শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বাংলাদেশকে কি ভারতের কাছে ছেড়ে দিচ্ছে চীন ?

বৃহস্পতিবার, ০৭ জুন ২০১৮
487 ভিউ
বাংলাদেশকে  কি ভারতের কাছে ছেড়ে দিচ্ছে চীন ?

আফসান চৌধুরী( দক্ষিণ এশিয়া এবং এর প্রান্তিক এলাকাগুলোতে ভারত ও চীনের মধ্যে অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে। কিন্তু ব্যস্ত ২০১৭ পার করে দুই দেশই এখন একটু নিঃশ্বাস নিতে ব্যস্ত। তবে, কৌশলগত এই পরিবর্তনে এখনও সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে চীন। বাংলাদেশে বড় রাজনৈতিক প্রভাব বজায় রাখার জন্য ভারতকে ছাড় দিতে প্রস্তুত তারা।

নেপাল, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ এবং পাকিস্তানকে নিজের বন্ধু বানানোর মধ্য দিয়ে বেশ কতগুলো অর্জন হয়ে গেছে চীনের। ভারত যদি এ অঞ্চলে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে, চীনের তাতে আপত্তি নেই। স্বাচ্ছন্দ্যের কোন জায়গা না থাকায় দীর্ঘ মেয়াদে ভারত হয়তো খুব বেশি বিচলিত হয়ে যেতে পারে, বিশেষ করে বাংলাদেশের ২০১৮ সালের নির্বাচন যেহেতু এগিয়ে আসছে।

চীন: বিশ্ব এবং প্রতিবেশ

ইস্যু ছাড়া চীন নেই। ওবিওআর নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে তারা, কিন্তু যতটা সাড়া পাওয়ার আশা করেছিল তারা, ততটা মেলেনি। এতে জড়িত অধিকাংশ দেশই রেখে ঢেকে উৎসাহ দেখাচ্ছে। তবে ছোট দেশগুলো বিশ্বের তিন মেরু চীন-রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বিতা সম্পর্কে অবগত। অনেক ছোট দেশ একত্র হয়ে সমস্বার্থ ও সম্পদের নিজস্ব গ্রুপ গড়ে তোলার চেষ্টা করছে এবং যে কোন একটি শক্তির কাছে দায়বদ্ধ হতে তারা অনিচ্ছুক।

পুরনো আমলের শীতল যুদ্ধ এখন বিশেষ করে তেল সমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রূপ নিয়েছে। এতে বাণিজ্য উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে, যেমন ইইউ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য এবং শুল্ক দ্বন্দ্বের কারণে প্রথাগত প্রাচ্য-পাশ্চাত্য সমীকরণ দুর্বল হয়ে পড়ছে।

যেখানে কোন মুনাফা নেই, সেখানে ভূ-রাজনৈতিক খেলায় অংশ নিতে রাজি নয় চীন। তাই মধ্যপ্রাচ্যে তাদের ভূমিকা সীমিত। তাছাড়া ভূমি সম্প্রসারণেরও ইচ্ছা নেই তাদের। অন্যদিকে, যেখানে চীন অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যে, সেই এশিয়াতে (দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া উভয় জায়গাতেই) তারা আরও শক্তিশালীভাবে আবির্ভূত হতে চায়।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপারে চীন অবশ্য সতর্কভাবে এগুতে চায়। তারা জানে যুক্তরাষ্ট্রের এ অঞ্চলে কোন স্থানীয় ঘাঁটি নেই। সে কারণেই প্রশান্ত এলাকায় প্রতিবেশীদেরকে উত্যক্ত করার যে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, তা নাকচ করে দিয়েছে চীন। তবে, এ অঞ্চলের দেশগুলোর সাধারণ অর্থনৈতিক মান উঁচু পর্যায়ের তার চাপ প্রয়োগের মাত্রাটা এখানে সীমিত এবং চীন এ বাস্তবতাটা মেনে নিয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার ব্যাপারে অতটা সতর্ক নয় চীন।

চীন: মুনাফার ব্যাপারে হাঁ, রোহিঙ্গা মধ্যস্থতায় না

এ মুহূর্তে ভারতকে বাদ দিলে বাংলাদেশই দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ যার সাথে চীনের ততটা সুসম্পর্ক নেই। রোহিঙ্গা সঙ্কট এবং এতে চীনের ভূমিকাই এখানে প্রধান কারণ। মিয়ানমারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হলো চীন, তাই ঢাকায় তাদের স্বার্থ কম। চীন এ শিক্ষা পেয়েছে যে, এমনকি মিয়ানমারের মতো ছোট খেলোয়াড়রাও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ছোট দেশগুলোর দিকে এখন আরেকটু সতর্কতার সাথে তাকাচ্ছে চীন, বিশেষ করে চীন কিছুটা মধ্যস্থতার চেষ্টার পরও জাতিগত নিধনের বিষয়টা গোপন থাকেনি।

তাই চীন বাংলাদেশে যদি খুব বেশি জড়িয়ে না পড়ে, সেক্ষেত্রে এখানে ভারতের জড়িয়ে পড়া নিয়ে খুব বেশি সমস্যা দেখছে না তারা। কারণ বাংলাদেশে চীনের প্রভাব বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে ভারত। ভারত জানে বাংলাদেশ তাদের কাছে ক্রমেই আরও মূল্যবান হয়ে উঠছে কারণ তাদের মূল ভূখণ্ডের সাথে উত্তর পূর্বাঞ্চলের সংযোগ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। মিয়ানমারের ভেতর দিয়ে সড়ক নির্মাণের ব্যাপারে তাদেরকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে ভারত। বাংলাদেশই সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য ট্রানজিট সরবরাহকারী হতে পারে। আর তাছাড়া ভুটানের দোকলাম করিডোরের উপরও চীনের আগ্রহের দৃষ্টি পড়েছে।

ভুটান ও চীন যদি অদূর ভবিষ্যতে হাত মেলায়, তাহলে ভারতের উদ্বেগ আরও বাড়বে এবং বাংলাদেশ নিয়ে তারা কোন ঝুঁকি নেবে না।

চীনের কাছে বাংলাদেশ এ মুহূর্তে কৌশলগতভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনীতির বাইরে বাংলাদেশে অন্য কোন ধরনের উপস্থিতি বাড়ালে মিয়ানমারের সাথে দূরত্ব বাড়তে পারে এবং চীন সেটা করতে চায় না। বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে ভারসাম্য রাখার অসুবিধাজনক অবস্থান এড়িয়ে চলতে চায় চীন। অর্থ এবং মুনাফাকেই গুরুত্ব দেয় তারা।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ অংশীদারিত্ব নিয়ে প্রতিযোগিতায় চীন জিতে গেছে। ২০১৮ সালের জন্য হয়তো তাদের ক্ষুধা মিটে গেছে। বাংলাদেশ স্টাইলে ব্যবসা করাটাও তারা ভালোই শিখে গেছে। এখানে অবকাঠামো খাতে উচ্চ বিনিয়োগ, উচ্চ মুনাফা এবং নিম্ন পর্যায়ের স্বচ্ছতার মধ্যে বিনিয়োগ করার নীতিও তাদের ভালোভাবেই জানা হয়ে গেছে।

‘প্রেডিকটেবল’ ও স্থিতিশীল থাকতে হলে বাংলাদেশকে প্রয়োজন ভারতের

ভারত তাই বাংলাদেশকে নিয়ে অনেকটাই স্বাচ্ছন্দ্যে রয়েছে কারণ এখানে যুদ্ধ না করে হাত গুটিয়ে নিয়েছে চীন। সে কারণেই মাঠ এখানে ভারতের জন্য ফাঁকা এবং ওয়াক-ওভার পেয়ে ভারত তাই খুশি। সবারই এখানে জয় হয়েছে।

ভারতের সমস্যা হলো বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, যেটা দীর্ঘ সময় বজায় ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক মাদক বিরোধী যুদ্ধ এবং ক্রসফায়ারের কারণে তারা বিচলিত হতে শুরু করেছে। বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল তারা চায় না। তারা জানে আওয়ামী লীগ বিএনপির চেয়ে ভালো এবং দল ও সরকারের সব পর্যায়েই তারা সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে।

তবে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার কাঠামোগত সীমাবদ্ধতার ব্যাপারে তারা অজ্ঞ নয়। বিএনপির উপরে তারা আওয়ামী লীগকে প্রাধান্য দেয় কারণ এটা অনেক বড় দল, অনেক যোগাযোগ রয়েছে তাদের, গত এক দশক ধরে ক্ষমতায় রয়েছে তারা এবং ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কৌশলের ব্যাপারে আস্থাবান মিত্র হিসেবে ভারতের সাথে রয়েছে তারা।

এই স্বার্থের কারণেই – ভারত যেটা রক্ষা করতে চায় – এবং ক্ষমতার দ্বন্দ্বে চীন কৌশলগত কারণে এখান থেকে পিছু হটায় ভারত স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। তাই ভারত খুশি হবে যদি আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক আত্মহত্যা করে না বসে এবং নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত মসৃণভাবে চালিয়ে নিতে পারে। কারণ এখানে কি ঘটবে, আগাম কোন কিছুই বলা যায় না, যদিও অনেকে তেমনটাই ভাবতে চায়।

487 ভিউ

Posted ১১:০৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৭ জুন ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com