রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদকপাচার ও সন্ত্রাস বন্ধ করতেই হবে

সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২
254 ভিউ
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদকপাচার ও সন্ত্রাস বন্ধ করতেই হবে

কক্সবাংলা ডটকম(২৭ ফেব্রুয়ারি) :: লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। কিন্তু এখন অতিথিদের জন্য অস্বস্তিতে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে প্রায়ই বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। দুর্বল শাসন ও নিরাপত্তা পরিকাঠামোর সুযোগ নিচ্ছে এলাকায় সক্রিয় সমাজবিরোধী চক্রগুলো। মাদক ব্যবসায়ীরা এই এলাকাকে মাদক চোরাচালানের করিডোর করে রেখেছে।

সব মিলিয়ে কক্সবাজার জেলায় প্রায় ১২ লাখ শরণার্থী রয়েছে।আর উখিয়ার কুতুপালং বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শরণার্থী শিবির, যেখানে এখন প্রায় ৮৮০,০০০ রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছে। এদের অর্ধেকই নাবালক। বেশিরভাগ ক্যাম্প দক্ষিণ-পূর্ব কক্সবাজারে অবস্থিত, যা বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী। এ দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে ২৭০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। ক্যাম্প ও সীমান্ত এলাকা মাদক পাচারের করিডোরে পরিণত হয়েছে।

পার্বত্য অঞ্চলের সীমান্তবর্তী শিবিরগুলো অত্যন্ত দুরূহ-দুর্গম এবং দুর্বলভাবে সুরক্ষিত। ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, পাচার ও খুনের ঘটনা বাড়ছে। আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) একটি গুরুতর নিরাপত্তা হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। ২০১৬ সালে, এই আরসা মিয়ানমারের তিনটি পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায়।

অস্বাস্থ্যকর বাসস্থান, সঠিক খাদ্য ও স্যানিটেশনের অভাবের পাশাপাশি রোহিঙ্গারা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। প্রায় ১০-১৫টি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। মাদক ব্যবসায়ী ও গ্যাং থেকে নিরাপত্তা হুমকির সৃষ্টি হচ্ছে। ২০২১ সালে সুপরিচিত রোহিঙ্গা নেতা মহিব উল্লাহর হত্যা রোহিঙ্গাদের মধ্যে ক্ষোভের ও উৎকণ্ঠার জন্ম দেয়। আরএসএ নেতা আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনীর ভাই মোহাম্মদ শাহ আলী অস্ত্র, মাদকসহ বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

মুহিবউল্লাহ, আরিফউল্লাহ, আবদুর রহিম, নূরে আলম, হামিদ উল্লাহর মতো নেতাদের হত্যার পর ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা আতঙ্কে রয়েছে। আরসার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতাকে হত্যা এবং মূল কারণ বিমুখ করার অভিযোগ রয়েছে।

উদ্বেগের বিষয়, আরসা শুধু অস্ত্রের ওপর নির্ভর করছে না, বিভিন্ন উপায়ে সংগঠনটি শক্তি অর্জন করছে। তাদের অনুসারীরা আরসার উদ্দেশ্য প্রচার করছে, তাদের নেটওয়ার্ক প্রসারিত করছে এবং সহানুভূতি অর্জন করছে। শুধু গত বছরই রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে হাজারেরও বেশি অভিযোগ হয় বাংলাদেশ পুলিশের কাছে।

কক্সবাজারের জনবসতি কমাতে উদ্বাস্তুদের স্থানান্তরিত করা হচ্ছে দ্বীপ অঞ্চল ভাসানচরে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের একটি সম্প্রদায় এই স্থানান্তরের ঘোরতর বিরোধী। বলার অপেক্ষা রাখে না, ভাসানচরে স্থানান্তর হলে দুস্কৃতিদের মাদক ব্যবসায় মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। উপরন্তু, কক্সবাজারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা সহজ হবে।

বাংলাদেশের আশপাশের স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ও মাদক ব্যবসায়ীরা রোহিঙ্গাদের এই পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।

মিয়ানমারে গণহত্যা নিয়ে চীন বরাবরই নীরব। এটা স্পষ্ট, তারা মিয়ানমারকে বাঁচাতে ভেটো দেবে। এমনকি ওআইসি রাষ্ট্রগুলোও রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে আগ্রহ দেখায়নি। এদিকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের মাদক চোরাচালানের মতো কাজে ব্যবহার করার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এই দুটি বিষয় শরণার্থীদের আবাসস্থলের নিরাপত্তাকে দুর্বল করে দিয়েছে।

নানা আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে অবস্থান করা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দ্রুত ও নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বারবার আবেদন করেছেন। গত বছর ২৩ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাবিষয়ক নবম মস্কো সম্মেলনে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মর্যাদাপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার জন্য বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানান।

নিউইয়র্কে মিয়ানমারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্গেনারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার মতে, যদি প্রত্যাবাসন অনিশ্চিত থাকে বা বিলম্বিত হয়, তাহলে তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাবে এবং আশপাশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে। বলাই বাহুল্য, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্পর্ক শীতল ও বৈরিতার। মাদকের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে না নিলে বাংলাদেশকে চড়া মূল্য দিতে হতে পারে। স্থানীয় সশস্ত্র সংগঠনগুলো অগোচরে তাদের ব্যাপ্তি বাড়াবে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া যেহেতু অনিশ্চিত, তাই প্রশাসনকে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে মাদক পাচার নির্মূল করতে বিশেষ নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে।

লেখক : অয়নাংশ মৈত্র

 সাংবাদিক ও কূটনীতি গবেষক

254 ভিউ

Posted ১:৩৫ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com