শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ : যার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই

বুধবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮
481 ভিউ
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ : যার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই

কক্সবাংলা ডটকম(৫ ডিসেম্বর) :: ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীর বিচার দাবিতে আজও আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। তাদের সাথে যোগ দিয়েছেন অভিভাবকরাও।অরিত্রিকে ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা’দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে বুধবার আবারও সড়কে নামে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মেয়েরা।  বেইলি রোড শাখার গেটের সকাল থেকে সড়কে বসে পড়েছেন  শিক্ষার্থীরা। নানা ধরনের প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড  হাতে নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।

 অভিযোগের শেষ নেই

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, স্কুলটির প্রিন্সিপাল নাজনীন ফেরদৌস ও প্রভাতী শাখার প্রধান শিক্ষক জিন্নাত আরার স্থায়ী বহিষ্কার, গভর্নিং বডি বাতিল করা ও আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের উপযুক্ত আইনে বিচার করতে হবে। তাদের দাবি বাস্তবায়নে শিক্ষামন্ত্রীর দেওয়া আশ্বাস তিন দিনের মধ্যে বাস্তবায়িত না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

সাত বছর আগে ভিকারুননিসার শিক্ষক পরিমল জয় ধরের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ শুরুতে পাত্তা দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এক পর্যায়ে বিক্ষোভে নামে শিক্ষার্থী অভিভাবকরা। চাপের মুখে ওই শিক্ষকের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেয় সহকর্মীরা।

এই ঘটনায় সাজা হয়েছে পরিমলের। তিনি এখন কারাগারে। অথচ তাকে বাঁচানোর হেন চেষ্টা নেই করেননি তৎকালীন অধ্যক্ষ হোসনে আরা। তবে শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলনে পদত্যাগে বাধ্য হন তিনি।

রাজধানীতে মেয়েদের যতগুলো স্কুল আছে তার মধ্যে বেইলি রোডে ভিকারুননিসায় ভর্তি করতে অভিভাবকদের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। আর এই অতিরিক্ত চাহিদার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নানা সময় স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ ছাত্রী এবং অভিভাবকদের।

রবিবার অরিত্রী অধিকারী নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় ফুঁসে ওঠা শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা হাজারো অভিযোগ তুলছেন।

চাপের মুখে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ক্ষমা চেয়েছেন, তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন। আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও। তবে এর আগে নানা সময় দেখা গেছে, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে নানা অনিয়মের সেভাবে প্রতিকার মেলেনি পরিমলের বিষয়টি ছাড়া। এই ঘটনায় অবশ্য ফৌজদারি মামলা হয়ে যাওয়ার পর বিষয়টি অন্যদিকে মোড় নেয়।

এবার অভিযোগ উঠেছে, অরিত্রীর বাবাকে ডেকে এনে ভিকারুননিসার প্রভাতী শাখার প্রধান জিনাত আরা অপমান করেছেন। এক পর্যায়ে অরিত্রীর বাবা পায়েও ধরেন জিনাতের। তবু তার মন গলেনি।

তুমুল বিক্ষোভের মধ্যে জিনাতকে সাময়িক বরখাস্তের কথা প্রথমে নাজনীন জানিয়েছিলেন সাংবাদিকদের। পরে ফোনে ঢাকা টাইমসকে জানান, বরখাস্ত নয়. জিনাতকে কর্মবিরতি দেয়া হয়েছে।

অভিযোগ আছে, এই স্কুলটিতে বিভিন্ন সময় ছাত্রীদের ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালান শিক্ষকরা। আর শিক্ষার্থীরা নানা প্ল্যাকার্ডে সেই সব কথাও লিখে দিয়েছে।

অভিভাবকরাও সাংবাদিকদের কাছে মেলে ধরেছেন অভিযোগের ডালি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলটির এক অভিভাবক বলেন, ‘স্কুলটি যেই সম্মান আর মর্যাদা নিয়ে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, এখন তার সিকি ভাগও নেই। শুধু নামেই চলছে। এখন শিক্ষকরা হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গির। তারা স্কুলে পাঠদানের চেয়ে কোচিংয়ে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। ঠুনকো বিষয় নিয়েও ছাত্রীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন শিক্ষকরা। কথা কথায় গালি দেন।’

কিছু দিন আগে এক ছাত্রী বাসায় এসে তার অভিভাবককে বলেছে সে আর স্কুলে যাবে না। কারণ জানতে চাইলে দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রী জানান, এক ম্যাডাম তাকে পাগল-ছাগলের বাচ্চা বলে গালি দিয়েছেন।

রেজাউল করিম নামে আরেক অভিভাবক বলেন, ‘খুব শখ করে মেয়েকে এই স্কুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু কিছু কিছু শিক্ষিকার দুর্ব্যবহারের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি আমরা।’

এই অভিভাবক জানান, ‘আগে এই স্কুলটিতে রেজাল্ট হতো ঈর্ষা করার মতো। কিন্তু এখন ফলাফলও ভালো না। শিক্ষকদের আচরণের কারণে মনমরা হয়ে থাকে ছাত্রীরা।’

এই অভিভাবকের অভিযোগ, পরীক্ষার প্রশ্ন যে পদ্ধতিতে আসে সে পদ্ধতিতে শ্রেণিকক্ষে পড়ানো হয় না। সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে প্রশ্ন করা হয়।

অভিভাবকরা জানান, স্কুলটিতে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকেই শিক্ষিকারা ছাত্রীদের তাদের কাছে কোচিং করার জন্য প্রলুব্ধ করেন। তৃতীয় শ্রেণি থেকে তা তীব্র আকার ধারণ করে।

তৃতীয় শ্রেণিতে উঠে একাধিক শিক্ষিকার কাছে কোচিং না করলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় নম্বর কম দেয়া হয়। ক্লাসে না পড়িয়ে কোচিংয়ে সাজেশন দেয়া হয়। যারা কোচিং করে তারা ভালো ফলাফল করে। ফলে অভিভাবকরা অনেকটা বাধ্য হয়েই সন্তানদের কোচিংয়ে দেন।

অধ্যক্ষের দেখা পাওয়া দুষ্কর

খুব সহজে স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌসের দেখা পায় না ছাত্রীরা। কোনো বিষয়ে অধ্যক্ষের কাছে যেতে ছাত্রী এবং অভিভাবকদের বেশ বেগ পেতে হয়।

এক ছাত্রীর অভিভাবক বলেন, ‘ম্যাডামের (অধ্যক্ষ) সঙ্গে দেখা করতে গেলে পদে পদে কৈফিয়ত দিতে হয়। কেন যাবেন, কী বিষয়, কী আলাপ তার সঙ্গে…ইত্যাদি কৈফিয়ত দিয়েও অনেক সময় তার দেখা পাওয়া যায় না। এমনকি ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও সাক্ষাৎ মেলে না তার।’

আসাদুজ্জামান নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষকই খারাপ না। তবে কিছু শিক্ষক আছেন যাদের আচরণ খুবই উগ্র। সামান্য কারণে এরা যখন তখন রেগে যায়। অভিভাবকদের ডেকে পাঠান, অপমান করেন। ভিকারুননিসার মতো একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এমন আচরণ কাম্য নয়।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস বলেন, ‘আমার সঙ্গে দেখা করতে আসলে আমি দেখা করি। তবে মিটিংয়ে থাকলে তখন হয়তো দেখা হয় না।’

ছাত্রীদের সঙ্গে অশালীন আচরণের বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন, ‘আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ না আসলে আমরা কিছু করতে পারি না।’

জানতে চাইলে স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার বলেন, ‘দায়িত্ব নেয়ার সময়কালে আমার কাছে অভিযোগ করেছে কিন্তু প্রতিকার পায় নাই এমন ঘটনা ঘটেনি।’

অরিত্রীর উদাহরণ দেয়া হলে আশরাফ বলেন, ‘আমার কাছে অরিত্রীর বাবা এসেছিলেন। বলেছেন তার মেয়ে পরীক্ষা দিতে পারছে না। আমি সবকিছু নোট নিয়ে পরদিন স্কুলে যাব বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে-এমনটা আমি অরিত্রীর বাবাকে জানিয়েছি। এর কিছুক্ষণ পরই সে বলল অরিত্রী নেই। সে ফাঁস নিয়েছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে গেছি। আমার যেটা করণীয় সেটা করেছি।

“ঘটনা শোনার পরই আমি একটা সভা ডেকে অভিযুক্ত শিক্ষককে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছি। অধ্যক্ষকেও দিয়েছি। আর বলেছি এ রকম ঘটনা আমরা যেন আর না দেখি। তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর বাকি ব্যবস্থা আমরা নেব।”

481 ভিউ

Posted ১১:৪৯ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com