শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

দেশের জিডিপির আকার ৪১৬ বিলিয়ন ডলার

সোমবার, ০৪ এপ্রিল ২০২২
214 ভিউ
দেশের জিডিপির আকার ৪১৬ বিলিয়ন ডলার

কক্সবাংলা ডটকম :: জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশে খাদ্যপণ্যের বাজারও বাড়ছে। আন্তর্জাতিক এক পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে, প্রতি বছর বাজারটি সম্প্রসারণ হচ্ছে ১০ শতাংশেরও বেশি হারে। এরই মধ্যে বাজারটির মোট আকার ১৩৩ বিলিয়ন (১৩ হাজার ৩০০ কোটি) ডলার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় সাড়ে ১১ লাখ কোটির বেশিতে। পাঁচ বছরের মধ্যে বাজারটির ব্যাপ্তি ২১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।

দেশে প্রায় প্রতি বছরই প্রধান কয়েকটি খাদ্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে দেখা যায়। বাজারসংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যকার সমন্বয়হীনতাকে এর কারণ হিসেবে দায়ী করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। তাদের ভাষ্যমতে, দেশে খাদ্যপণ্যের বাজার নিয়ে স্পষ্ট কোনো সরকারি পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। বেসরকারি যেসব তথ্য পাওয়া যায়, সেগুলোও পর্যাপ্ত নয়। তথ্যের অভাব বাজারটির মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির পথে বড় ধরনের বাধা তৈরি করছে। বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে নীতিনির্ধারকরাও বলছেন, তদারকিতে নিয়োজিত সংস্থাগুলোর সমন্বয় সাধন করা গেলে খাদ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই সহজ হয়ে যেত।

জার্মানিভিত্তিক তথ্যসেবা প্রতিষ্ঠান স্ট্যাটিস্টার পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে, দেশে খাদ্যের বাজারের আকার এখন ১৩ হাজার ৩২০ কোটি ৬০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে। বিনিময় হার ৮৭ টাকা ধরে বাংলাদেশী মুদ্রায় খাদ্যপণ্যের বাজারের আকার দাঁড়ায় ১১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৪০ কোটি টাকায়। বাজারটি প্রতি বছরই ১০ দশমিক ১৯ শতাংশ হারে বাড়ছে। দানাদার খাদ্যশস্য ও খাদ্যশস্যজাত পণ্য, মাংস, মাছ ও সামুদ্রিক খাদ্য, সবজি, দুগ্ধজাত পণ্য পণ্য এবং ডিম, ফল, বাদাম, শিশুখাদ্যসহ সব খাদ্যপণ্যকে হিসাব করেই বাজারের এ ব্যাপ্তি দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশটি গড়ে উঠেছে খাদ্যশস্যজাত পণ্য নিয়ে, যার আকার ২ হাজার ৪৫৩ কোটি ৬০ লাখ ডলারের।

স্ট্যাটিস্টার এ পরিসংখ্যানকে দেশের খাদ্যপণ্যের বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের ভাষ্যমতে, বাজারটির পরিধি আরো বড় হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। সরকার দেশের খাদ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে ঠিকই। কিন্তু বাজারের আকার বিবেচনায় তা যথেষ্ট নয়। স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধি এবং আপত্কালীন মজুদ সুদৃঢ় করার মাধ্যমে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে নজর না দিলে দেশের খাদ্যপণ্যের বাজারে বড় ধরনের অস্থিরতার ঝুঁকি রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিত সাহা বলেন, দেশে মানুষের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও বাড়ছে। স্বাভাবিকভাবেই খাদ্যপণ্যের বাজারের আকার বড় হচ্ছে। এত বড় বাজার নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি খুবই জটিল। যথেষ্ট না হলেও এক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগগুলোকে ছোট করে দেখার কোনো উপায় নেই।

দানাদার খাদ্যশস্য ও খাদ্যশস্যজাত পণ্যের পরই সবচেয়ে বড় খাদ্যপণ্যের বাজার মাছ ও সামুদ্রিক খাদ্যের। বাজারটির আকার ১ হাজার ৬৪৮ কোটি ৩০ লাখ ডলারের। এর পরই আছে মাংসের বাজার, যার আকার ১ হাজার ৬২৯ কোটি ডলারের। দেশে সবজির বাজারের আকার ১ হাজার ৫৯৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের। দুগ্ধজাত পণ্য ও ডিমের বাজার রয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটি ডলারের।

নিত্যখাদ্যপণ্যগুলোর বাজার বড় হওয়ার পাশাপাশি এগুলোয় সিন্ডিকেটের প্রভাবও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম বলেন, দেশে খাদ্যপণ্যের বাজার এখন সম্পূর্ণভাবে সিন্ডিকেটের হাতে চলে গিয়েছে। আগে শুধু মাংসের বাজার সিন্ডিকেটমুক্ত ছিল। দুঃখজনক হলেও বাস্তবতা হলো এখন সেটিও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পরও এখনো মাংস আমদানি হচ্ছে।

দেশে স্থানীয় ও বহুজাতিক বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এখন শিশুখাদ্য আমদানি, প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণনের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। সম্প্রসারণশীল এসব শিশুখাদ্যপণ্যের বাজারও এখন বেশ বড় আকার নিয়েছে। স্ট্যাটিস্টার তথ্য অনুযায়ী, দেশে শিশুখাদ্যের বাজার ৮৯০ কোটি ২০ লাখ ডলারের। এছাড়া তৈরি খাবারের বাজার ৮২৮ কোটি ডলারের। সস ও মসলাপণ্যের বাজার ৪১৫ কোটি ডলারের। আবার স্প্রেডস ও সুইটেনার্সের বাজারের আকার ১৩৮ কোটি ২০ লাখ ডলারের।

স্ট্যাটিস্টার তথ্যে সমর্থন জানাচ্ছেন বাংলাদেশ অটো বিস্কিটস অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভুঁইয়াও। তিনি বলেন, চাল, ব্রেড, বিস্কিট, বেকারি থেকে শুরু করে অনেক ধরনের খাদ্যপণ্যের বাজার রয়েছে দেশে। সব মিলিয়ে ১৩৩ বিলিয়ন ডলারের বাজার হতে পারে। আবার এর সব পণ্যই যে দেশে উৎপাদন হচ্ছে, তাও নয়। দেশে যে গম উৎপাদন হয়, তা দিয়ে মাত্র দুই মাসের চাহিদার জোগান সম্ভব হয়। বাকি ১০ মাস চাহিদা পূরণ করতে হয় আমদানি করে। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থা যে পরিসংখ্যান দিচ্ছে, তাকে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলা যায় না।

বাজারসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর তথ্য অনুযায়ী, দেশের প্রধানতম ভোগ্যপণ্য চাল, গম, ডাল, চিনি ও ভোজ্যতেল। এছাড়া সবজি, মাংস ও দুগ্ধজাতীয় পণ্য, বাদামজাতীয় পণ্য দেশের খাদ্যপণ্যের তালিকায় প্রথমদিকেই অবস্থান করছে। প্রায় প্রতিটি পণ্যই দেশের অভ্যন্তরে কিছু না কিছু উৎপাদন হলেও চাল ছাড়া সিংহভাগই আমদানি নির্ভর। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশে খাদ্যপণ্যের বাজারও ক্রমেই বাড়ছে। দেশের জিডিপির আকার এরই মধ্যে ৪১৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এ জিডিপির উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করে রয়েছে খাদ্যপণ্যের আমদানি, উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাত ব্যয়।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশে চালের বার্ষিক উৎপাদন ৩ কোটি ৯০ লাখ টনের কাছাকাছি। এর সবটাই বাজারে আসে না। কৃষকের নিজের ভোগে ব্যবহার হয় প্রায় ৩০ শতাংশ। বাজারে আসে ৭০ শতাংশ, যার পরিমাণ দাঁড়ায় পৌনে তিন কোটি টনের কাছাকাছি। একসময় স্থানীয় উৎপাদন দেশের প্রধান খাদ্যশস্যটির বাজার চাহিদা মেটাতে সক্ষম হলেও কয়েক বছর ধরে আমদানির পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ছে। এর মধ্যে নিত্যব্যবহার্য চাল ছাড়াও সুগন্ধিজাতীয় চাল আমদানি বাড়ছে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে। সব মিলিয়ে দেশে শুধু চালেরই বার্ষিক বাজার কমবেশি প্রায় ২ লাখ কোটি টাকার।

দ্বিতীয় প্রধান খাদ্যশস্য গমের স্থানীয় উৎপাদন কম। চাহিদার সিংহভাগই পূরণ হয় আমদানির মাধ্যমে। প্রতি বছর বিশ্ববাজার থেকে গম আমদানি হয় প্রায় ৬৫ থেকে ৬৮ লাখ টন। এ হিসেবে গমের বাজারও প্রায় ২৫ থেকে ২৮ হাজার কোটি টাকার। তৃতীয় প্রধান শস্য ডালের বার্ষিক চাহিদা ১৫ লাখ টন। সেদিক থেকে ডালশস্যের প্রকৃত বাজার ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। এছাড়া দুগ্ধজাতীয় পণ্যের ৪০ হাজার কোটি টাকার, চায়ের ৫ হাজার কোটি ও মসলার ১০ হাজার কোটি টাকার বাজার রয়েছে। ডিমের বাজার রয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকার।

দেশে চাহিদার বিপরীতে প্রতি বছর গড়ে ২৪ লাখ টন চিনি আমদানি হচ্ছে। প্রতি টন ৫০০ ডলার হিসেবে এতে ব্যয় হচ্ছে ১২০ কোটি ডলার বা প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। ভোজ্যতেলের বার্ষিক আমদানির পরিমাণও একই। প্রতি টন ১ হাজার ২০০ ডলার হিসেবে ভোজ্যতেল আমদানি ব্যয় দাঁড়ায় ২৮৮ কোটি ডলার, স্থানীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।

সামনের দিনগুলোয় দেশে খাদ্যপণ্যের বাজার আরো বড় হবে বলে মনে করছেন খাদ্যশস্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী। তিনি বলেন, শিল্প ও উৎপাদন খাতের অগ্রগতির ধারাবাহিকতায় আগামীতে দেশের খাদ্যপণ্যের বাজার অনেক সম্প্রসারণ হবে। আমদানিনির্ভরতা কমাতে উৎপাদন প্রক্রিয়ার আধুনিকায়ন ছাড়াও সার্বিক খাদ্যনিরাপত্তার জন্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে চাহিদা অনুপাতে মজুদ বাড়ানো জরুরি। এতে বৈশ্বিক ভৌগোলিক, রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক সংকটকালীন সময়েও খাদ্যনিরাপত্তার দিক থেকে শক্তিশালী অবস্থানে থাকতে পারবে বাংলাদেশ।

এ ব্যবসায়ীর ভাষ্য অনুযায়ী, কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে প্রধান খাদ্যশস্য ছাড়াও প্রায় সব ধরনের খাদ্যপণ্য উৎপাদন হয়। এখানে জনসংখ্যা বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের চেয়ে বেশি। ফলে এখানে খাদ্যপণ্যের চাহিদাও বেশি। কিন্তু মান্ধাতা আমলের উৎপাদন পদ্ধতির কারণে স্থানীয় পর্যায়েই চাহিদা পূরণের মতো উৎপাদন হচ্ছে না। আমদানিনির্ভরতা চলে আসছে দশকের পর দশক ধরে। সেটি ক্রমেই বাড়ছে। বর্তমানের কভিড ও যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতেও গোটা বিশ্বেই বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়ছে। আমদানিনির্ভরতায় দেশেও সংকটটি আরো প্রকট হয়ে দেখা দিচ্ছে।

দেশে প্রতি বছর দেড় কোটি টনের বেশি খাদ্যপণ্য আমদানি হয়। বিশ্বের অন্যতম প্রধান খাদ্যপণ্য আমদানিকারক দেশ হলেও বাংলাদেশে খাদ্যপণ্য সংরক্ষণ ও মজুদের জন্য পর্যাপ্ত ও আধুনিক ব্যবস্থাপনা নেই। স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত কৃষিজ পণ্যের বড় একটি অংশ ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছার আগেই নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে সৃষ্ট ঘাটতি আমদানিনির্ভরতা আরো বেড়ে যায় বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, একসময় ফলসহ কৃষিজ অনেক পণ্যের জন্য স্থানীয় উৎপাদনের ওপরই নির্ভরশীল ছিল বাংলাদেশ। এখন ফল আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। আবার আমদানীকৃত খাদ্যপণ্য সংরক্ষণেও যথাযথ ব্যবস্থাপনা দেখা যায় না। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা গুদামে অনেক খাদ্যপণ্য নষ্ট হয়ে যায়।

দুগ্ধ ও বিভিন্ন খাদ্যপণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এমএইচ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন মিন্টু এ বিষয়ে বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রধান খাদ্যশস্য ছাড়াও ডেইরি, দুগ্ধ, ব্রেড কিংবা মাংসজাতীয় খাদ্যের চাহিদাও বাড়ছে। নগরায়ণ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে মানুষের খাদ্যাভ্যাসেও প্রভাব পড়েছে। তবে দুগ্ধজাতীয় পণ্য উৎপাদনের জন্য যে পরিমাণ তৃণভূমি প্রয়োজন, সেটি বাংলাদেশের নেই। পোলট্রি ও পশুখাদ্যের দাম মানুষের আহার্য খাদ্যের চেয়েও অনেকাংশে বেশি হওয়ায় এখন আমদানিনির্ভরতা ছাড়া উপায়ও নেই বাংলাদেশের। এক দশক আগেও দেশে দুগ্ধজাতীয় পণ্যের আমদানি এক লাখ টনের কাছাকাছি ছিল। বর্তমানে সেটি দেড় লাখ টন ছাড়িয়েছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদাকে সামলে সরবরাহ নিশ্চিত করতে খামার ব্যবস্থাপনাসহ বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ছোট ছোট ব্যবসায়িক গ্রুপকে এ খাতে বিনিয়োগ ও আমদানিতে সুবিধা দেয়া জরুরি।

প্রতি বছর বিভিন্ন উৎসবের সময়ে দেশের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। একই চিত্র দেখা যায় আমদানি পণ্যের উৎস দেশগুলোর বাজার পরিস্থিতির সামান্য পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও। এসব ক্ষেত্রে বিশেষ করে গম, তেল ও পেঁয়াজের মতো নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে লাগামহীনভাবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশকেও (টিসিবি) তত্পরতা বাড়াতে হয়। প্রতি বছর শুধু বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়েই সংস্থাটির ব্যয় হচ্ছে ২ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকার মতো। আবার ওএমএসে চাল বিতরণসহ নানামুখী উদ্যোগ নেয়া হলেও বাজারে এসব কর্মযজ্ঞের শক্ত প্রভাব দেখা যায় খুব কম।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি বণিক বার্তাকে বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সবাই যদি একসঙ্গে কাজ করি, তাহলে খাদ্যপণ্যের বাজার ব্যবস্থাপনা সম্ভব। পণ্যের দাম বেড়ে গেলে টিসিবিকে কাজে লাগানো হয়। এ বছরও দেখা গেল কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে, যার কারণে টিসিবিকে কাজে লাগানো হয়েছে। এত বড় বাজারে টিসিবির ঢোকারই কথা না। কিন্তু দাম বেড়ে যাওয়ার কারণেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। ভবিষ্যতে সংকটকালে আমরা কীভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখব সে বিষয়ে সমন্বিতভাবে এগোতে হবে। এজন্য হয় টিসিবির সক্ষমতা বাড়াতে হবে, নয়তো বিকল্প কিছু করতে হবে। আকার বৃদ্ধি বিবেচনায় নিয়ে সবাই মিলে সমন্বিতভাবে ভালো বাজার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।

খাদ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই), নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, টিসিবি, প্রতিযোগিতা কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকরভাবে কাজে লাগানোর বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছেন নীতিনির্ধারকরা। তারা বলছেন, শুধু বাজার নিয়ন্ত্রণ নয়, সবার জন্য বিশুদ্ধ ও নিরাপদ খাদ্যের ব্যবস্থা করাটাও জরুরি।

জানতে চাইলে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, আমাদের খাদ্যবাজার অনেক বড়। ভোক্তা চাহিদা বেড়েছে। রুচি বেড়েছে, আয় বেড়েছে। আমাদের সমস্যা হলো প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসামগ্রীর বিশুদ্ধতা দেখা। প্রাথমিক পণ্যেরও বিশুদ্ধতার বিষয় আছে। অনেক সময় চাল কেটে সরু করা হয়। সব মিলিয়েই আমি মনে করি সংশ্লিষ্ট যে প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে উঠেছে, সেগুলোর কার্যকারিতা বাড়ানো অনেক বেশি প্রয়োজন। আমাদের অর্থনীতি বড় হচ্ছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। ভোগ ব্যয় বাড়ছে। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। মান নিয়ন্ত্রণের জন্য আছে বিএসটিআই। প্রতিযোগিতা কমিশন করা হয়েছে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার খাতিরে। বাজার যাতে কোনো গোষ্ঠীর কাছে আটকে না যায়, সে লক্ষ্যে এ প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখন আরো কার্যকর করা প্রয়োজন। বিশেষভাবে মান ও বিশুদ্ধতা দেখা, পর্যবেক্ষণ ও পরিবীক্ষণের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় শাস্তির ব্যবস্থা করাও জরুরি। এটা এখন করতেই হবে।

214 ভিউ

Posted ১২:৪১ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৪ এপ্রিল ২০২২

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com