কক্সবাংলা ডটকম(২৬ জুলাই) :: মিডিয়া জগতে লুকিয়ে বাঁচিয়ে প্রেম, বিয়ের গুঞ্জন, বিয়ে, অতঃপর বিচ্ছেদ এ ধরনের ঘটনা নতুন কিছু নয়। শুরু থেকেই ঘটে আসছে। এখনকার মতো এতটা সচরাচর দেখা বা শোনা যায়নি আগে কখনও।
তবে শুধু মিডিয়া জগতের তারকা দম্পতিই নয়, পুরো দেশেই আনুপাতিক হারে বাড়ছে বিয়ে-বিচ্ছেদের মতো ঘটনা। পরকীয়া, সম্পর্কে বিশ্বাস-অবিশ্বাস, সেক্রিফাইস, ঠিকমতো সময় না দেয়া। এসব কারণেই বাড়ছে বিচ্ছেদ।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, শোবিজ দম্পতিদের বিচ্ছেদেরও একই কারণ। চলতি বছর শেষ হতে না হতেই দেশে তারকা দম্পতির বিয়ে-বিচ্ছেদ ঘটনা ঘটেছে তিনটি। তারও আগে রয়েছে তিনটির মতো বিয়ে-বিচ্ছেদ।
এ বছর সদ্য ছাড়াছাড়ি হওয়া দম্পতিদের মধ্যে রয়েছেন- কণ্ঠশিল্পী হাবিব ওয়াহিদ-রেহান চৌধুরী, অভিনেতা নিলয় আলমগীর-আনিকা কবির শখ, তাহসান খান-মিথিলা। টিভিতে রোমান্টিক হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এসব জুটির বিয়ে-বিচ্ছেদ হওয়ায় তরুণ সমাজের মধ্যে এর প্রভাব পড়ছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও।
হাবিব ও রেহান :
নানা গুঞ্জনের পর ১৯ জানুয়ারি হাবিব তার ফেসবুক পেজ থেকে রেহানের সঙ্গে বিচ্ছেদের কথা স্বীকার করে নেন। কিন্তু প্রায় পাঁচ মাস পর রেহান হাবিবের সঙ্গে বিচ্ছেদ নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। যেখানে তিনি বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে বলেন, সংসার ভেঙে গেছে হাবিব এবং মডেল অভিনেত্রী তানজিন তিশার প্রেমের কারণে। এক কথায় বলতে গেলে পরকীয়ার রেশেই বিচ্ছেদ হয়েছে হাবিব ও রেহানের। এর আগেও বিয়ে-বিচ্ছেদ হয়েছে হাবিবের। একাধিক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগ উঠে আসছে আগে থেকেই তার বিরুদ্ধে।
বিয়ের পরপরই অনেকে মন্তব্য করে বসেছেন এ বিয়ে টিকবে না বেশি দিন। এ মন্তব্যের পেছনে যথেষ্ট কারণও ছিল। একে অপরের প্রতি আস্থাহীনতা বা বিশ্বাস। নানা গুঞ্জন, অভিমান, বন্ধুত্ব, প্রেম থেকে পরে ভালোবাসায় রূপান্তরিত হয় নিলয়-শখের জীবন। কিন্তু বিয়ে টিকছে না তাদের। আলাদা থাকার পর ডিভোর্সের সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তারা।
এ ডিভোর্সের পেছনে একে অপরের প্রতি সন্দেহ। কাজের ক্ষেত্রে বাধাসহ পারিবারিক সীমাবদ্ধতা এর জন্য দায়ী। এছাড়া পরকীয়া এবং তৃতীয় কোনো পক্ষের জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বিলে বিশেষ সূত্রের বরাতে পাওয়া খবরে জানা গেছে।
তাহসান ও মিথিলা :
এ বছর বিয়ে-বিচ্ছেদের তালিকায় সব শেষে শামিল হলেন কণ্ঠশিল্পী তাহসান খান ও মিথিলা। প্রায় মাস তিনেক আলাদা থাকার পর ২০ জুলাই তাহসান-মিথিলা দু’জনের সিদ্ধান্তে আনুষ্ঠানিকভাবে তাহসান তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে বিয়ে-বিচ্ছেদের কথা জানিয়ে দেন।
জানা গেছে, দু’জনের মধ্যে নাকি অমিলটাই বেশি। মিথিলা এক্সট্রোভার্ট তাহসান ইন্ট্রোভার্ট। মিথিলা কথা বেশি বলতে পছন্দ করে তাহসান কম। মিথিলা আড্ডা, বন্ধুবান্ধব বেশি পছন্দ করে আর তাহসান এগুলো এড়িয়ে চলতে পছন্দ করে। এছাড়াও তাদের বিয়ে হয়েছে অনেক আগে। তখন তারকাখ্যাতি ছিল না। তারকা বনে যাওয়ার পর সম্পর্ক শিথিল হয়ে আসে।
অন্যদিকে বিশেষ সূত্রের বরাতে জানা গেছে, তাদের সম্পর্ক ভাঙার পেছনে তৃতীয় কোনো পক্ষ রয়েছে। বিকল্প কারও সঙ্গে সম্পর্কের কারণেই এ পরিণতি তাদের।
সারিকা-মাহিম
২০০৬ সালে মডেলিং আর ২০১০ সালে ‘ক্যামেলিয়া’ নাটকের মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করা সারিকারও ডিভোর্স হয়েছে ।ভীষণ সংসারী ও স্বামী ভক্ত হিসেবে মিডিয়া পাড়ায় চর্চা ছিল এক সময়ের আলোচিত মডেল ও অভিনেত্রী সারিকার। তারপর ২০১৪ সালের আগস্টে ব্যবসায়ী মাহিম করিমের সঙ্গে প্রেম করে হঠাৎ করেই বিয়ের কাজটি সেরেছিলেন সারিকা। বিয়ের এক বছরের মাথায় সারিকার কোলজুড়ে আসে কন্যাসন্তান। বিয়ের পর থেকেই নাটক মডেলিং সব বাদ দিয়ে শ্বশুর বাড়ি আর সন্তান নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন সারিকা। আর কখনও মিডিয়ায় ফিরবেন না এরকম আশঙ্কাও ছিল সারিকাকে নিয়ে তাই হঠাৎ করেই সারিকার ঘর ভাঙ্গা একদম বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত বিধল সারিকা ভক্তদের কাছে।
জানা যায় স্বামী মাহিমের নির্দেশ অমান্য করে সারিকার হঠাৎ শোবিজে ব্যস্ত হয়ে পড়াই বিয়ে বিচ্ছেদের কারণ!এখন একমাত্র মেয়েকে নিয়ে তার মায়ের সঙ্গে ধানমন্ডির বাসায় উঠেছেন। উল্লেখ্য মাহিমের সাথে বিয়ের আগে নিরবের সাথে সারিকার প্রেমের সম্পর্ক ছিল ।সেই সম্পর্ক নিয়েও মিডিয়া পাড়ায় প্রতিনিয়ত চর্চা চলত।
মোনালিসা-ফাইয়াজ শরীফ
জনপ্রিয় মডেল, অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী মোজেজা আশরাফ মোনালিসা ২০১২ সালের জুনে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ফাইয়াজ শরীফের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। একই বছরের ম্যাজিক ডে ১২.১২.১২তে ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টে মোনালিসা ও ফাইয়াজের বিবাবহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।
হৃদয়-সুজানা
হৃদয় খান প্রায় চার বছর ধরে প্রেম করে গত বছরের ১ আগস্ট বিয়ে করেন সাত বছরের বড় সুজানাকে। পত্র-পত্রিকা আর টিভির সামনেও স্বগর্বে নিজের প্রেমের কথা, ভালোবাসার কথা বলেছেন হৃদয় খান।
নাদিয়া-শিমুল
শিমুল-নাদিয়া ২০০৩ সালে পরস্পরের প্রেমে পড়েন। দীর্ঘদিন প্রেমের পর ২০০৮ সালে তারা বিয়ে করেন। তবে ২০১৪ সালের মাঝামাঝিতে তাদের বিচ্ছেদের গুঞ্জন ওঠে। কিন্তু গণমাধ্যমের কাছে বরাবরই তা গোপন রেখেছেন। সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানান নাদিয়া। অবশ্য এবছর অভিনেতা নাইমকে বিয়ে করেন এ অভিনেত্রী।
হিল্লোল-তিন্নি
মিডিয়াপাড়ায় হিল্লোল-তিন্নির বিয়ে বেশ আলোচিত ছিল। এটাও ছিল ভালোবাসার বিয়ে। তিন্নি ধর্মান্তরিত হয়ে মা-বাবাকে ছেড়ে হিল্লোলের কাছে চলে আসেন। এই দম্পত্তির ঘর আলো করে আসে এক কন্যা সন্তান। তবে এই তারকা দম্পত্তির সংসারও টেকেনি। তিন্নির প্রতি মাদক ও পরপুরুষের আসক্তির অভিযোগ তোলেন হিল্লোল। এ নিয়ে দু’জনই দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ-পাল্টা-অভিযোগ তোলেন।
পার্থ বড়ুয়া-শ্রাবন্তী
ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন সোলসখ্যাত ব্যান্ড তারকা পার্থ বড়ুয়া এবং অভিনেত্রী শ্রাবন্তী। খুব বেশিদিন সেই প্রেম স্থায়ী হয়নি তাদের।
বাঁধন-মাশরুর হোসেন সিদ্দিকী :
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাশরুর হোসেন সিদ্দিকীর সঙ্গে আজমেরী হক বাঁধনের বিয়ে হয়েছিল ২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। বিয়ের পাঁচ মাস পরই তাদের বিচ্ছেদ হয়। এ প্রসঙ্গে গনমাধ্যমকে বাঁধন বলেন, ‘আমার আর মাশরুরের আলাদা থাকার বিষয়টা আমি চাইনি কেউ জানুক। তবে আমার পরিবার, আত্মীয়স্বজন, কাছের মানুষরা অনেকে বিষয়টা জানত। আমি চাইনি আমার মেয়ের মনে এর প্রভাব পড়ুক। কারণ, আমাদের আলাদা থাকার কারণ গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশ হলে আমার মেয়ে সায়রাকে অনেকেই এ বিষয়ে প্রশ্ন করত। তবে স্বামীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদ হয়েছে কি না জানতে চাইলে এ বিষয়ে এখনো বাঁধন সরাসরি কথা বলেননি। শুধু বলেছেন তারা আলাদা থাকছেন। এদিকে বাঁধনের বিচ্ছেদ অনেক আগে হলেও বছরের একদম শেষে এসেই তা গণমাধ্যমে প্রকাশ করেন তিনি।
Posted ২:৪৫ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৬ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta