কক্সবাংলা ডটকম :: জাপানের চন্দ্রযান মুন স্নাইপার চাঁদের বুকে অবতরণ করেছে। বিশ্বের পঞ্চম দেশ হিসেবে স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১২টা ২০ মিনিটে জাপানি চন্দ্রযানটি চাঁদের মাটিতে অবতরণ করে।
খবর রয়টার্সের।
এর আগে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতের চন্দ্রযান চাঁদের বুকে সফলভাবে অবতরণ করেছিল। সবশেষ গত বছরের আগস্টে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করেছিল ভারতীয় চন্দ্রযান-৩।
শুক্রবার জাপানের অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি( JAXA) চাঁদের মাটিতে চন্দ্রযানের সফল অবতরণ করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে ।
জাপানের মহাকাশ সংস্থা (জেএএক্সএ) জানিয়েছে, তাদের চন্দ্রযান মুন স্নাইপারের ল্যান্ডার স্থানীয় সময় শনিবার রাত প্রায় ১২টা ২০ মিনিটে চন্দ্রপৃষ্টে অবতরণ করেছে। তবে এর সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি এখনো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন।
বিশ্বের অন্যান্য চন্দ্রযানের ল্যান্ডার টার্গেটকৃত এলাকার কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে অবতরণের চেষ্টা করে। তবে জাপানের ল্যান্ডারটি ১০০ মিটার এলাকার মধ্যে অবতরণের চেষ্টা করেছে।
এটা একেবারে পিনপয়েন্ট ল্যান্ডিং। মানে হালকা পালকের মতো গিয়ে যেখানে নামার কথা একেবারে সেখানে গিয়েই অবতরণ। এবার চাঁদের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করবে জাপান। চাঁদ কীভাবে তৈরি হল সেটা নিয়েও গবেষণা করবে এই স্নাইপার। ২০ মিনিটের রূদ্ধশ্বাস সময়। গোটা জাপান কার্যত অপেক্ষা করছিল এই সময়টার জন্য।
সেই সময়তেই চাঁদের মাটিকে নেমে এল জাপানের চন্দ্রযান। মাত্র ১ মিনিট দেরিতে ল্যান্ডিং করেছে এই চন্দ্রযান। জাপানের মুন স্নাইপার। নাম দেওয়া হয়েছে SLIM।
তিনটে ধাক্কায় চাঁদের মাটিতে নেমে আসে এই চন্দ্রযান। এই সময়ের মধ্য়ে এই চন্দ্রযান অনুভূমিক দিক থেকে উল্লম্বের দিকে চলতে থাকে। এরপর চন্দ্রযানে থাকা বিশেষ সফটওয়ার দিয়ে নামার জায়গাটি চিহ্নিত করা হয়।
জাপানি সংস্থাটি বলছে, চাঁদের পাহাড়ি এলাকায় গবেষণা কাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে মুন স্নাইপারের ল্যান্ডার প্রযুক্তি প্রয়োজনীয় টোল হয়ে উঠবে। চাঁদের এই এলাকায় জীবনধারণের জন্য দরকারি অক্সিজেন, জ্বালানি ও পানি থাকার সম্ভাবানা রয়েছে। তবে এই ল্যান্ডার তার লক্ষ্য অর্জন করেছে কি না, তা যাচাই করতে এক মাস পর্যন্ত সময় লাগবে।
এদিকে নামার আগে দেখে নেওয়া হয় কোথাও কোনও বাধা রয়েছে কিনা। পঞ্চাশ মিটার দূর থেকে এটা পরীক্ষা করে দেখা হয়। সেই মতো সবুজ সংকেত পাওয়ার পরেই পালকের মতো নেমে এল এই চন্দ্রযান। শেষ পর্যন্ত এই চন্দ্রযান নেমে এল চাঁদের বুকে।
তবে সূত্রের খবর, অন্তত দুমাস সময় লাগবে ঠিক কোন জায়গায় ল্যান্ডারটি রয়েছে আর এটা ঠিকঠাক নামতে পারল কি না।
রকেট H2AF47 এর মাধ্যমে এই স্লিম উৎক্ষেপন করা হয়েছিল। ২০২৩ সালের শেষের দিকে এই চন্দ্রযানটি চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করেছিল।
তবে মহাকাশ অভিযানে কোনও অংশে পিছিয়ে নেই ভারতও। ২০২৩ সালের ২৩ অগস্ট থেকে ২০২৪ সালের ৬ জানুয়ারি – ১৩৭ দিনের মধ্যে চাঁদ এবং সূর্যকে ‘জয়’ করল ভারত। গত বছর ২৩ অগস্ট চাঁদের মাটিতে অবতরণ ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ইসরোর চন্দ্রযান-৩ মিশনের ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান। আর শনিবার (৬ জানুয়ারি) ‘ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্ট ১’ (এল১) লাগোয়া একটি ‘হেলো’ কক্ষপথে প্রবেশ করেছে ভারতের সৌরযান। যা বিশ্বের মহাকাশ ইতিহাসে অভাবনীয় মাইলফলক বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।
মহাকাশে বিশ্বের বিভিন্ন পরাশক্তির আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরে বড় ভূমিকা পালনের চেষ্টা করছে জাপান। সেখানে চীনকে টেক্কা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে দেশটি। মহাকাশ যাত্রায় সরকারি উদ্যোগ ছাড়াও জাপানে বেশকিছু বেসরকারি স্টার্টআপ কোম্পানি রয়েছে। এ ছাড়া আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার আর্টেমিস প্রোগ্রামের অংশ হিসাবে চাঁদে নভোচারী পাঠানোর লক্ষ্য হাতে নিয়েছে টোকিও।
Posted ১:২৫ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৪
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta