কক্সবাংলা ডটকম(১৭ মার্চ) :: উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অর্জনে প্রাথমিক ধাপ পেরিয়েছে বাংলাদেশ। তবে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্তরে চূড়ান্তভাবে উত্তরণ নিশ্চিত করতে পরবর্তী তিন বছরের জন্য নির্দিষ্ট কিছু সূচকে অর্জনের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। জাতিসংঘের ওয়েবসাইট সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জানা গেছে, স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসতে নির্ধারিত তিনটি সূচকে উত্তীর্ণ হয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে রয়েছে মাথাপিছু আয়, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যা এরই মধ্যে ১ হাজার ২৪২ মার্কিন ডলার পেরিয়েছে। একই সঙ্গে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি নিরসন— এ দুটি মানদণ্ডেও উত্তীর্ণ হয়েছে বাংলাদেশ।
নিউইয়র্ক সময় বৃহস্পতিবার রাতে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) বাংলাদেশের প্রাথমিক এ উত্তরণের বিষয়টি চূড়ান্ত করেছে।
জানা গেছে, তিন বছর পর গত সোমবার বৈঠক শুরু করে জাতিসংঘের এ কমিটি। বৈঠকের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উত্তরণে প্রাথমিকভাবে যোগ্য ঘোষণা করা হয়। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী চূড়ান্তভাবে উত্তরণ নিশ্চিত করতে ২০২১ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিক অর্জনের সফলতা ধরে রাখতে হবে বাংলাদেশকে।
নিয়ম অনুযায়ী, এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য দেশের জনগোষ্ঠীর মাথাপিছু আয় ১ হাজার ২৪২ মার্কিন ডলার হতে হয়। সেখানে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবমতে, গত জুনেই দেশে মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৬০২ মার্কিন ডলার ছুঁয়েছে। এছাড়া মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকে ৬৬ পয়েন্ট অর্জন করতে হয়। সেখানে বাংলাদেশ ৭২ দশমিক ৯ পয়েন্ট অর্জন করেছে। সর্বশেষ অর্থনৈতিকভাবে ঝুঁকি নিরসন সূচকে বাংলাদেশের পয়েন্ট বর্তমানে ২৪ দশমিক ৯। এক্ষেত্রে ৩২ পয়েন্টের উপরে থাকলে কোনো দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ঝুঁকিগ্রস্ত বা নাজুক বলা হয়।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম গতকাল ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, ‘জাতিসংঘের উন্নয়নবিষয়ক কমিটি বৃহস্পতিবার রাতে নিউইয়র্কে বৈঠকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশ থেকে উত্তরণের সব সূচক প্রথমবারের মতো অর্জন করেছে। শুক্রবার তারা আমাদের জাতিসংঘে স্থায়ী মিশনে এটা নিশ্চিত করে একটা চিঠি হস্তান্তর করবে। নিয়ম অনুযায়ী, তিন বছর পর পর দুবার এটা অর্জন করলেই চূড়ান্তভাবে কোনো দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করা হয়। আমাদের এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে এবং ২০২১ সালে আবারো নিশ্চিত করতে হবে একই সূচকগুলো অর্জনের মধ্য দিয়ে। সবাইকে অভিনন্দন।’
এলডিসি থেকে উত্তরণে তিনটি নির্ণায়কের যেকোনো দুটির উত্তরণ মান অর্জন করলে অথবা মাথাপিছু জিএনআই উত্তরণ মানের দ্বিগুণ হলেই এ স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘ। তবে এক্ষেত্রে জাতিসংঘের নির্ধারিত তিনটি শর্তই বাংলাদেশ অর্জন করেছে। জাতিসংঘের নির্ধারিত মানদণ্ডে ২০১৮ সালে মাথাপিছু আয় ১ হাজার ২৩০ ডলার থাকার কথা বলা হয়। তবে সংস্থাটির কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) দেয়া হিসাব অনুসারে, মাথাপিছু আয় সূচকে বাংলাদেশের অর্জন ১ হাজার ২৭২ ডলার। বিবিএসের হিসাবমতে, গত জুনেই দেশে মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ৬০২ ডলার।
দ্বিতীয় শর্তে মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকে জাতিসংঘের নির্ধারিত মান ৬৬ বা তার বেশি হওয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশের অর্জন সিডিপির হিসাবে ৭২ দশমিক ৮ ভাগ এবং বিবিএসের হিসাবে ৭২ দশমিক ৯ ভাগ। জাতিসংঘের নির্ধারিত তৃতীয় শর্তে অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা বা ঝুঁকি নিরসন সূচকে মান ৩২ বা তার কম নির্ধারিত থাকলেও সিডিপির হিসাবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের পয়েন্ট ২৫ এবং বিবিএসের হিসাবে ২৪ দশমিক ৮ ভাগ।
Posted ৮:৩৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৭ মার্চ ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta