কক্সবাংলা ডটকম(২৬ মে) :: সুদহার কমানোর বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ঘোষণার পর সঞ্চয়পত্র বিক্রির হিড়িক পড়েছে। গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে গিয়ে সঞ্চয়পত্র কেনার দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।
বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় সাম্প্রতিক সময়ে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি এমনিতেই অনেক বেশি। সুদহার কমানোর ঘোষণার পর তা আরও বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের ১০ মাসেই লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণেরও বেশি নিট বিক্রি হয়েছে। সুদহার কমানোর বিষয়ে গত রোববার অর্থমন্ত্রীর ঘোষণার পর গত চার দিনে বিক্রি ও পুনঃবিনিয়োগ ব্যাপক হারে বেড়েছে।
গত রোববার অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ঢাকা চেম্বারের নেতারা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সুদহার কমলেও এখনও বিনিয়োগের বড় প্রতিবন্ধকতা ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহার। সঞ্চয়পত্রে সুদহার বেশি থাকায় ঋণের বাজারে একটা অসামঞ্জস্যতা তৈরি হয়েছে। বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সঞ্চয়পত্র সুদহার নির্ধারণের দাবি জানান তারা।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, সঞ্চয়পত্র কেনার দীর্ঘ লাইন। সঞ্চয়পত্র কিনতে আসা রাবেয়া খাতুন জানান, বেসরকারি খাতের একটি ব্যাংকে মেয়াদি আমানতে তার ১৭ লাখ টাকা ছিল। আগামী জুলাইতে এ আমানতের মেয়াদ পূর্তি হবে। তবে সুদহার কমানোর বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের পর তড়িঘড়ি করে ওই আমানত ভাঙিয়ে এনেছেন। লাইনে দাঁড়ানো অন্য অনেকে তার মতোই তথ্য জানান।
বাজেট ঘাটতি মেটাতে প্রতি বছরই অভ্যন্তরীণ উৎসে ব্যাংকের পাশাপাশি সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ঋণ নেওয়ার একটি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে সরকার। ২০১০-১১ সালের দিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছেও যেতে পারত না সরকার। তখন ব্যাংক ও শেয়ারবাজারের দিকেই বেশি ঝুঁকতেন সঞ্চয়কারীরা। তবে শেয়ারবাজারে ব্যাপক ধস ও ব্যাংকের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২০১২ সালের শুরুর দিকে সঞ্চয়পত্রের সুদহার বাড়িয়ে দেয় সরকার।
ব্যাংকের আমানতের সঙ্গে ঋণের সুদহারও কমে সাম্প্রতিক সময়ে প্রথমবারের মতো সিঙ্গেল ডিজিটে নেমেছে। বর্তমানে ব্যাংক থেকে সরকার ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ সুদে স্বল্পমেয়াদি ঋণ পাচ্ছে। আর দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পাওয়া যাচ্ছে ৭ শতাংশের কম সুদে। তবে সঞ্চয়পত্র থেকে বিপুল পরিমাণের ঋণের কারণে এর সুফল পাচ্ছে না সরকার। চাহিদার চেয়ে সঞ্চয়পত্র থেকে বেশি অর্থ আসায় এবারে ব্যাংক থেকে সরকার যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছে, পরিশোধ করেছে তার চেয়ে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বেশি।
Posted ১২:৪৮ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৭ মে ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta