বুধবার ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বুধবার ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বাংলাদেশী কর্মরত অবৈধ অভিবাসীদের শর্তসাপেক্ষে বৈধতার সুযোগ দেবে মালয়েশিয়া

শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর ২০২০
649 ভিউ
বাংলাদেশী কর্মরত অবৈধ অভিবাসীদের শর্তসাপেক্ষে বৈধতার সুযোগ দেবে মালয়েশিয়া

কক্সবাংলা ডটকম(১২ নভেম্বর) :: মধ্যপ্রাচ্যের পর বাংলাদেশের অন্যতম বড় শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। দেশটিতে প্রায় ১২ লাখ বাংলাদেশী কর্মরত আছেন, যাদের বড় অংশই শ্রমিক। তবে বিভিন্ন কারণে তাদের উল্লেখযোগ্য অংশই অবৈধভাবে দেশটিতে অবস্থান করছেন। এবার শর্তসাপেক্ষে অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার।

১২ নভেম্বর এক বিশেষ বৈঠক শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজাহ বিন জায়নুদ্দিন।

জানা গেছে, বিশেষ ওই বৈঠকে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারাভানানও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, অবৈধ কর্মীদের বৈধকরণ প্রক্রিয়া ১৬ নভেম্বর শুরু হবে। বৈধকরণের এ প্রক্রিয়া চলবে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। বৈধকরণের প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করবে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ, শ্রম বিভাগ ও অন্যান্য সরকারি সংস্থা।

বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক এক গবেষণার তথ্য বলছে, মালয়েশিয়ায় অবৈধ হয়ে পড়া বিদেশী কর্মীর ৪১ শতাংশই বাংলাদেশী। মালয়েশিয়ার প্রায় ৩০ লাখ বিদেশী কর্মীর ওপর পরিচালিত জরিপের ভিত্তিতে গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। জরিপে অংশ নেয়া বিদেশী কর্মীর সাড়ে ১২ লাখ অবৈধভাবে সেখানে অবস্থান করছেন। সে হিসেবে মালয়েশিয়ায় প্রায় পাঁচ লাখ বাংলাদেশী কর্মী অবৈধভাবে রয়েছেন।

এর আগে গত বছর ১ আগস্ট থেকে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ অবৈধ প্রবাসীদের ফেরাতে ‘ব্যাক ফর গুড (বি-ফোর-জি)’ কর্মসূচির আওতায় সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার কার্যক্রম শুরু করে। এর মেয়াদ শেষ হয় গত ৩১ ডিসেম্বর। ওই সময় সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়ে অবৈধ হয়ে পড়া অনেক বাংলাদেশী দেশে ফেরেন। তবে এর পরও দেশটিতে রয়ে গেছেন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় যারা এখন অবৈধ হয়ে পড়েছেন। বেশির ভাগ অবৈধ শ্রমিক মালয়েশিয়ার বিভিন্ন হোটেল, রেস্টুরেন্ট, মার্কেটে কাজ করেন। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায়ই অভিযান ও ধরপাকড় চালানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ‘ব্যাক ফর গুড’ প্রোগ্রাম শেষ হওয়ার পর পরই বাদ পড়া ও প্রতারিত অবৈধ কর্মীদের বৈধতা প্রদানে মালয়েশিয়া সরকারের কাছে প্রস্তাব দেন বাংলাদেশের তত্কালীন হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম। এ নিয়ে তিনি দেশটির বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন ও কুয়ালালামপুর ত্যাগের আগে দেশটির সরকারি পর্যায়ে বৈঠকও করেন। ওই সময় মালয়েশিয়া সরকার অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতা দেবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।

এদিকে গত আগস্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জরিমানা দিয়ে এসব অবৈধ অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরার সুযোগ দেয় মালয়েশিয়া সরকার। জরিমানা দিয়ে নিজ দেশে ফেরার সুযোগ পেয়েছেন ছাত্র, পর্যটক ও ভ্রমণ ভিসায় গিয়ে অবৈধ হওয়া বিদেশীরা। তবে এ সুযোগ শুধু বাংলাদেশীদের জন্যই নয়, অন্যান্য দেশের অবৈধ হয়ে পড়া নাগরিকরাও এর আওতায় ছিলেন।

মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক খাইরুল দাজায়মি দাউদ গত আগস্টে কুয়ালালামপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মালয়েশিয়ায় যারা এক বছরের কম সময় অবৈধভাবে বসবাস করছেন, তারা ১ হাজার রিঙ্গিত ও যারা এক বছরের বেশি সময় ধরে অবৈধভাবে বসবাস করছেন তারা ৩ হাজার রিঙ্গিত জরিমানা দিয়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে জরিমানা দিয়ে বিশেষ পাস (স্পেশাল পাস) সংগ্রহ করতে হবে।

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে মালয়েশিয়ায় কর্মী রফতানি প্রায় বন্ধ রয়েছে। ২০১৭ সালে দেশটিতে যান ৯৯ হাজার ৭৮৭ জন কর্মী। পরের বছর যান প্রায় ১ লাখ ৭৬ হাজার কর্মী। তবে কর্মী রফতানির নামে দুদেশের মধ্যে গড়ে ওঠে একটি চক্র। বাংলাদেশী ১০ রিক্রুটিং এজেন্সির গঠিত ওই চক্র হাতিয়ে নেয় কয়েক হাজার কোটি টাকা। এ অভিযোগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশী কর্মী নেয়া বন্ধ হয়ে যায়। গত বছর দেশটিতে গেছেন মাত্র ৫৪৫ জন।

পুনরায় কর্মী রফতানি শুরু করতে গত বছর বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে উচ্চপর্যায়ের একাধিক বৈঠকেও কোনো ফল আসেনি। যদিও মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে রয়েছে কর্মীর চাহিদা, যা প্রতিনিয়তই দখলে নিচ্ছে ভারত, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া এমনকি চীনের কর্মীরাও।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্তকরণ ও প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রীর সঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর একটি বৈঠক গত ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৈঠকে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার পুনরায় বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্তকরণ, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে অনলাইন সিস্টেম চালু করা, কর্মী প্রেরণে রিক্রুটিং এজেন্টের সম্পৃক্ততা, পরবর্তী জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ সভা আয়োজন ও কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে আটকে পড়া বাংলাদেশী কর্মীদের মালয়েশিয়ায় প্রত্যাগমন প্রভৃতি বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।

বৈঠকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য শ্রমবাজার শিগগিরই উন্মুক্তকরণের বিষয়ে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী তার সম্মতি ব্যক্ত করেন। কভিড-১৯ পরিস্থিতি উন্নত হলে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এদিকে গত ২১ জানুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরে এসেছেন ৬ লাখ ২৪ হাজার ৭৪৩ জন প্রবাসী শ্রমিক। ফ্লাইট বন্ধ থাকায় যারা দীর্ঘ সময় আটকা ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ফ্লাইট বন্ধ হওয়ার পরও গত সাত মাসে (১ এপ্রিল-১১ নভেম্বর) দেশে ফিরে এসেছেন ২ লাখ ৩৫ হাজার ৪০৪ জন প্রবাসী বাংলাদেশী। তাদের মধ্যে মালয়েশিয়া থেকে ফেরত এসেছেন ১২ হাজার ৩৬৮ জন। যার মধ্যে ১১ হাজার ৮৬৯ জন পুরুষ ও ৪৯৯ জন নারী কর্মী।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক বলছে, মালয়েশিয়া ফেরত কর্মীদের প্রায় সবাই কাজ না থাকায় ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। আর ফিরে আসা কর্মীদের মধ্যে ৮৯৫ জনের পাসপোর্ট ছিল না। দূতাবাসের সহায়তায় আউটপাসের মাধ্যমে তাদের ফেরত আনা হয়েছে।

649 ভিউ

Posted ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর ২০২০

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com