে তা মানুষকে জানানো বা প্রচারণা চালানো কোনোটাই দেখা যায়নি। আগেও দাম নির্ধারণ হয়েছে কিন্তু লোকবলের অভাবে তা বাস্তবায়ন হয়নি। এবারো সে শঙ্কাই রয়েছে। এটা আরো প্রস্তুতি নিয়ে করা দরকার ছিল।’

পণ্যের বেঁধে দেওয়া দাম অকার্যকর

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, কৃষি বিপণন আইন ২০১৮ এর ৪ (ঝ) ধারার ক্ষমতা বলে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কৃষি পণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করেছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নির্ধারিত দামে ক্রয়-বিক্রয় করতে হবে। আর বেঁধে দেওয়া দাম অনুযায়ী পণ্য বিক্রি নিশ্চিত করতে কাজ করবে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। তবে বাজারে চিত্র পুরোটাই ভিন্ন।

শনিবার প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ভোক্তা পর্যায়ে ১৭৫ ও সোনালি মুরগি ২৬২ টাকায় বিক্রির কথা ছিল। কিন্তু খুচরা বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০-২২০ টাকা। পাশাপাশি প্রতিকেজি সোনালি মুরগি ২৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি মুগডাল ১৬৫ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও বাজারে পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি ছোলার দাম ৯৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বিক্রি হচ্ছে বিক্রি হচ্ছে ১০৫-১১০ টাকা।

পাশাপাশি প্রতিকেজি মসুর ডালের দাম খুচরা পর্যায়ে ১৩০ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। মোটা দানার মশুর ডালের কেজি ১০৫ টাকা ৫০ পয়সায় নির্ধারণ করলেও খুচরা বাজারে ১১০-১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম সর্বোচ্চ ৬৬৪ টাকা নিধারণ করেছে সরকার। তবে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৭৮০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭৫ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৬২ টাকা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাজধানীর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২২০ ও সোনালি ৩৫০ টাকা।

প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫ টাকা, কিন্তু বাজারে ক্রেতার ৮৫-১০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। প্রতিকেজি রসুন ১২০ টাকা ও আদা ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করার কথা। তবে বাজারে এই দামে পণ্য দুটি মিলছে না। বিক্রি হচ্ছে ১৫০-২০০ এবং ১৮০-২০০ টাকা।

কাওরান বাজারে পণ্য কিনতে আসা হামিম বলেন, শুধু পত্রিকা ও টেলিভিশনে দেশি সরকার পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছে। কিন্তু বাজারে কখনো মিল পাওয়া যায়নি। মনে হয় সরকারের সংস্থাগুলো পণ্যের দাম বেঁধে দিয়ে তারা তাদের দায়িত্ব শেষ করে। কিন্তু বাজারে তদারকি করে না। সেক্ষেত্রে ভোক্তার কোনো লাভ হয় না। সব লোক দেখানো।

জানতে চাইলে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, পণ্যের দাম বেঁধে দিলেই হবে না। পণ্য সেই দামে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে কি না তা যাচাই করতে হবে। ক্রেতা বেঁধে দেওয়া দামে পণ্য কিনতে পারছে কি না তা তদারকি করতে হবে। যদি সেই দামে বিক্রেতারা পণ্য বিক্রি না করে, তাহলে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। সংশি্লষ্ট সংস্থার কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে। তা না হয় বরাবরের মতো কাগজে-কলমে বেঁধে দেওয়া দাম থাকবে, আর বাস্তবে ভোক্তা প্রতারিত হবে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়ার পর সেই দামে বিক্রি হচ্ছে কি না সেটা তদারকি করছে। সঙ্গে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পাশাপাশি সরকারের একাধিক বাজার এই বেঁধে দেওয়া দাম পর্যবেক্ষন করছে। কিন্তু অনেক খুচরা ব্যবসায়ীদের পণ্য বেশি দামে কেনা, তাই বেশি দামেই বিক্রি করছে। তবে দুএকদিনের মধ্যে দাম সহনীয় হবে। বেঁধে দেওয়া দামে পণ্য বিক্রি হবে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, পণ্যের দাম নির্ধারণ করা থাকলে অধিদপ্তর সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে। ২৯ পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পণ্য বাজারে নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে কি না সেটা দেখা হচ্ছে। অনিয়ম পেলে আইনের আওতায় আনা হবে।

63 ভিউ

Posted ৬:৪১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৬ মার্চ ২০২৪

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com