রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

৫ই জানুয়ারি নির্বাচন : বাংলাদেশের গণতন্ত্রে কী প্রভাব রাখলো ?

শুক্রবার, ০৫ জানুয়ারি ২০১৮
315 ভিউ
৫ই জানুয়ারি নির্বাচন : বাংলাদেশের গণতন্ত্রে কী প্রভাব রাখলো ?

কক্সবাংলা ডটকম(৫ জানুয়ারি) :: বাংলাদেশে ৫ই জানুয়ারি বিতর্কিত নির্বাচনে অর্ধেকের বেশি ভোটার ভোট দিতে পারেননি। বিএনপি বয়কট এবং নির্বাচন প্রতিহত করার আন্দোলনে ভোটারদের উপস্থিতিও ছিল তুলনামূলক অনেক কম।

ঢাকার একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আমিনুর রহমানের এলাকার সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। স্বভাবতই তার ২০১৪ সালে ভোট দেয়ার সুযোগ হয়নি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চার বছরে এসে পঞ্চাশোর্ধ আমিনুর রহমান বলেন, “সরকারে যিনিই থাকেন কোনো বিষয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ চাপ রাখেন। এবার চাপের বিষয়টি ক্ষমতায় টিকে থাকার ক্ষেত্রে, আঁকড়ে রাখার ক্ষেত্রে একেবারে স্পষ্ট এবং নগ্ন।”

সংসদ নিয়ে টিআইবির এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এ সংসদে আইন পাশ হতে গড়ে মাত্র ৩০ মিনিট সময় নিয়েছে। কোরাম সংকটে বিপুল অর্থের অপচয় ধরা পড়েছে। এমনকি বিধান থাকলেও অনেক আন্তর্জাতিক চুক্তি এ সংসদে বিতর্ক বা আলোচনার জন্য উপস্থাপনই করা হয়নি। অথচ সংসদের সরকারি ও বিরোধী দল একসুরে সংসদের বাইরের দল বিএনপির সমালোচনা করেছে।

টিআইবির ট্রাস্টিবোর্ডের সদস্য এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দীন খান বলেন, “লিগ্যালি, থিওরিটিক্যালি প্রাকটিক্যালি কোনোভাবেই এটাকে বিরোধীদল বলা যায় না। সুতরাং ২০১৪ সালে যে সংসদ হয়েছিল সেটা বিনা অপজিশনেই ফাংশন করলো। দুনিয়ায় এত সহজে কোনো আইন পাশ হয় এটা দেখা যায় না। তারপরে ওয়াচডক ফাংশনতো করেই নাই। গত নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারের কোনো জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। এবং তারা জবাবদিহী করেও না”।

টিআইবির ট্রাস্টিবোর্ডের সদস্য এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দীন খান
টিআইবির ট্রাস্টিবোর্ডের সদস্য এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দীন খান

বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনের পর একদিকে সংসদের এই অবস্থা অপরদিকে রাজনীতির মাঠে বিএনপিও সেভাবে ভূমিকা রাখতে পারেনি। এর মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২২টি মামলা হয়েছে এবং ৮৪টি মামলা মহাসচিবের বিরুদ্ধে। এছাড়া দলটির দাবি তাদের অসংখ্য নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ২৫ হাজারের বেশি মামলা হয়েছে। আর সর্বশেষ ১৬ টি সভা সমাবেশের আবেদনে শর্তসাপেক্ষে অনুমতি মিলেছে মাত্র তিনটি।

৫ই জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচন অনুষ্ঠানের পেছনে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার যুক্তি তুলে ধরেছিল সরকার। নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালের ১৯শে ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন যে, ” উনি [খালেদা জিয়া] যদি হরতাল বন্ধ করেন, অবরোধ বন্ধ করেন, মানুষের ওপর জুলুম অত্যাচার বন্ধ করেন তাহলে ওই নির্বাচনের পর আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা যদি একটি সমঝোতায় আসতে পারি। প্রয়োজনে আমরা আবার পুনরায় নির্বাচন দেব। পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিয়ে নতুন নির্বাচন দেব।”

কিন্তু নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর সরকারের দিক থেকে আলোচনার আর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। অন্যদিকে নির্বাচনের প্রথম বার্ষিকীতে বিএনপির হরতাল অবরোধে ব্যাপক সহিংসতাও হয়েছে। আন্দোলনে সহিংসতার বিষয়টিকে সামনে তুলে ধরে বিএনপির বিরুদ্ধে আরো কঠোর হয়েছে সরকার। এখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল দেখা গেলেও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহান মনে করছেন ৫ই জানুয়ারি নির্বাচন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের জন্য একটা আঘাত।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহান
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহান

“দুই দলের যে একটা এগ্রিমেন্ট দরকার নির্বাচনে সেটাতো একদম বিহীত হয়ে গেল। এবং তারপরে যেটা হলো যেহেতু বিরোধী দল পার্লামেন্টে আসলেন না এবং রাস্তায় রাজনীতি করতে গিয়ে অনেক মার খেলেন তাতে করে যারা সরকারে আছেন শের্ষ পর্যন্ত একটা দল অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে গেছে। অতএব সেটাও আমি বলবো একটা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য ভাল নয়।”

বাংলাদেশে ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনের পর সরকার বিরোধী মত এবং সমালোচনা দমনেও তৎপর হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ, সাংবাদিকদের ওপর ৫৭ ধারা প্রয়োগ, সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ধরে নেয়ার পর গুমের ঘটনা নিয়ে সমালোচনা রয়েছে।

হাফিজউদ্দীন খান বলছিলেন, “এক কথায় বলা যায় বর্তমান সরকার সমালোচনা মোটেও শুনতে রাজী নয়, সহ্য করতে রাজী নয়। গণতন্ত্র হতে গেলে পরমত সহিষ্ণুতা থাকতে হবে এটাতো একেবারেই অনুপস্থিত, নাই।”

বাংলাদেশে রাজনীতি ও গণতন্ত্রের এ অবস্থায় আগামী নির্বাচন নিয়ে জনমনে শঙ্কাও দেখা যাচ্ছে।

৫ই জানুয়ারি বিতর্কিত নির্বাচনে অর্ধেকের বেশি ভোটার ভোট দিতে পারেননি
৫ই জানুয়ারি বিতর্কিত নির্বাচনে অর্ধেকের বেশি ভোটার ভোট দিতে পারেননি

ঢাকার আমিনুর রহমান বলছিলেন, “দেশে একশ চুয়ান্নটি সিট বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পরেও সংসদ কন্টিনিউ করে এবং ওই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সরকারের মনোভাবের কোনো পরিবর্তন যেখানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। সেই কারণে নিঃসন্দেহে জনগণের মধ্যে আস্থার সংকট রয়েছেই, যে আগামী নির্বাচনটি যথাযথ এবং সুষ্ঠু হবে কিনা?”

315 ভিউ

Posted ১:৪২ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৫ জানুয়ারি ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com